শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেলাধুলা

প্রধানমন্ত্রীর হাতে আলো ঝলমলে উদ্বোধন

| প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

জাহেদ খোকন : আলো ঝলমলে সন্ধ্যায় বর্ণ্যাঢ্য উদ্বোধন হলো বাংলাদেশ যুব গেমসের চুড়ান্ত পর্বের। গতকাল সন্ধ্যা ৭টা ২১ মিনিটে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে এই পর্বের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ যুব গেমসের চুড়ান্ত পর্বের বর্ণিল উদ্বোধনীকে ঘিরে যেন বিয়ে বাড়ির সাজ দেয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামকে, আলোক সজ্জ্বার সঙ্গে ছিল ব্যানার-ফেস্টুন। বিকাল থেকে উৎসব মুখর পরিবেশ ছিল স্টেডিয়ামের চারিদিকে। সন্ধ্যা ৬টা ৪২মিনিটে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় সঙ্গীত বেজে উঠে। শুরু হয় চূড়ান্ত পর্বের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন পর্ব। যুব জাগরনের গেমসে অভিনব পদ্ধতিতে মশাল প্রজ্বলন হতেই বাতাসে উড়েছে কনফেত্তি; তালে তালে মেতেছেন ক্রীড়াবিদরা।
চূড়ান্ত পর্বের আনুষ্ঠানিকতার শুরুতেই ছিল অংশগ্রহনকারী ২৬৬০ জন ক্রীড়াবিদদের মার্চপাস্ট দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন। বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা, খুলনা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর ও সিলেট বিভাগের তরুন ক্রীড়াবিদরা মার্চপাস্ট করে মুল মাঠে প্রবেশ করেন, অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রীকে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি দিতেই মশাল প্রজ্জ্বলন করেন কমনওয়েলথ গেমস ও সাফ গেমসে স্বর্ণজয়ী আসিফ হোসেন খান; তিনি যখন মাঠ প্রদক্ষিণ করছিলেন, আকাশ রঙিন হয়েছে আতশবাজিতে, লেজার রশ্মির তালে বঙ্গবন্ধু সেটডিয়ামের উত্তর প্রান্তে জ্বলে ওঠে মশাল; এটি জ্বলবে ১৬ মার্চ পর্দা নামা পর্যন্ত।
যুব গেমস উদ্বোধন ঘোষনা করতে এসে ক্রীড়াবিদ ও সংগঠকদের ধন্যবাদ দিয়ে প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে যুব সমাজকে গড়ে তোলা এবং খেলাধুলার প্রতি ছেলেমেয়েদের আগ্রহের উপর গুরুত্বারোপ করেন, ‘যুব গেমসের মাধ্যমে সারা দেশে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে, এর মাধ্যমে ছেলেমেয়েদের সঠিক পথে ধরে রাখতে হবে। এই গেমসের মাধ্যমে ক্রীড়াবিদরা ঢাকায় আসার সুযোগ পেয়েছে, এরা একদিন বাংলাদেশকে অলিম্পিক থেকে পদক এনে দিবে। সরকার খেলার প্রসারে চেষ্টা করেছে। ক্রীড়াবিদদের মানোন্নয়ণে স্টেডিয়াম নির্মাণ ও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে।’ এরপর বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের সাফল্য টেনে প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘গত বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছে। আমার বিশ্বাস ক্রিকেটে আমরা একদিন বিশ্বকাপ জিতব। ক্রিকেটের মত ফুটবলেও আমাদের ছেলেরা এগিয়ে গেছে। মেয়েরাও পিছিয়ে নাই, অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৪ ফুটবলে মেয়েরা তাদের সাফল্যের প্রমান দিয়েছে, ক্রিকেটে একদিন নারীরা বিশ্বকাপ খেলবে। সেজন্য আমরা প্রতি উপজেলায় মিনি স্টৈডিয়াম তৈরি করে দিচ্ছি।’ বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের খেলাধুলার প্রতি ভালবাসা, পারিবারিক ঐতিহ্যের সাথে খেলাধুলা মিশে থাকার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, ‘তোমরা প্রত্যেকে হয়ে উঠবে ক্ষুধা,দারিদ্রমুক্ত,সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদমুক্ত উন্নত, সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মানের কারিগর।’
ঘন্টা দেড়েকের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। যেখানে ছিল গেমসের মাস্কট তেজস্বীর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের মাঠ পরিভ্রমন, গান-নাচ, অংশ নিয়েছেন দেশসেরা গায়ক-নুত্য শিল্পীরা। মঞ্চ এবং মাঠে ডিসপ্লেতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বাংলাদেশের জনপ্রিয় এবং বাংলাদেশ যুব গেমসের বিভিন্ন ডিসিপ্লিন, ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষন। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত নিয়ে কিছু চিত্র। উদ্বোধনী শেষ হয়েছে লেজার শো, পাইরো ও আতশবাজিতে। স্টেডিয়ামের ২টি স্থায়ী জায়ান্ট স্ক্রীন ছাড়াও মাঠের মধ্যে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত ৬টি এলইডি বোর্ডে ভেসে উঠেছে অনুষ্ঠানের চিত্র। সারা দেশে ৪৮ হাজার ক্রীড়াবিদ এবং ক্রীড়া সংশ্লিদের নিয়ে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর যে যুব জাগরনের সৃস্টি করেছে, সেই জাগরনে পূর্নতা এনেছে বর্নাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও প্রায় সাড়ে চার ঘন্টার এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিতি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) সভাপতি ও সেনা প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, সহ-সভাপতি ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান শেখ বশির আহমেদ, মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা, উপ-মহাসচিব আশিকুর রহমান মিকু ও আসাদুজ্জামান কোহিনুরসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। এর আগে বিকাল চারটায় খুলে দেয়া হয় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সবগুলো প্রবেশদ্বার। বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য গেট খোলা থাকলেও সাধারণ দর্শকরা গ্যালারীতে প্রবেশ করতে পারেননি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন