শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বাণিজ্যযুদ্ধে নেতৃত্ব হারানোর হুমকিতে মার্কিন ডলার

বিশ্বের মোট রিজার্ভের ৬২ শতাংশ ডলারে, ২০ ভাগ ইউরো এবং ইয়েন ও ৫ শতাংশ ব্রিটিশ পাউন্ডে

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ২০ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

কোনো মুদ্রার স্থিতিশীলতা যদি পুরোপুরি তার ইস্যুকারীর ওপর নির্ভর করে, তাহলে ডলারের অবস্থা বেশ নাজুকই বলা চলে। ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের সবার সাথে লড়াইয়ে বেশি ব্যস্ত। তার প্রশাসন চীনসহ অন্যান্য দেশের পণ্যে শুল্ক আরোপ এবং বড় বড় কথা দিয়ে বাণিজ্যযুদ্ধে ব্যস্ত। স¤প্রতি, রাশিয়া এবং তুরস্কের সাথেও বিবাদে জড়িয়েছেন ট্রাম্প। ওয়াশিংটনকে সুযোগ বুঝে পালটা জবাবও দিচ্ছে তারা। এখন রাশিয়া ও তুরস্ক, উভয়ের পক্ষ থেকেই চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে মার্কিন ডলারের আধিপত্যকে। এতেই বুঝা যায় ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধে মার্কি ডলার বিশ্ব নেতৃত্ব হারাতে পারে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ-এর হিসাব মতে বিশ্বের মোট রিজার্ভের প্রায় ৬২ শতাংশই সংরক্ষিত আছে ডলারে। বাকি অংশের মধ্যে শতকরা ২০ ভাগ আছে ইউরোতে এবং ইয়েন ও ব্রিটিশ পাউন্ডে সংরক্ষিত আছে ৫ শতাংশ রিজার্ভ। বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে মার্কিন ডলার। বিশ্বজুড়ে লেনদেনের ৮৫ শতাংশই হয়ে থাকে ডলারে। মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভও ডলারের নেতৃত্ব ধরে রাখার নীতিই ধরে রেখেছে এবং পর্যাপ্ত তারল্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছে, যাতে বিশ্ব অর্থনীতিতে ডলারের কর্তৃত্ব ঠিক থাকে। তুরস্কে লিরা নিয়ে কী হচ্ছে? অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তুরস্ক। বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৪৫ শতাংশ দর হারিয়েছে লিরা। এর ফলে বিশ্বের ১৮তম বৃহৎ অর্থনীতির এই দেশটি আরো মারাত্মক সংকটে নিমজ্জিত হতে যাচ্ছে। এর ধাক্কা এসে লাগছে বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশ,এমনকি ইউরোপের মার্কেটেও। ডলারের তারল্য বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করে। যেকোনো সময় ডলার দ্রæত বিনিময় করা যায় বলে এটিকে তারা একটি নিরাপদ মুদ্রা বলে মনে করে থাকেন। কিন্তু এর বিপরীত দিকও রয়েছে। কোনো বিপদের গন্ধ পেলে সবাই ডলারের দিকেই ছুটে যায়। কিন্তু বিশ্ব অর্থনীতির বঙ সব ধাক্কার উৎস বেশিরভাগ সময় যুক্তরাষ্ট্রেই হয়ে থাকে। ২০০৭-০৮ সালের অর্থনৈতিক সংকটের সময়ও একই ঘটনা ঘটেছিল। অর্থনীতিবিদ ব্যারি আইখেনগ্রিন এই অবস্থাকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি ‘নিদারুণ সুবিধা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।কিন্তু এই মুহূর্তে ডলারের কোনো বিকল্পও তিনি দেখতে পাচ্ছেন না। ডলারের সম্ভাব্য দুই প্রতিদ্ব›দ্বী ইউরোপের ইউরো এবং চীনের ইউয়ান নিজেরাই অনেক সমস্যায় আছে। আইখেনগ্রিন বলছেন, ইউরোর ওপর রাষ্ট্রের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, অন্যদিকে ইউয়ানের ওপর রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ অনেক বেশি। অর্থাৎ, বড় ধরনের সংকটের মুহূর্তে ইউরোকে সমর্থন দিয়ে আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার মতো একক কোনো সরকার নেই। অন্যদিকে, চীনের ইউয়ান বাজারের গতিপ্রকৃতি দ্বারা নিয়ন্ত্রণ না হয়ে দেশটির সরকারের ইচ্ছে অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত হয়। তারপরও বিশ্ব অর্থনীতিতে ডলারের আধিপত্য কমার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না। ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি নিয়ে বড় বড় কথা বলেন। বিশেষ করে চীনকে মুদ্রাব্যবস্থায় অযাচিত হস্তক্ষেপ করার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন তিনি। কিন্তু ঠিক উল্টো কাজটা করেছেন নিজের ঘরে এসে। ফেডারেল ব্যাংককে তিনি ক্রমাগত চাপ দিয়ে যাচ্ছেন তার পরামর্শমতো মুদ্রানীতি ঘোষণার জন্য। মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন পর্যন্ত সে চাপ সামলে নিজস্বতা বজায় রেখেছে বটে, কিন্তু কতদিন ফেডারেল ব্যাংক রাজনীতিনিরপেক্ষ থেকে নীতি ঘোষণা করতে পারবে, সে নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। সমচেয়ে বড় কথা, ট্রাম্পের অর্থনীতিতে কেউই আর ভরসা রাখতে চায় না। মুখে যা বলেন ট্রাম্প, কাজে করেন তার ঠিক উলটো। ডয়েচে ভেলে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
নিঝুম ২০ আগস্ট, ২০১৮, ৩:৪২ এএম says : 1
আমেরিকায় সময় আস্তে আস্তে শেষ হয়ে আসতেছে
Total Reply(0)
রমিজ উদ্দিন ২০ আগস্ট, ২০১৮, ৩:৪৩ এএম says : 0
বেশি বাড়াবাড়ি করলে যা হয়
Total Reply(0)
Shakhawat Hossain ২০ আগস্ট, ২০১৮, ১১:৪৩ এএম says : 0
বিশ্বের বাকী দেশ গুলোকেও মার্কিন ডলার এড়িয়ে চলার দরকার।বিশ্ব যখন স্থিতিশীল, তখন মার্কিনীরা অর্থনৈতিক যুদ্ধ শুরু করে বিশ্বকে আবার অস্থিতিশীল করে দিল।
Total Reply(0)
Md Sobuj ২০ আগস্ট, ২০১৮, ১১:৪৪ এএম says : 0
ডলার এরিয়ে চলা একমাত্র উপায় ডলারের বিরুদ্ধে রুক্ষে দাড়ান এবং একটা জোটবদ্ধ হলেই সম্ভব
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন