রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী। ইউক্রেনকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস ন্যাটো প্রধানের।
রোববার টুইট করে রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, রোববার সকালে দেশের সেনাপ্রধান তাকে ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে সর্বশেষ খবর দিয়েছেন। রাশিয়া যে সীমান্তে আরো আগ্রাসী হয়ে উঠেছে, তা শুনে উদ্বিগ্ন বোধ করছেন তিনি। ইউক্রেনকে সবরকম সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন বরিস।
ন্যাটো প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গও রোববার ইউক্রেন-রাশিয়া সীমান্ত নিয়ে নতুন করে মুখ খুলেছেন। তবে একটি প্রশ্ন বার বার উঠছে। রোববারও যে প্রশ্ন রাশিয়া তুলেছে। রাশিয়া একটি ন্যাটো অন্তর্গত দেশ। তার বিরুদ্ধে কীভাবে বাকি ন্যাটো দেশগুলি সামরিক ব্যবস্থার প্রস্তুতি নেয়?
রোববার স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন, 'শক্তিশালী ন্যাটোর সদস্য এবং ন্যাটোর চোখে গুরুত্বপূর্ণ দেশ এই দুইয়ের মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য আছে। ইউক্রেন দ্বিতীয় দেশটি।' এরপরেই ন্যাটো প্রধান জানিয়েছেন, সরাসরি সামরিক সাহায্য ছাড়া ইউক্রেনকে সবরকম সাহায্য করা হবে। যদিও এর আগেই ন্যাটো জানিয়েছিল, পূর্ব ইউরোপে ন্যাটো যুদ্ধজাহাজ এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে রেখেছে। অ্যামেরিকা জানিয়েছিল, পূর্ব ইউরোপে সাড়ে আটহাজার সেনা স্ট্যান্ডবাই অবস্থানে রেখেছে অ্যামেরিকা। প্রয়োজনে তার সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে।
এদিন যুক্তরাজ্যও জানিয়েছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে কড়া অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করবে তারা। রোববার ফের মুখ খুলেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তার প্রশ্ন, ন্যাটোর সদস্য একটি দেশের বিরুদ্ধে কীভাবে সামরিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে ন্যাটো। ন্যাটো যে অর্থ খরচ করে এ কাজ করবে, সেখানে রাশিয়ারও ভাগ আছে বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি। বস্তুত, রাশিয়া এদিন জানিয়েছে, নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যা করতে হবে, রাশিয়া তা করবে। অর্থাৎ, যুদ্ধের বিষয়ে ফের একবার হুমকি দিয়েছে রাশিয়া।
রাশিয়ার বক্তব্য, সোভিয়েত এবং বার্লিনের দেওয়াল ভাঙার আগে স্পষ্ট ভাগ ছিল। ঠান্ডা যুদ্ধের সময় ভূরাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট ছিল। রাশিয়া চায় ইউরোপে ফের রাজনীতি এবং কূটনীতির পরিসর স্পষ্ট হোক। ইউক্রেন নিয়ে অ্যামেরিকা এবং ন্যাটো যে রাজনীতি করছে, তাতে ভূরাজনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে বলে রাশিয়ার বক্তব্য। ন্যাটো অবশ্য এদিনও স্পষ্ট জানিয়েছে, ক্রাইমিয়ার পশ্চিমে এবং পূর্ব ইউক্রেনে দনবাসের পশ্চিমে রাশিয়ার সেনা প্রবেশ করলে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লন্ডনের অর্থনৈতিক হাবে রাশিয়ার ব্যবসায়ীদের বড় বিনিয়োগ আছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতেও লন্ডন সে বিষয়ে কোনো রকম ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। বস্তুত, লন্ডনের ব্যবসায়িক হাব থেকে যুক্তরাজ্য যে অর্থ রোজগার করে, তাকে লন্ডনগ্র্যাড বলা হয়। সেখানে রাশিয়ার ব্যবসায়ীদের উপর কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে যুক্তরাজ্যকে। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, রাশিয়া আর আগ্রাসন দেখালে সরাসরি ভ্লাদিমির পুটিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্র: এএফপি, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন