স্টাফ রিপোর্টার : আজ ৩১ মার্চ জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশন দশম বর্ষপূর্তি করে একাদশ বর্ষে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। চ্যানেলটির অনুষ্ঠানের বিষয়-বৈচিত্রের কারণে দর্শকের কাছে কাক্সিক্ষত চ্যানেলে পরিণত হয়েছে। এ শুরু থেকে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছেন অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান শামীম শাহেদ। তার মেধা ও মনন দিয়ে দর্শক চাহিদা উপলব্ধি করে চ্যানেলটির অনুষ্ঠানমালা সাজিয়েছেন এবং এখনও সাজাচ্ছেন। বাংলাভিশনের একাদশ বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে তার সাথে বিনোদন প্রতিদিনের কথা হয়।
দশ বছরে বাংলাভিশনের অনুষ্ঠান কতটা দর্শক আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে?
আসলে দর্শক পছন্দ মাপার কোনো সুনির্দিষ্ট মাপকাঠি নেই। এটি একটি আপেক্ষিক বিষয়। তবে দর্শকের ভাব প্রকাশ ও উচ্ছ্বাস থেকে তার পছন্দের বিষয়টি টের পাওয়া যায়। আপনার কথার সুর ধরে বলতে চাই, দশ বছরে আমাদের অর্জন খুব বেশি নয় আবার খুব কমও নয়। এই সময়টুকুর মধ্যে আমরা দর্শকের মনে আলাদা করে জায়গা করে নিতে পেরেছি বলে আমি মনে করি। আমাদের বলার মতো বেশ কিছু অনুষ্ঠান তৈরি হয়েছে। সংবাদে নিরপেক্ষতার বিশ্বাস তৈরি হয়েছে। জনপ্রিয় নাটকের একটি বড় তালিকা তৈরি হয়েছে। এসবের প্রতি দর্শকের আকর্ষণটা বোঝা যায়। ফলে বলতে পারি, বাংলাভিশন নিশ্চিতভাবেই দর্শকের মনে একটা উল্লেখযোগ্য জায়গা দখল করে আছে। তা না হলে বাংলাভিশন এত উজ্জ্বল দেখাতো না।
বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কী কী আয়োজন থাকছে আপনাদের?
দেখুন আমাদের দেশে এতগুলো চ্যানেল, সবার এত এত ব্যস্ততা, তারমধ্যে একটা চ্যানেলের জন্মদিন সব দর্শকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নাও হতে পারে। তবে বাংলাভিশনের দর্শকের কাছে নিশ্চয়ই এ এক আনন্দের দিন। আমাদের শুভাকাক্সিক্ষরা আছেন, শিল্পী-কলাকুশলী, ক্যাবল অপারেটার-বিজ্ঞাপনদাতা, তারা নিশ্চয়ই আমাদের শুভকামনা জানাবেন। তাদের জন্য দিনব্যাপী বাংলাভিশন দপ্তরে বিশেষ আয়োজন থাকবে। পর্দায় দুই দিনব্যাপী বিশেষ আয়োজন থাকবে।
বাংলাভিশনের শুরুর সময়টাতে আপনি ছিলেন। সে সময় কিভাবে কাজ শুরু করেন?
যে কোনো বড় কাজ শুরুর দিকে চাপ থাকা স্বাভাবিক। অনেক কিছুই পরিকল্পনা করতে হয়। এসব পরিকল্পনা কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, এ বিষয়টিও মাথায় রাখতে হয়। তো এটা একটা চাপ বটে! টেলিভিশনের চ্যানেলের ক্ষেত্রে তো সবচেয়ে বেশি চাপ। কারণ এটা সরাসরি দর্শকের সামনে হাজির হয়। পুরোপুরি দর্শকের পছন্দের ওপর নির্ভর করে। যদি গ্রহণ না করে, তবে তো গেল! এসব বিষয় মাথায় রেখে একটা ভালো চ্যানেল গড়ে তোলার লক্ষে কাজ শুরু করি। বাংলাভিশনের আজকের অবস্থান ও দর্শক গ্রহণযোগ্যতা দেখে মনে হচ্ছে, আমাদের প্রচেষ্টা অনেকটাই সফল হয়েছে। তবে আমরা আত্মতুষ্টিতে না ভোগে কিভাবে আরও ভালো করা যায়, এ ধরনের একটা নিরন্তর প্রচেষ্টার মধ্যে আছি।
অভিযোগ রয়েছে দর্শক আমাদের দেশের চ্যানেলগুলো খুব একটা দেখে না। আপনার মতামত কি?
এটা আমি মনে করি না। কারণ আমি মনে করি, নিজের দেশের চ্যানেলে নিজস্ব কৃষ্টি ও সংস্কৃতি এবং জীবনবোধই দর্শক দেখতে চায়। আমরা এ জায়গাটাতেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। পৃথিবীতে বহু চ্যানেল রয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশেও অনেক চ্যানেল। হ্যাঁ, এসব চ্যানেল দর্শক দেখে। দেখে, ভিনদেশের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে। তবে ফাইনালি তারা দেশের চ্যানেলকেই গুরুত্ব দেয়। আপনি দেখুন, ঈদের সময় যখন আমাদের চ্যানেলগুলো ব্যাপক অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে, তখন দর্শক কিন্তু এসব অনুষ্ঠানের প্রতিই সবচেয়ে বেশি আগ্রহী হয়। এর কারণ, আমাদের দর্শক তার নিজস্ব বিশ্বাস ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক বিষয়গুলোকেই সবচেয়ে বেশি আপন মনে করে। বিদেশি সংস্কৃতি আসবে যাবে, দেশীয় সংস্কৃতি ও এর ধারা কিন্তু চিরকাল রয়ে যাবে।
বাংলাভিশনকে কীভাবে আলাদা করবেন?
আমি তো মনে করি, বাংলাভিশন এমন অনেক অনুষ্ঠান করেছে, যা আমাদের দেশীয় চ্যানেলের অনুষ্ঠান থেকে একেবারে আলাদা। দর্শকের কাছেও সেগুলো ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। যেমন এমন কিছু ধারাবাহিক নাটক বাংলাভিশন প্রচার করেছে যেগুলো দর্শকের কাছে ব্র্যান্ডিং হয়ে আছে। আরমান ভাই, সিকান্দার বক্স, হাড়কিপ্টে ফরমালিন ইত্যাদি। এর পাশাপাশি ভিন্ন বিষয়ভিত্তিক অনুষ্ঠান অ-এর গল্প, আমি এখন কী করব, বিপাশার অতিথি, মনের কথা এসব অনুষ্ঠানের প্রতি দর্শকের আকর্ষণ ঈর্ষণীয় পর্যায়ে রয়েছে। এর ফলে বলতে পারি বাংলাভিশন কিছুটা হলেও আলাদা হতে পেরেছে।
বাংলাভিশনকে কোথায় নিয়ে দাঁড় করাতে চান?
আগামী তিন-চার বছর বাংলাভিশনকে আমরা পারিবারিক চ্যানেল বানানোর চেষ্টা করব। পারিবারিক বন্ধন কতটা জরুরি তা তুলে ধরার চেষ্টা করব। পাশাপাশি সুস্থ ধারার বিনোদন অব্যাহত থাকবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন