॥ মোবায়েদুর রহমান ॥
আজ কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে লিখব না। একাধিক বিষয় নিয়ে ছোট ছোট লেখা লিখব। ইংরেজিতে বলতে পারেন Random thoughts এই ইংরেজিটির সঠিক বাংলা কি আমি জানি না। এটির ডিকশনারি মিনিং হলো ‘এলোমেলো ভাবনা’। তবে আমার মতে, বাংলাটি যদি হয় ‘বিক্ষিপ্ত ভাবনা’ তাহলে হয়তো Appropriate হবে। এলোমেলো কথাটি রোমান্টিকতার ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত হয়। যেমন- ‘এলোমেলো বাতাসে, উড়িয়ে শাড়ির আঁচল’ অথবা ‘এলোমেলো বাতাসে দুলে ওঠে চূর্ণ কুন্তল’।
এসব সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে চোখ পড়ে গেল দিল্লির ‘দি ইকনোমিক টাইমস’ নামক একটি ইংরেজি পত্রিকার ওপর। পত্রিকাটির ২৬ জুলাই সংখ্যায় বিএনপি নেতা সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের একটি সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছে। ইন্টারভিউটির শিরোনাম, One can choose his bride or groom but cannot change neighbours: Moudud Ahmed, BNP অর্থাৎ ‘কোনো মানুষ তার স্বামী বা স্ত্রী বদলাতে পারে, কিন্তু প্রতিবেশী বদলাতে পারে না : মওদুদ আহমদ, বিএনপি।’ হেডিংটি পড়ে খটকা লাগল। কারণ কথাটি সত্য হলেও ভারত সম্পর্কে এই ভাষায় এবং এ ধরনের কথা বিএনপি বলে না, আওয়ামী লীগ বলে। মওদুদ সাহেবের কণ্ঠ দিয়ে আওয়ামী লীগের ভাষা বেরিয়ে আসে কীভাবে?
যাই হোক, ইন্টারভিউয়ের এক স্থানে মওদুদ আহমদ বলেছেন, BNP would also uphold and continue with all agreements that the Awami League government has entered into with India. These are international obligations. India রং Bangladesh’s biggest neighbor. One can choose his bride or groom but cannot change neighbors. . বাংলা অনুবাদ : “আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের সাথে যত চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সেগুলোর সব বিএনপি সমুন্নত করবে এবং চালিয়ে যাবে। এগুলো আন্তর্জাতিক অবলিগেশনস। ভারত বাংলাদেশের বৃহত্তম প্রতিবেশী। কোনো ব্যক্তি তার স্বামী বা স্ত্রী বদলাতে পারে, কিন্তু প্রতিবেশী বদলাতে পারে না।” অন্যত্র তিনি বলেন, Former Bangladesh Vice-President and Prime Minister & senior leader of the Bangladesh Nationalist Party, Moudud Ahmed, concurred with his PM that terrorist who have recently targeted foreigners in his country were home grown অনুবাদ : “বাংলাদেশের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী এবং বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা মওদুদ আহমদ প্রধানমন্ত্রীর সাথে এই মর্মে একমত হন যে সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে যেসব সন্ত্রাসী বিদেশিদেরকে হত্যা করেছে তারা সকলেই বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছে এবং তারা সকলেই বাংলাদেশি।” অন্যত্র তিনি বলেছেন, I as a the writer of original BNP manifesto in 1970s is trying to restore the original ideology of BNP. অনুবাদ : ‘১৯৭০-এর দশকে বিএনপির মূল মেনিফেস্টোর রচয়িতা হিসেবে আমি বিএনপির মৌলিক আদর্শ পুনঃ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি।’
॥ দুই ॥
মওদুদ আহমদের ইন্টারভিউয়ে উচ্চারিত এসব উক্তি পড়ে প্রথমেই যে প্রশ্নটি মনে খটকা লাগে সেটি হলো, যেসব কথা তিনি দিল্লির ওই পত্রিকাকে বলেছেন সেসব কথা বলার জন্য কি বেগম খালেদা জিয়া অথবা বিএনপির স্ট্যান্ডিং কমিটি তাকে অথরাইজ করেছিলেন? তিনি নিজেকে বিএনপির মেনিফেস্টোর রচয়িতা হিসেবে দাবি করেছেন। এ সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা নেই। তাই এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করব না। কিন্তু বিএনপির মূল বা মৌলিক আদর্শ পুনঃ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন বলে যে কথা হয়েছে সে কথার মাধ্যমে তিনি কি বোঝাতে চেয়েছেন? বিএনপির মূল আদর্শ কি? সেই আদর্শ থেকে কি বিএনপি বিচ্যুত হয়েছে? না হলে সেটি পুনঃ প্রতিষ্ঠা করার কথা ওঠে কেন? দেশের অনেকের কাছেই বিএনপির মূল মেনিফেস্টো আছে। আছে বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদ সম্পর্কে মরহুম প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রচনা এবং তার মুখ নিঃসৃত বিভিন্ন উক্তি। ব্যারিস্টার মওদুদ দিল্লিতে যা বলেছেন সেটি দ্ব্যর্থ বোধক। সেটির মানে বা ব্যাখ্যা এভাবেও করা যায়, আবার ওভাবেও করা যায়।
তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ভারত সরকারের সাথে যেসব চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সব চুক্তি মেনে চলবে এবং সেগুলো কার্যকর করবে। জনাব মওদুদের ইন্টারভিউয়ের এই অংশটি সবচেয়ে Controversial বা বিতর্কিত। বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতা অভিযোগ করেছেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতের সাথে যতগুলো চুক্তি করেছে সেসব চুক্তির বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি জাতীয় সংসদেও সেগুলো উত্থাপন করা হয়নি এবং সেগুলোর ওপর বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়নি। তারা জাতির কাছে ওয়াদা করেছেন যে, ক্ষমতায় গেলে বিএনপি এসব চুক্তি জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্বের আলোকে পুনর্বিবেচনা করবে। মওদুদ সাহেবের এই উক্তি কি ভারতের সাথে সম্পাদিত চুক্তি সম্পর্কে বিএনপির ইতিপূর্বেকার অবস্থানের সাথে সাংঘর্ষিক নয়?
যেমন ট্রানজিট। এই তো সেদিনও অর্থাৎ বিগত রমজান মাসেও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, মাত্র ১৯৪ টাকায় ভারতের কাছে আওয়ামী লীগ সরকার ট্রানজিট বিক্রি করে দিয়েছে। এ ধরনের অনেক কথাই রয়েছে। ভারতীয় আধিপত্য সম্পর্কে সাম্প্রতিককালে রুহুল কবির রিজভী, গয়েশ্বর রায়, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনসহ অনেক নেতা অনেক কথাই বলছেন। মওদুদ সাহেব তো দীর্ঘদিন নীরব ছিলেন। তারপর হঠৎ জেগে উঠলেন। উঠলেন তো উঠলেন, একেবারে সপরিবারে দিল্লিতে। আর সেখানে গিয়ে অনেক বিতর্কের জন্ম দিলেন।
জনাব মওদুদের এসব উক্তি সম্পর্কে আমি সবিনয়ে একটি কথা নিবেদন করতে চাই। এ কথা সত্য যে, দেশের সবচেয়ে বড় দুটি দলের মধ্যে বিএনপি অন্যতম। আওয়ামী লীগের যেমন লক্ষ লক্ষ ফলোয়ার রয়েছে তেমনি বিএনপিরও রয়েছে। তবে সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগ মজবুত। বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো কিছুটা বিশৃঙ্খল। আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব অর্থাৎ শেখ হাসিনা যে উক্তি করেন, মুহূর্তের মধ্যে সেই উক্তি তাদের র্যাংক অ্যান্ড ফাইল অর্থাৎ একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে চলে যায়। অতঃপর ঢাকা মহানগরী থেকে শুরু করে মফস্বলের ইউনিয়ন পরিষদের নেতারা পর্যন্ত সমস্বরে নেতার ওই কথার প্রতিধ্বনি করেন। আওয়ামী লীগের কোনো পর্যায়েই সর্বোচ্চ নেতার কথার বাইরে অন্য কোনো কথা কেউ উচ্চারণ করে না অথবা করার সাহস রাখে না।
কিন্তু বিএনপির ক্ষেত্রে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। সর্বোচ্চ নেতা যা বলেন, র্যাংক অ্যান্ড ফাইল তো দূরের কথা, স্ট্যান্ডিং কমিটির সব মেম্বারও সমস্বরে সেই কথার প্রতিধ্বনি করেন না। আর নির্বাহী কমিটির তো কথাই নাই। সুনির্দিষ্ট উদাহরণ দিয়ে আলোচনা লম্বা করতে চাই না। বিগত ৮ মাসের ইতিহাস ঘেঁটে দেখুন। সর্বোচ্চ নেতৃত্ব যে দু-চারটি গুরুত্বপূর্ণ উক্তি করেছেন স্ট্যান্ডিং কমিটির দু-একজন ছাড়া এবং রুহুল কবির রিজভী ছাড়া আর কেউ সেই সব উক্তির প্রতিধ্বনি করেননি। পরিষ্কার বোঝা যায় যে, তারা নেত্রীর উক্তিকে পাশ কাটিয়ে গেছেন। একই প্রবণতা বিএনপিপন্থি কিছু সংখ্যক বুদ্ধিজীবীর মধ্যেও দেখা যায়। বিএনপির মতো এত বড় একটি দলের একটি থিংক ট্যাঙ্ক থাকা প্রয়োজন। আমার তো মনে হয় না সেরকম কিছু আছে। বিএনপিকে যদি ঘুরে দাঁড়াতে হয় তাহলে সিনিয়র নেতাদের ১২ ভূঁইয়ার মতো আচরণ ও অসংলগ্ন কথা না বলে শীলা অটল পাহাড়ের মতো নেত্রীর পেছনে দাঁড়াতে হবে এবং তার উক্তি বজ্রের ধ্বনির মতো সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।
॥ তিন ॥
এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয় হলো জঙ্গিবাদ। একবার ভাবলাম, জঙ্গিবাদ নিয়ে এক্সক্লুসিভলি লিখব। কিন্তু গত ১লা জুলাই থেকে ৩১ জুলাই- এই ৩১ দিন ধরে পত্র-পত্রিকায় জঙ্গিবাদ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশে এখন ২৫-৩০টি টেলিভিশন চ্যানেল। সবগুলোর নিউজ এবং টকশোতে প্রধান আলোচ্য বিষয় এই জঙ্গিবাদ। তাই এখানে আমি আর নতুন করে কি Input দেব? তবে গত ২৯ ও ৩০ জুলাই বাংলাদেশের দুজন অত্যন্ত উচ্চ পদস্থ ব্যক্তি, যারা VVIP, তারা দুটো আশার বাণী শুনিয়েছেন। এদের একজন হলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। দ্বিতীয়জন হলেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।
জনাব বেনজীর আহমেদ সম্পর্কে দুটি কথা বলা দরকার। পুলিশ অফিসারদের সম্পর্কে আমার খুব বেশি ধারণা নেই। তবে পাকিস্তান আমলে শুনতাম, CSS বা Central Superior Service এ প্রেফারেন্স দেওয়া হতো নিচের ক্রমানুসারে। সেখানে এক নম্বরে Civil Service of Pakistan (CSP), দুই নম্বরে Pakistan Foreign Service (PFS) এবং তিন নম্বরে Police Service of Pakistan (PSP). সুতরাং তখন ব্রিলিয়ান্ট লোকরাই পুলিশ সার্ভিসে যেতেন। কাজী আনোয়ারুল হক তো পুলিশ সার্ভিসেরই লোক ছিলেন।
বাংলাদেশেও মনে হয় সেই ট্র্যাডিশন চলছে। অন্যদের কথা জানি না। কিন্তু বেনজীর আহমেদের ক্ষেত্রেও দেখলাম, তিনি একজন উচ্চ শিক্ষিত লোক। পুলিশ সার্ভিসে এসে তিনি সর্বোচ্চ পজিশনে চলে গেছেন। কিন্তু তার একাডেমিক রেকর্ডে দেখলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের তিনি অ্যাডজাঙ্কট্ ফ্যাকাল্টি মেম্বার। তিনি ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকেই ইংরেজিতে এমএ, সেখান থেকেই এমবিএ এবং সেখান থেকেই এলএলবি। আরো জানতে পারলাম তিনি ব্যবসা প্রশাসনে ডক্টরেট করছেন। অবশ্যই অত্যন্ত ব্রিলিয়ান্ট ক্যারিয়ার তার। একাডেমিক লাইনে থাকলে হয়তো পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর হতেন। যাই হোক, যেহেতু আজকে লিখছি আমার বিক্ষিপ্ত ভাবনা তাই এগুলো অপ্রাসঙ্গিক হলেও মনে এলো, তাই লিখলাম।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম একটি সমাবেশে বলেছেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের ‘জ’ও থাকবে না। এটি অত্যন্ত আশার বাণী। এর চেয়ে ভালো কথা আর কী হতে পারে? জনাব বেনজীর আহমেদ র্যাবের মহাপরিচালক। সকলেই জানেন, র্যাবকে বলা হয় এলিট ফোর্স। গত ৩০ তারিখ রাতে একটি নব উদ্বোধিত টিভি চ্যানেলের টকশোতে তিনি বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপন করেন সামিয়া রহমান। চ্যানেলটির নাম ‘নিউজ ২৪’। এটির মালিক বসুন্ধরা গ্রুপ। তাদের দুটি বাংলা দৈনিক পত্রিকা আছে। আরেকটি ইংরেজি দৈনিক। বাংলা দৈনিক দুটির নাম হলো, ‘কালের কণ্ঠ’ এবং ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’। আর ইংরেজি দৈনিকটির নাম হলো, ‘দি সান’। এখন তাদের মিডিয়া গ্রুপে যুক্ত হলো নিউজ ২৪।
॥ চার ॥
বাংলাদেশে এটি একটি নতুন ডেভেলপমেন্ট। শুরু হয়েছে কিছু দিন আগেই। বিগ বিজনেস হাউস বা কর্পোরেট হাউস থেকে টেলিভিশন ও দৈনিক পত্রিকা বের করা হচ্ছে। ধনাঢ্য ব্যক্তি নুরুল ইসলাম বাবুল প্রথমে বের করেন বাংলা দৈনিক পত্রিকা ‘যুগান্তর’। তারপর বের করেন টেলিভিশন চ্যানেল ‘যমুনা টিভি’। আরেকজন ধনকুবের হলেন এ কে আজাদ। তিনি বের করেছেন ‘চ্যানেল ২৪’। আরেকজন টাইকুন সালমান এফ রহমান। তার ইংরেজি কাগজটির নাম হলো ‘দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট’। তার টেলিভিশন চ্যানেলের নামও হলো ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট’। কেউ কেউ আবার দুটি টিভি চ্যানেলও বের করেছেন। যেমন মাহফুজুর রহমানের দুটি চ্যানেল হলো ‘এটিএন বাংলা’ এবং ‘এটিএন নিউজ’। এর আগে বেগম জিয়ার প্রধান মন্ত্রীত্বের আমলে তার প্রাইভেট সেক্রেটারি মোসাদ্দেক আলী ফালু বের করেছিলেন দুটি টেলিভিশন চ্যানেল। একটি ‘এনটিভি’ এবং অপরটি ‘আরটিভি’। আরটিভি তার হাতছাড়া হয়ে গেছে। আরেকটি টিভিও হাতছাড়া হয়ে গেছে। সেটি হলো একুশে টেলিভিশন। একুশে টেলিভিশনের মালিক এখন জেলে। সেটি হস্তান্তরিত হয়েছে আরেকজনের কাছে।
প্রথমেই বলেছি যে, আজকের লেখাটি হলো Random thoughts বা বিক্ষিপ্ত ভাবনা। তাই যখন যা মনে আসছে তাই লিখছি। টেলিভিশনের কথা আলোচনা করতে গেলে তো কত কথাই মনে পড়ে। মোহনা টিভি, বিজয় টিভি প্রভৃতির মালিক কে? নেহায়েত রাজনৈতিক বিবেচনায় দেওয়া হয়েছে বলে এগুলো মোটেই স্ট্যান্ডার্ড হয়নি এবং তাই দর্শক-শ্রোতাও অ্যাটাক্ট করতে পারেনি। যাই হোক, এখন ফিরে আসছি বেনজীর আহমেদের কথায়।
প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে ওই টকশো চলে। আরো দুজন আলোচক থাকলেও আলোচনার অধিকাংশ সময়ে কথা বলেন বেনজীর আহমেদ। অবশ্য এটিই স্বাভাবিক। কারণ তিনি র্যাবের প্রধান। লোকে তাকেই প্রশ্ন করবে এবং তার কাছেই জানতে চাইবে। আলোচনার একপর্যায়ে বেনজীর দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বললেন যে, জঙ্গি নিয়ে চিন্তা-ভাবনার কোনো দরকার নেই। ওরা Microscopic in number. এর সোজা বাংলা এই দাঁড়ায় যে, ওদের সংখ্যা অত্যন্ত কম। এতই কম যে সাদা চোখে ওদেরকে দেখা যায় না। অনুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে ওদেরকে দেখতে হয়। তিনি বলেন, এখন আর জঙ্গিরা আক্রমণ করার অবস্থায় নেই। তারা এখন পালাতে পারলে বাঁচে। এটিকে ইংরেজিতে বলা যায়, They are on the run. . র্যাবের মহাপরিচালকের কথায় আমরা আশ্বস্ত হয়েছি। কল্যাণপুরে অপারেশন করেছে যে বাহিনীটি তার নাম সোয়াত। সোয়াত সম্পর্কে আমরা বেশি কিছু জানি না। এটি আরেকটি এলিট ফোর্স কিনা তাও জানি না। তবে পত্র পত্রিকায় তাদের হাতে যে অস্ত্র দেখলাম সেটি খুব আধুনিক এবং কার্যকর বলেই মনে হলো। তবে এখানে আমি আমার অজ্ঞতা সম্পর্কে কিছু বলে রাখতে চাই। আমি অস্ত্রপাতি সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমি সরাসরি কোনো বন্দুক বা পিস্তলও কাছে থেকে দেখিনি। তবে এসব অস্ত্রের ছবি দেখেছি। তাই সোয়াত বাহিনীর হাতে অস্ত্র দেখে আমার মনে হয়েছে এগুলো খুব আধুনিক অস্ত্র।
আমার বিক্ষিপ্ত ভাবনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং হিলারি ক্লিনটনও এসেছিলেন। কিন্তু লেখাটি বড় হয়ে যাবে। তাই আজ এখানেই শেষ করছি।
Email: journalist15@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন