একইসঙ্গে নায়ক ও নৃত্যপরিচালক আমাদের দেশের চলচ্চিত্রে খুব কমই দেখা গেছে। দুই ক্ষেত্রে সমান দক্ষতা প্রদর্শন করার বিষয়টি নেই বললেই চলে। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিলেন চিত্রনায়ক জাভেদ। যার অসংখ্য সিনেমা জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তার অভিনীতি নিশান চলচ্চিত্রটি তো কাল জয় করে আছে। তার অসাধারণ নৃত্য ও অভিনয় প্রদর্শন দর্শকের মনে এখনো গেথে আছে। এক সময়ের পর্দা কাঁপানো এই নায়ক এখন বলা যায় অনেকটাই অবসর সময় পার করছেন। তবে তার ভেতর এখনো অভিনয় করার তীব্র বাসনা কাজ করে। ভালো গল্প পেলে তিনি অভিনয় করবেন। জাভেদ বলেন, ‘ভালো গল্প এবং চরিত্র পেলে অবশ্যই অভিনয় করবো। অভিনয়টা আমার রক্তের সাথে মিশে আছে। সবসময়ই টান অনুভব করি। তবে ভাল গল্প না পাওয়ায় করা হচ্ছে না। তবে তিনি এখনো স্টেজ শো’তে পারফর্ম করেন। জাভেদ বলেন, ‘ভালো স্টেজ শোর প্রস্তাব এলে আমি পারফর্ম্যান্স করার চেষ্টা করি। নিজের আত্মতৃপ্তির জন্য কাজটা করি।’ জাভেদের আসল নাম ইলিয়াস জাভেদ। জš§ ১৯৪৪ সালে। জাভেদের বাবা রাজা মোহাম্মদ আফজাল ছিলেন ধর্মপরায়ণ। তিনি চাইতেন ছেলে ব্যবসায়ী হবে, নয়তো চাকরি করবে। কিন্তু জাভেদের সেদিকে আদৌ মন ছিল না। কীভাবে অভিনেতা হওয়া যাবে এ নিয়েই তিনি ভাবতেন। সিনেমা দেখা, গান শোনাতেই মগ্ন ছিলেন। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ছিল ‘নয়া জিন্দেগি’। এটি ছিল উর্দু। কিন্তু এটি মুক্তি পায়নি। উর্দু চলচ্চিত্র ‘পায়েল’-এ (১৯৬৬) অভিনয়ের পর থেকেই জাভেদের নাম ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। সিনেমাটিতে নাচ-গানে অসাধারণ পারফরমেন্স করেছিলেন। এতে তার বিপরীতে ছিলেন শাবানা। তবে ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে জাভেদ নৃত্য পরিচালক হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। ১৯৭৪ সালের পর আবার অভিনয়ে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। একে একে নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন মালকা বানু, অনেক দিন আগে, শাহাজাদা, রাজকুমারী চন্দ্রবান, সুলতানা ডাকু, আজো ভুলিনি, কাজল রেখা, সাহেব বিবি গোলাম, নিশান, বিজয়িনী সোনাভান, রূপের রানী, চোরের রাজা, তাজ ও তলোয়ার, নরমগরম, তিন বাহাদুর, জালিম, চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা, রাজিয়া সুলতানা, সতী কমলা, বহরম বাদশা, আলাদিন আলী বাবা সিন্দাবাদসহ অনেক সিনেমায়। অভিনয়ের পাশাপাশি এসব সিনেমায় নৃত্য পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছিলেন। এ পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয় করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন