মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার গ-ি পেড়িয়ে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাড়ি জমাতে আসা প্রতিটি শিক্ষার্থীর চোখে মুখে থাকে একঝাঁক রঙিন স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন কারও জীবনে সত্য হয়, কারোবা শুধু সপ্নই রয়ে যায়। আবার কারও জীবনে হয়ত সেই স্বপ্নের শতভাগ প্রতিফলন না ঘটলেও তার চাইতে বেশি পাওয়া হয়ে যায়। তাই সে যতটুকু পায় ততটুকু নিয়েই মনে মনে তৃপÍ থাকে। আমি এমনই একদল তরুণ শিক্ষার্থীর কথা বলছি যারা বিগত দুই বছর আগে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছিল। যারা সংখ্যায় উনিশ জন। তারা হচ্ছে মরিয়ম, মোনালিসা, সৌরভ, শাকিল, আসিফ, সোনালী, সালাম ,চন্দ্রশেখর, শাওন, রাকিব, সজীব, তানিয়া, হাবিব, আল-মামুন, জাবেদ, সুজন, সোমা, রবি এবং সিরাজুল। এমনি আরও ১২০ জন শিক্ষার্থী বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদে তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত।
দেখতে দেখতে তারা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের দুইটি বছর অতিবাহিত করে ফেলেছে। আসলে এই দুই বছরের স্মৃতি যতই মন্দ হোক না কেন তবুও সারাজীবন মনে রাখার মতো। যদিও এই প্রথম দুই বছর অনেকেই পড়ালেখায় অমনোযোগিতার কারণে চলমান বছরের পড়ার সাথে অতিরিক্ত যোগ হয়েছিল অকৃতকার্য হওয়া বিষয়ের পড়ার চাপ। যার ফলশ্রুতিতে তাকে হয়ত অকৃতকার্য হওয়া বিষয়গুলোর পরীক্ষা দিতে দিতে জীবনের সকল হাসি-কান্নার আনন্দ-বেদনা ভুলে থাকতে হয়েছিল। যার জীবনের সকল স্বপ্ন প্রায় ভেঙে ধুলিসাৎ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল তৃতীয় বর্ষে পড়–য়া সেই শিক্ষার্থীটিকে হয়ত আজ আবার নতুন কোন স্বপ্ন দেখতে হচ্ছে। কারণ তার পরিবার, দেশ ও জাতি তাকে নিয়ে যে অনেক বড় স্বপ্ন দেখছে। কবির ভাষায়, “স্বপ্ন দেখতে ভয় পায় যদি স্বপ্ন ভেঙে যায়”। তারপরেও সেই ছেলেটিকে একজন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা হবার স্বপ্ন দেখতে হয় নিজের পরিবার অথবা দেশমাতৃকার স¦ার্থে। সেই সাথে বলতে ইচ্ছে করে, “আমরা স্বপ্ন দেখব, অন্যকে স্বপ্ন দেখাব এবং স্বপ্ন পূরণের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাব”। কেননা আজকের এসব শিক্ষার্থীর মধ্য থেকেই একদিন হয়তো অধ্যাপক, গবেষক, ডাক্তার, রাজনীতিবিদ ইত্যাদি হিসেবে বিশ্বমানচিত্রে এদেশের নাম উজ্জ্বলভাবে ফুঁটিয়ে তুলবে।
বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়তে আসা বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই নি¤œবিত্ত, মধ্যবিত্ত বা নি¤œ-মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা। উচ্চবিত্ত পরিবার থেকে আসা ছেলেমেয়ের সংখ্যা হাতেগোনা। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা প্রতি শিক্ষার্থীর প্রধান কর্তব্য হওয়া উচিৎ পরিবারের অভিভাবক, শিক্ষকম-লী ও গুরুজনদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এবং কনিষ্ঠ ও সহপাঠিদের প্রতি ¯েœহ, ভালোবাসা ও মমত্ত্ববোধ জাগ্রত করা। সেই সাথে নিজের মধ্যে লুকিয়ে থাকা মনুষত্ব্য ও বিবেকবোধকে জাগ্রত করা। অন্যথায় সাফল্যের চূড়াতে গমন অনেকাংশে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে।
ষ মো. শাকিল হোসেন
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন