মো. শরীয়ত উল্লাহ। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগ সহকারী অধ্যাপক। বর্তমানে তিনি পড়াশোনা করছেন নেদারল্যান্ডের ওয়াখেনিখেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঝিনাইদহের কালিশংকরপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম ও মা মোছা. শাহীনুর বেগমের ৪র্থ সন্তান তিনি। ছোটবেলা থেকেই যে কোন কাজে হারতে নারাজ তিনি। যেই বয়সে তার বয়সী বাচ্চারা খেলতে পছন্দ করতো সেই বয়সে তিনি বিভিন্ন ধরনের বই পড়ে সময় কাটাতেন। সে সময় থেকেই তার মনের অনেকটা জুড়ে দখল করে বই পড়ার নেশা। মনের অজান্তেই তৈরি করে ফেলেছিলেন কল্পনার এক আশ্চর্য জগৎ। যেখানে খেলার মতো হেরে যাবার কোনো সুযোগ নেই বরং দেশ, মানুষ আর পৃথিবীকে জানার রয়েছে অপূর্ব সুযোগ। প্রাথমিক আর মাধ্যমিকের প্রতিটি শ্রেণিতে বরাবরই প্রথম ছিলেন তিনি। কিন্তু হুট করেই ধাক্কা খেলেন উচ্চ মাধ্যমিকে। দুঃসময়ে পাশে এসে দাঁড়ালেন তার বাবা। বাবার উৎসাহে অনুপ্রেণিত হয়ে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ভর্তি হলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি অনুষদে। ¯œাতক পর্যায়ে অনুষদের প্রথম স্থান অধিকার করলেন। ¯œাতকোত্তরের পাঠ শেষ করেন সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে। পরবর্তীতে শিক্ষক হিসেবে ওই বিভাগে যোগদান করেন। পড়াশোনা ও শিক্ষকতার পাশাপাশি শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিভিন সংগঠনের সাথেও তিনি জড়িত ছিলেন।
শুধু তাই নয়, সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ সম্প্রতি পেয়েছেন বেশ কিছু পদক ও পুরস্কার। ¯œাতকে অসাধারণ সাফল্যের জন্য পেয়েছেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে “প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক” এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ম সমাবর্তনে “স্বর্ণ পদক” পেয়েছেন। এছাড়াও ¯œাতকে তৃতীয় বর্ষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ জিপিএর জন্য পেয়েছেন রমাপতিনাথ মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড, ¯œাতক পর্যায়ে সর্বোচ্চ সিজিপির জন্য পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন বৃত্তি এবং প্রফেসর নাজমুল হক ট্রাস্ট স্বর্ণ পদক।
শরীয়ত-উল্লাহ বলেন, ‘আমি যতটুকু পেয়েছি তা আমার কাছে স্বপ্নের মতো। শূন্য থেকে একবারে প্রথম হওয়া, শিক্ষক হওয়া, শিল্পসংস্কৃতির রাজ্য ইউরোপে পা রাখা সবই আজ সম্ভব হয়েছে। পড়াশোনার প্রতি উৎসাহ বাবা-মা এবং হামিদ ভাই। সম্প্রতি আমার বাবা যখন প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে আমার পক্ষ থেকে স্বর্ণ পদক ও সনদ গ্রহণ করছিলেন সেই মুহূর্তটি আমার সব থেকে খুশির মুহূর্ত। তাই কখনো হতাশ হবেন না, হতাশা আপনাকে আরো শেষ করে দেবে। পরিশ্রম করুন, একদিন না একদিন সাফল্য আপনার কাছে ধরা দিবেই।’
ষ মো.ইউসুফ আলী/নাবিল তাহমিদ
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন