শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আয়কর রিটার্নের সঙ্গে ভুয়া অডিট রিপোর্ট জমা দেয়া হচ্ছে

প্রাক-বাজেট আলোচনায় আইসিএবির অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম


অর্থনৈতিক রিপোর্টার : আয়কর রিটার্নের সঙ্গে ভুয়া অডিট রিপোর্ট জমা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে পেশাদার হিসাববিদদের সংগঠন ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)। সংগঠনটির মতে, আয়কর রিটার্নের সঙ্গে গত বছর ৩৫ হাজার অডিট রিপোর্ট সম্বলিত ফাইল জমা দেওয়া হয়েছে। অথচ আইসিএবির হিসাবে তাদের সদস্যভুক্ত ফার্মগুলো ১৬ হাজার ফাইলের স্বাক্ষর করেছে। তাহলে বাকি প্রায় ১৯ হাজার আয়কর ফাইল কারা স্বাক্ষর করেছে? অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর যোগসাজসে ভুয়া অডিট ফার্মের সই করা প্রতিবেদন আয়কর ফাইলে জমা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে এই উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন আইসিএবির নেতারা। এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভ‚ঁইয়া সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় মুদ্রণ শিল্প ও সিগারেট খাতের প্রতিনিধিরা তাদের বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন।
সভায় আইসিএবির সাবেক সভাপতি হুমায়ুন কবীর সমস্যা সমাধানে আইসিএবির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফার্মের তালিকার সঙ্গে জমা দেওয়া আয়কর ফাইলে স্বাক্ষরকারী ফার্মের তথ্য মিলিয়ে দেখতে আসছে বাজেটে উদ্যোগ নেওয়ার আহŸান জানানো হয়। এছাড়া বাজেটে নেওয়া সিদ্ধান্ত পূর্বের বছরের আর্থিক কর্মকান্ডের উপর আরোপ না করা, আয়কর ফাইলে কোম্পানির দেওয়া বিবৃতিতে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর স্বাক্ষর থাকা নিশ্চিত করা, বিদেশী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর সনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) নিশ্চিত করাসহ বেশকিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর (বিএটিবি) চেয়ারম্যান গোলাম মাঈনুদ্দিন বলেন, উচ্চস্তরের সিগারেটের উপর শুল্ক-করের হার অনেক বেশি। এর ফলে চোরাচালানও হয়। সিগারেটের বাজারের ৮০ শতাংশই এখন নি¤œস্তরের তামাকের হাতে চলে গেছে। এছাড়া এ খাতের কোম্পানির উপর সাড়ে ৪৭ শতাংশ কর আরোপ হওয়ায় (আড়াই শতাংশ সারচার্জসহ) বিদেশী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তা নেতিবাচক বার্তা দেয়। অন্যান্য দেশে সিগারেট খাতের উপর করহার বিবেচনায় নিয়ে এ খাতের কর কাঠামো ঠিক করার প্রস্তাব দেন তিনি। এ সময় বিএটিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেহজাদ মুনীম বলেন, উচ্চস্তরের স্থলে নি¤œস্তরের সিগারেটের বাজার চলে যাওয়ায় গত ১১ বছরে সরকার প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে। এ বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভ‚ঁইয়া বলেন, সিগারেট শিল্প থেকে বড় অংকের রাজস্ব পায় সরকার। যদিও এটির স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু বন্ধ করে দেয়া যাবে না। এটি বন্ধ করলে চোরাচালান বেড়ে যাবে। এটি রেখেই কিভাবে চোরাচালান বন্ধ করা যায় সেটা দেখতে হবে। আসন্ন বাজেটে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে। বিড়ি, তামাক, জর্দ্দা, গুল এই খাতগুলোতে করের হার বাড়াতে হবে। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য বেশী ক্ষতি। আস্তে আস্তে এগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরো বলেন, সারা বিশ্বেই সিগারেট চলে। আমরা সিগারেট কারখানা বন্ধ করলে মানুষ অন্য নেশায় ঝুকবে। যেমন ইয়াবা সিগারেটের চেয়ে অনেক বেশী ক্ষতিকর। তবে কোনভাবেই সিগারেটকে উৎসাহিত করা যাবে না।
বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির চেয়ারম্যান তোফায়েল খান স্থানীয় শিল্প রক্ষায় দেশে বই আমদানির উপর শুল্ক-কর বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে বলেন, বই ছাপানোর মওসুমে কাগজ মিলগুলোর কাছে ব্যবসায়ীরা জিম্মি হয়ে পড়েন। এ সময়ে কাগজের দাম বাড়িয়ে দেওয়া, নি¤œমানের কাগজ দেওয়া হয়। প্রাক-বাজেট আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন