শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিনোদন প্রতিদিন

অনেক পরিশ্রম করে আজকের আমার আমি হয়েছি- মীর সাব্বির

সাক্ষাৎকার

প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আশিক বন্ধু
অভিনয় জীবনে প্রাপ্তি অনেক। নিজেকে গড়ে তুলেছেন অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে। সম্প্রতি মীর সাব্বিরের সাথে নাটকের বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশের নাটক দর্শক কতটা গ্রহণ করছে?
প্রচার শুরু না হওয়া পর্যন্ত কোন নাটক দর্শক গ্রহণ করবে, কোনটি করবে না, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। দেখা যায়, অনেক ভালো নাটক দর্শক গ্রহণ করেনি। আবার অনেক কম বাজেটের সাদামাটা নাটক দশর্ক গ্রহণ করেছে। সুতরাং কোন নাটক কখন হিট হয়, বুঝা যায় না। তবে আমাদের লক্ষ্য থাকে দর্শক গ্রহণযোগ্যতাকে সামনে রেখে। এ জায়গায় আমাদের অবিচল থাকতেই হয়। তা না হলে, ভালো নাটক নির্মাণ সম্ভব নয়।
নাটকে কমেডি বেড়েছে। এ ধারাটা যথার্থ হচ্ছে কিনা?
সিরিয়াস নাটক হলে যে দর্শক ভালো কিছু পাবে তা নয়, অনেক সময় কমেডি থেকেও বাস্তবতা উঠে আসে। কিছু মেসেজ পাওয়া যায়। আর কমেডি নাটক নির্মাণ সহজ নয়। মানুষকে হাসানোর কাজ অনেক কঠিন। মানুষকে হাসানো, আনন্দ দেয়া সবার পক্ষে সম্ভব নয়।
বর্তমান নাটকের সঙ্কট কি?
এখন সবকিছুতে সঙ্কট, নায়িকা সঙ্কট সবচেয়ে বেশি। যদিও নায়িকার অভাব নেই। অসংখ্য নায়ক-নায়িকা। কিন্তু ভালো অভিনেতা-অভিনেত্রী হাতেগোনা। এছাড়া নাট্যকারের সঙ্কট, ভালো প্রডিওসারেরও সঙ্কট রয়েছে। ভালো প্রডিউসার বলতে যারা সত্যিকার অর্থে শিল্প নিয়ে কাজ করতে চায়। এ শিল্পের মাধ্যমে মানুষকে কিছু দেয়ার শুভ ইচ্ছা পোষণ করে। এ ধরনের প্রডিউসারের সঙ্কট রয়েছে। অনেক প্রডিউসার মনে করেন, নাটক প্রডিউস করলেই বেশি লাভবান হওয়া যায়। মিডিয়ায় মাস্তি করতে পারবো। এ ধরনের সঙ্কট এখন প্রকট হয়ে উঠছে।
আপনি পরিচালনা এবং অভিনয় দুটোই করছেন। এ দুয়ের পার্থক্য কিভাবে করবেন?
ডিরেকশন হচ্ছে সৃষ্টিমূলক কাজ। আমি যখন ডিরেকশন দেই, তখন এক ধরনের সৃষ্টির আনন্দ ভেতরে কাজ করে। আর অভিনয় করছি অন্যের ডিরেকশনে। এটাও একটা কাজ। তবে তা কোনোভাবেই ডিরেকশনের সঙ্গে তুলনীয় নয়। আমার কাছে মনে হয়, অভিনয় অনেকটা পেইন্টিংয়ের মতো। যে চরিত্রে অভিনয় করছি, তা আমি পেইন্টিং করছি, অর্থাৎ চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি। এই ফুটিয়ে তোলাটা আবার ডিরেক্টরের নির্দেশেই করছি। কাজেই ডিরেকশন এবং অভিনয় একেবারে দুই মেরুর বিষয়।
অভিনয় জীবনের এ পর্যায়ে এসে আপনার নিজের মূল্যায়ন কি?
নাটকের জায়গাটা আসলে সহজ নয়। পড়াশুনা করতে হয়, গল্প শুনতে হয়, গল্প পড়তে হয়। অভিনয়ের কলাকৌশল দেখিয়ে মানুষকে মুগ্ধ করা বড় কঠিন কাজ। এর জন্য অনেক শ্রম ও ঘাম ঝরাতে হয়। ধৈর্য্য ধরতে হয়। একদিন না একদিন পরিশ্রমের ফল আসবেই। তবে ভালো পরিচালকের বিকল্প নেই। একজন শিল্পী গড়ে তুলতে তার হস্তক্ষেপ ছাড়া সম্ভব নয়।  
আপনার দীর্ঘ অভিনয় জীবনের শুরুটা কেমন ছিল?
আমি সংগ্রাম করা মানুষ। আজ এই যে আমি, একে গড়ে তুলতে যুদ্ধ করতে হয়েছে। অনেক পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। শ্রমে-ঘামে আজকের আমার আমি হয়েছি। আমার জীবন অনেক কষ্টের ছিল। কাজের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি, সুযোগ পাইনি। অনেকে অবহেলা করেছে। অনেক নায়িকা আমার সাথে কাজ করতে চায়নি। হতদ্যোম হইনি। সংগ্রাম চালিয়ে গেছি। পরিশ্রমের মাধ্যমে আমি অমার প্রতিভা দেখিয়েছি। কাজের মাধ্যমে প্রমান দিয়েছি। যে আমাকে ঘৃনা করেছে, আমি তাকে ভালবেসেছি। ধৈর্য্য, অধ্যবসায়  ধরে রেখেছি।
চলচ্চিত্র নিয়ে কোনো ভাবনা?
আমি নিজেই সিনেমা বানাতে চাই। কিন্তু মাঝে মাঝে ভাবি, সিনেমা দেখতে সিনেমা হলের যে পরিবেশ দরকার, তা কতটুকু আছে? মা-বোনদের নিয়ে ভালো পরিবেশে সিনেমা হলে দেখার কতটা সুযোগ রয়েছে। শুধুমাত্র তিন-চারটি সিনেমা হলের ভালো পরিবেশ দিয়ে তো আর সিনেমার বাজার ধরে রাখা সম্ভব নয়। এসব চিন্তা করতে গিয়ে থমকে যাই। তবে আমি আশাবাদী মানুষ। একসময় সিনেমার পরিবেশ ফিরে আসবে। দর্শক সিনেমা হলে যাবে।  
নতুন কি কাজ করছেন?
রহমততুল্লাহ তুহিনের টক অব দ্য টাউন, সৈয়দ শাকিলের উল্টো ¯্রােত, সকাল আহমেদের বাবুই পাখিদের বাসা, এস এম শাহিনের সোনার, ফারুক আহমেদের রচনা ও পরিচালনায় মেঘেদের সংসার, শামীম জামানের আড়াল। এগুলো গত দুই-তিন মাসের মধ্যে করলাম। আমার পরিচালনায় নোয়াশাল চলছে। তিনশো পর্ব শেষ হলো। এইটা নিয়ে ব্যস্ত আছি। দর্শকদের চাহিদা অনুয়ায়ী এগিয়ে যাবো। এটাই এখন লক্ষ্য।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন