লালদীঘি ময়দানে ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলাকে ঘিরে আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা। তবে গতকাল (সোমবার) থেকেই মেলায় শুরু হয়ে গেছে বেচাকেনা। চট্টগ্রাম ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হরেক পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন বিক্রেতারা। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহানগরীর প্রাণকেন্দ্রে এ মেলাকে ঘিরে এখন উৎসবের আমেজ। মেলা প্রাঙ্গণে হাজারও মানুষের ভিড়। শত বছরের ঐতিহ্য ধরে রেখে নিজেদের সুবিধামত জায়গা নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। আগামীকাল অনুষ্ঠিত হবে আবদুল জব্বারের বলীখেলার ১০৯তম আসর। প্রতিবারের ন্যায় এবারও লালদীঘি মাঠের মাঝখানে তৈরি করা হবে প্রায় ২০ ফুট বাই ২০ ফুট চতুর্ভুজ আকৃতির বলীখেলার মঞ্চ। মাটি থেকে প্রায় ৫ ফুট উপরে বালি দিয়ে তৈরি করা হবে এ মঞ্চ। মঞ্চের চারিদিকে রশি দিয়ে ঘিরে দেয়া হবে। বলীখেলায় রেফারির দায়িত্ব পালন করবেন সাবেক ফুটবলার ও সাবেক কাউন্সিলর এম এ মালেক।
উল্লেখ্য, ১৯০৯ সালের ১২ বৈশাখ বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে বাঙালিদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য বদরপাতির বাসিন্দা আবদুল জব্বার লালদীঘি মাঠে সর্বপ্রথম কুস্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন। সেই থেকেই চলে আসছে এই প্রতিযোগিতা। জব্বারের বলীখেলা এখন ইতিহাসের অংশ। এ বলীখেলাকে ঘিরে তখন থেকেই চলে আসছে তিনদিনের বৈশাখী মেলা। মেলায় দেশের দূর দূরান্ত থেকে আগত দোকানিরা লালদীঘির আশপাশ এলাকা ছাড়াও সিনেমা প্যালেসের মোড়, আন্দরকিল্লার মোড় এবং কোতোয়ালীর মোড় থেকে কেসিদে রোডসহ বিস্তীর্ণ এলাকায় শত শত পসরা সাজিয়ে বসেছেন। লালদীঘির আশপাশ এলাকায় রাস্তার দু’ধারে অস্থায়ীভাবে বসেছে অসংখ্য স্টল। কোথাও রকমারি মাটির কলসি, কোথাও বেতের চেয়ার, কোথাও কাঠের, কোথাও ঝাড়–, আবার কোথাও নানাবিধ মনোহারী দ্রব্যের পসরা সাজিয়েছেন দোকানীরা। ইতোমধ্যে ফুল ও ফলজ গাছ নিয়ে এসেছে অনেক নার্সারী, সঙ্গে রয়েছে মাটির টব, গাছের সার ও বীজ। এ মেলার অপেক্ষা থাকে নগরবাসী। নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিস পাওয়া যায় এখানে। মহানগরীর বাসিন্দারা ছাড়াও জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মেলায় আসেন লোকজন। বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় লোকজ উৎসব হিসেবে এটিকে চিহ্নিত করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন