নেত্রকোনার বারহাট্টায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো: মোজাম্মেল হককে (৫৯) হত্যার দায়ে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ২ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। নেত্রকোনার জেলা ও দায়রা জজ কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা গতকাল সোমবার দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে আসামীর উপস্থিতিতে এই রায় প্রদান করেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী হলেন, বারহাট্টা উপজেলার আসমা ইউনিয়নের গাভারকান্দা গ্রামের মৃত মঞ্জিল মিয়ার পুত্র আনোয়ার (৩০)।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে প্রকাশ, গাভারকান্দা গ্রামের মৃত হাছেন আলী বেপারীর পুত্র গোড়ল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক অবসরপ্রাপ্ত হয়ে হাজীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে বিকালে ৮ম ও ১০ম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদেরকে প্রাইভেট পড়াতেন। এ নিয়ে হাজীগঞ্জ স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ আইন উদ্দিন ঈর্ষান্বিত হয়ে স্কুলে প্রাইভেট পড়াতে নিষেধ করে। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে বিরোধ হয়। বিগত ২০০৮ সালের ১১ ডিসেম্বর দুপুরে মোজাম্মেল হক হাজীগঞ্জ বাজারে গেলে আইন উদ্দিন তাকে ডেকে তাদের দোকানে নিয়ে যায়। এ সময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে আইন উদ্দিনের লোকজন তার মাথায় আঘাত করলে তিনি মারাত্মক আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নেত্রকোনা পরে ময়মনসিংহ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯ ডিসেম্বর ভোর ৬টার দিকে মারা যায়। মৃতকের ছোট ভাই নুরুল ইসলাম আজাদ বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামী করে ঐ দিনই বারহাট্টা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত শেষে বিগত ২০১৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। বিজ্ঞ বিচারক ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহনান্তে আসামী আনোয়ারের বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। মামলার অপর আসামীদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়। রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিঁপিঁ (চ: দা:) সাইফুল আলম প্রদীপ আর আসামী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট জীবন কুমার সরকার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন