সাবেক রুশ গুপ্তচর স্ক্রিপালের বিরুদ্ধে নোভিচক নামের রাসায়নিক ব্যবহার করার বিষয়ে চলা তদন্ত প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে চায় রাশিয়া। জাতিসংঘে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা দেশটির সে প্রস্তাব মেনে নিতে অস্বীকার করেছে। যুক্তরাজ্য তো বটেই ফ্রান্স, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, সুইডেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশও রাশিয়ার বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নিয়েছে। রাশিয়ার প্রতিনিধি দাবি করেছেন, ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থার তদন্তেই যুক্তরাজ্যের দাবির অসারতা প্রমাণিত হয়েছে। তাছাড়া হত্যার এত পথ থাকতে রাসায়নিক ব্যবহার করতে হবে কেন, সে প্রশ্নও তুলেছেন রাশিয়ার প্রতিনিধি। অন্যদিকে যুক্তরাজ্য মনে করছে, তদন্ত প্রতিবেদনকে পক্ষপাতমূলক হিসেবে প্রচার করার পটভূমি তৈরি করছে রাশিয়া। বুধবার রাসায়নিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ সংস্থায় এই বিষয়ের ওপর ভোটাভুটি হলে রাশিয়ার প্রস্তাব হেরে গিয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাজ্যের পক্ষে যত দেশ ভোট দিয়েছিল, তার চেয়ে বেশি সংখ্যক দেশ ওই বিষয়ে ভোট দানে বিরত ছিল। খবরে বলা হয়, রাশিয়ার সাবেক গোয়েন্দা ও তাঁর মেয়েকে বিষ খাওয়ানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুক্তরাজ্য মিথ্যা গল্প ছড়াচ্ছে এবং আগুন নিয়ে খেলছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে মস্কোর রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেভেনজিয়া বলেন, ব্রিটেনের প্রধান লক্ষ্যই ছিল অপ্রমাণিত কিছু অভিযোগকে ঘিরে রাশিয়ার সম্মানহানি করা, এমনকি অবৈধ ঘোষণা করা। গোয়েন্দাদের ওপর আক্রমণের পেছনে রাশিয়ার হাত ছিল বলেই অভিযোগ করেছে যুক্তরাজ্য। তবে মস্কো এ হামলার দায় অস্বীকার করেছে। গত ৪ মার্চ রাশিয়ার সাবেক গোয়েন্দা সের্গেই স্ক্রিপাল (৬৬) ও তাঁর মেয়ে ইউলিয়া স্ক্রিপালকে (৩৩) অচেতন অবস্থায় স্যালিসবেরির এক বেঞ্চে পাওয়া যায়। ইউলিয়া স্ক্রিপাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর অবস্থা কিছুটা ভালো থাকলেও সের্গেই স্ক্রিপালের অবস্থা সংকটাপন্ন। তাঁদের শরীরে বিষ প্রবেশ করাতে নোভিচক নামে একটি নার্ভ এজেন্ট (বিষাক্ত রাসায়নিক) ব্যবহার করা হয় বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। ৬৬ বছর বয়সী সের্গেই স্ক্রিপাল রাশিয়ার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্নেল ছিলেন। পরে তাঁর বিরুদ্ধে ব্রিটেনের এমআই-৬ গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে রুশ গোয়েন্দা এজেন্টদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছিল। এরপর ২০১০ সালে লন্ডন ও মস্কোর মধ্যে গোয়েন্দা বিনিময় চুক্তির আওতায় সের্গেই স্ক্রিপাল ব্রিটেনে গিয়েছিলেন। তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপের দেশগুলোর উত্তেজনা বিরাজ করছে। এরই মধ্যে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ রাশিয়ার কূটনীতিকদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। এদের মধ্যে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রও রয়েছে। আরটি, তাস।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন