থাইল্যান্ডের নেতৃত্বাধীন বিতর্কিত রাখাইন পরামর্শক প্যানেল তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা আং সান সু চি’র কাছে জমা দিয়েছে। এতে ১২ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে রাখাইন নিয়ে কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালা বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করার জন্য। তবে এতে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার বিষয়ে কোনও সুপারিশ করা হয়নি। শুক্রবার মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার টাইমস এখবর জানিয়েছে। গত ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সন্ত্রাসবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের নামে শুরু হয় নিধনযজ্ঞ। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতে থাকে ধারাবাহিকভাবে। পাহাড় বেয়ে ভেসে আসতে শুরু করে বিস্ফোরণ আর গুলির শব্দ। পুড়িয়ে দেওয়া গ্রামগুলো থেকে আগুনের ধোঁয়া এসে মিশতে থাকে মৌসুমী বাতাসে। মানবাধিকার সংগঠনের স্যাটেলাইট ইমেজ, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন আর পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে জানা যায়, মায়ের কোল থেকে শিশুকে কেড়ে শূন্যে ছুড়তে থাকে সেনারা। কখনও কখনও কেটে ফেলা হয় তাদের গলা। জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয় মানুষকে। এমন বাস্তবতায় নিধনযজ্ঞের বলি হয়ে রাখাইন ছেড়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। গত বছর ডিসেম্বর মাসে এই পরামর্শক প্যানেল গঠন করা হয়। মূলত রাখাইনের সংকট নিরসনে কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের পরামর্শ দেওয়ার জন্য এটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু শুরু থেকেই বিতর্কের মুখে পড়ে এই প্যানেল। শুরুতেই ৫ সদস্যের প্যানেল থেকে মার্কিন রাজনীতিবিদ বিল রিচার্ডসন পদত্যাগ করলে ক্রমেই গ্রহণযোগ্যতা হারাতে থাকে রাখাইন সংকট নিরসনে গঠিত মিয়ানমার সরকারের আন্তর্জাতিক প্যানেল- কমিটি ফর ইমপ্লিমেন্টেশন অব দ্য রিকোমেনডেশন অন রাখাইন স্টেট। পরে জুলাই মাসে প্যানেলটির সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করা সাবেক থাই কূটনীতিক কবসাক চুটিকুলও পদত্যাগ করেছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন ওই সময় জানায়, কমিটির বিদেশি সদস্যদের স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগও দিচ্ছে না মিয়ানমার। সবমিলে সংশয়ের মুখে পড়ে প্যানেলটির কার্যকারিতা। মিয়ানমার টাইমস।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন