কর আদায় ব্যবস্থা আরো সহজ করতে দেশে প্রথমবারের মতো অনলাইনে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে আয়কর রিটার্ন দাখিল কার্যক্রম শুরু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অর্থাৎ রিটার্ন সাবমিটে অটোমেশনের দিকে যাচ্ছি এনবিআর। আপাতত চলতি বছর প্রায় দেড় লাখ করদাতা ঘরে বসে রির্টান জমা দিতে পারবেন। তবে আগামী বছরের মধ্যে দেশের সব করদাতারা এ সুবিধা পাবেন বলে জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। গতকাল রাজধানীর কর অঞ্চল-৬ এ অনলাইনে রিটার্ন দাখিল কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
উদ্বোধনকালে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, করোনা মহামারীর সময়ে ঘরে বসে রির্টান জমা দিতে বড় ভূমিকা রাখবে এই কার্যক্রম। তিনি বলেন, করদাতারা যেন নিশ্চিতে রিটার্ন জমা দিতে পারেন সে ব্যবস্থা করতে কাজ করা হচ্ছে। যার উদ্বোধন করা হলো। এটি বড় কোনো অর্জন নয়, এটি ক্ষুদ্র একটি চেষ্টা। অন্ততঃ এটা দিয়ে আমরা অনলাইন রিটার্ন সাবমিশনের প্লাটফর্মে প্রবেশ করলো দেশ।
আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, এনবিআর এটাকে ক্রমেই উন্নত করবে এবং এটার ওপরেই কাজ করা হবে। চলতি বছরে আসলে একটু পিছিয়ে গেছি। আরো আগে করতে পারলে এর আওতায় আরো বেশি করদাতাদের যুক্ত করা যেতো। তবে আগামীবার অনলাইন রিটার্ন দাখিলে দৃঢ় প্রত্যয়ী। আর সব কর অঞ্চলে তখন সবাই অনলাইন কর সুবিধা পাবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, আমার কাছে মনে হয়, টিআইএনধারীদের কাছে টাকা দেওয়াটা কষ্টের বিষয় নয়। কিন্তু জমা দেওয়া সমস্যা। এই সমস্যাটা দূর করতে এনবিআর সরাসরি অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সুযোগ দিতে একটি সফটওয়্যার তৈরি করেছে। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে এখন থেকে ঢাকা কর অঞ্চল-৬ এর টিআইএনধারী করদাতারা সরাসরি অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। এই কর অঞ্চলে এক লাখ ৩৫ হাজার করদাতা রয়েছেন। করোনাভাইরাস মহামারীর সময়ে ঘরে বসে রির্টান জমা দিতে বড় ভূমিকা রাখবে এই কার্যক্রম। অনলাইনে রিটার্নের চালান জমা হওয়ার সাথে সাথে গ্রাহকপ্রাপ্তি স্বীকারপত্র পাবেন বলে জানান তিনি।
কর অঞ্চল-৬ এর কর কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদ হাছানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এনিবআর সদস্য হাফিজ আল মোরশেদ বলেন, অনলাইনে রিটার্ন দাখিল কার্যক্রম শুরু করতে পারাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই কার্যক্রম রাজস্ব আহরণ ও গ্রাহকদের সেবা প্রদানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। এই কার্যক্রম দেশের সকল কর অঞ্চলে দ্রুত ছড়িয়ে দিতে হবে। তবে ভূলভ্রান্তি দূর করার জন্য সবসময় সতর্ক থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
রাজস্ব বিভাগের অন্যতম প্রধান উৎস আয়কর। নানা কারণে প্রায় প্রতি বছরই রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হচ্ছে। এবছর করোনার বিরূপ প্রভাবে রাজস্ব আহরণে নানা বাধা দেখা দেয়। আহরণ লক্ষ্যের চেয়ে কম হলেও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর রাজস্ব আহরণ বেড়েছে। আহরণ বাড়ানো, ঝামেলা এড়ানোসহ নানা সুবিধার জন্য প্রথমবারের মত কর অঞ্চল-৬ এ ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের জন্য ই-রিটানিং পদ্ধতি চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এর ফলে রাজস্ব বিভাগে গতি আসবে বলে জানান করদাতারা। উল্লেখ্য, https://taxeszone6.gov.bd/ সাইটে গিয়ে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে।#
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন