শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

দিল্লিতে রোহিঙ্গা শিবিরে বিজেপি নেতার আগুন : এফআইআর দায়ের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আগুন ধরিয়ে দেয়ার কথা স্বীকার করায় হিন্দুত্ববাদী বিজেপি’র যুব মোর্চা নেতাকে গ্রেফতারের দাবি উঠেছে। গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে প্রকাশ, গত রোববার দিল্লিতে এক শরণার্থী শিবিরে আগুন ধরার ঘটনায় বিজেপি’র যুব মোর্চা নেতা মনীষ চান্দেলা নিজেদের দায় স্বীকার করেছেন। তিনি ও তার সহযোগীরা ওই আগুন ধরানোর ঘটনায় জড়িত বলে জানিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের স্বীকারোক্তি প্রকাশ্যে আসার পর প্রখ্যাত আইনজীবী ও সমাজকর্মী প্রশান্ত ভূষণ গত বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লির তিলক মার্গ থানায় মনীষ চান্দেলা নামে বিজেপি যুব নেতার বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার প্রশান্ত ভূষণ বলেন, মামলা দায়ের ও তাকে গ্রেফতার করার জন্য দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি এবং তাকে দল থেকে বহিষ্কার করার জন্যও বিজেপি’র পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
প্রশান্ত ভূষণ পুলিশের কাছে নিজের অভিযোগের পক্ষে মনীষ চান্দেলার স্বীকারোক্তির টুইটার বার্তার স্ক্রিনশটও জুড়ে দিয়েছেন। রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আগুন ধরানোর ঘটনায় এক টুইটার বার্তার জবাবে মনীষ চান্দেলা লেখেন, ‘হ্যাঁ আমরাই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের ঘর পুড়িয়ে দিয়েছি।’ ওই ঘটনার এক দিন পরে পুনরায় ‘হ্যাঁ আমরাই এটা করেছি এবং আবারও তা করবো।’ তাদের দাবি, ভারতে যেকোনো জায়গায় অবৈধভাবে বাস করা তাদের ভাষায় 'সন্ত্রাসী' রোহিঙ্গা মুসলিমদের বসতির তথ্য দিলে তারা তাদের ‘আসল জায়গায়’ পৌঁছে দেবে। কিন্তু বর্তমানে ওই টুইটার অ্যাকাউন্ট সক্রিয় নেই।
প্রশান্ত ভূষণের অভিযোগের আগে মুসলিম মজলিশ-ই মুশাওয়ারাত-এর পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিশ কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়ে বিজেপি’র ওই যুব নেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানানো হয়।
গত ১৫ এপ্রিল দক্ষিণ দিল্লির কালিন্দিকুঞ্জের কাছে শরণার্থী শিবিরে আগুন ধরে যায়। ওই ঘটনায় দুইশ’রও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন। ওই ঘটনায় প্রায় ৫০ পরিবার সম্পূর্ণ গৃহহীন হয়ে পড়ে। তাদের সর্বস্ব আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। গুরুত্বপূর্ণ নথির মধ্যে পরিচয়পত্র ও জাতিসংঘের দেয়া বিশেষ ভিসা-সহ অন্যান্য জিনিষপত্র নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
'অগ্নিসংযোগকারীদের গ্রেফতার করা দরকার'
এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকার সংস্থা ‘বন্দি মুক্তি কমিটি’র সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ভানু সরকার গতকাল (শুক্রবার) বলেন, ‘আরএসএস ভারতে সংবিধানবহির্ভূত একটা সমান্তরাল রাষ্ট্র চালাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতায় থাকার সুবাদে তাদের এখন বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। এরফলে তারা এসব কাজ করছে এবং বুক ঠুকে তা বলছে। তারা সংবিধান ও আইনকানুন মানে না। যারা দাবি করেছে যে তারা ওই আগুন ধরিয়েছে তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা দরকার। এবং ভারতের আইন অনুযায়ী তাদেরকে যথাযথ সাজা দিতে হবে।’
ভানু বাবু বলেন, ‘শরণার্থীদের উপরে হামলা ‘অধর্ম’। যারা আশ্রয় নিয়েছেন তাদের উপরে আঘাত করা পৃথিবীর কোনো মনুষ্যত্বের ধর্মে নেই।’ ভারতে কেবল রোহিঙ্গারাই নন, আরও অনেক দেশের শরণার্থীরা রয়েছে বলেও ভানু সরকার জানান। সূত্র : আইআরআইবি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন