ইনকিলাব ডেস্ক : অস্ট্রিয়ার ৭টি মসজিদ বন্ধ এবং তুরস্কের অর্থায়নে ইমামদের বহিষ্কারের পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান। এই পদক্ষেপ সম্পূর্ণ ইসলাম-বিরোধী এবং তা ধর্ম যুদ্ধের দিকে বিশ্বকে ধাবিত করতে পারে বলে এরদোগান সতর্ক করে দেন। শনিবার ইস্তাম্বুলে একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে এরদোগান এই সতর্ক বার্তা দেন। এরদোগান বলেন, এই পদক্ষেপগুলি গৃহীত হয়েছে স্বয়ং অস্ট্রীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক।
আমার ভয় হচ্ছে- তার এই পদক্ষেপ ক্রস ও ক্রিসেন্টের মধ্যে যুদ্ধের জন্য বিশ্বকে পরিচালিত করতে পারে। প্রসঙ্গত, ক্রিসেন্ট প্রতীকটি ইসলামের সঙ্গে সংযুক্ত। অন্যদিকে, ক্রস হচ্ছে খ্রিস্টীয় প্রতীক। এরদোগান বলেন, ‘অস্ট্রিয়ার সরকার বলছে, তারা আমাদের ধর্মীয় নেতাদের দেশটি থেকে বের করে দিতে যাচ্ছেন। আপনারা কি মনে করছেন যে আপনাদের এই ধরনের পদক্ষেপে আমরা কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাব না?’ তিনি বলেন, ‘এর অর্থ হল আমরাও কিছু করতে যাচ্ছি।’ তবে, তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি। তুর্কি বংশোদ্ভূত প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার লোক অস্ট্রিয়াতে বসবাস করে। তাদের মধ্যে প্রায় ১ লাখ ১৭ হাজার তুরস্কের নাগরিক রয়েছে। স¤প্রতি অস্ট্রিয়ার সরকার ঘোষণা দিয়েছে, ‘রাজনৈতিক ইসলাম’ এর বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে দেশটির সাতটি মসজিদ বন্ধ করা হবে। একই সঙ্গে তুর্কি অর্থায়নে পরিচালিত ৬০ জন ইমাম ও তাদের পরিবারকে বহিষ্কার করা হতে পারে বলেও ঘোষণা দেয়। অস্ট্রিয়ার সরকারের এই পদক্ষেপে আঙ্কারা এই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করল। অস্ট্রিয়া সরকারের অংশীদার ডানপন্থী ফ্রিডম পার্টির (এফপিও) সদস্য ও দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা হার্বার্ট কিউকল জানান, তুরস্কের ইসলামিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এই ইমামদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া নেয়া হতে পারে। শুক্রবার তুর্কি প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বলেছেন, ‘অস্ট্রিয়ার এমন সিদ্ধান্ত ইসলামবিদ্বেষী ও বর্ণবাদী ও বৈষম্যমূলক।’ তবে, উগ্র ডানপন্থী অন্যান্য ইউরোপীয় নেতারা অস্ট্রিয়ার এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। ২০১৬ সালের এরদোগানের বিরুদ্ধে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর গ্রেপ্তার অভিযান নিয়ে আঙ্কারা ও ভিয়েনার মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। তুরস্কের ২৪ জুনের নির্বাচন উপলক্ষে অস্ট্রিয়ার অভ্যন্তরে তুর্কি কর্মকর্তাদের মিটিংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটির সরকার। এর আগে গত অক্টোবরে অস্ট্রিয়ায় মুসলিম মহিলাদের প্রকাশ্য স্থানে পুরো মুখ-ঢাকা নিকাব বা বোরকা পরা নিষিদ্ধ করা হয়। মুসলিম-বিদ্বেষি হিসেবে পরিচিত সেবাস্টিয়ান কুর্জ গত ডিসেম্বরে অভিবাসন বিরোধী ফ্রিডম পার্টির সঙ্গে কোয়ালিশন করে দেশটির ক্ষমতায় আসেন। দ্য ন্যাশনাল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন