প্রবীণ রাজনীতিক জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমদের তৃতীয় মৃৃত্যুবার্ষিকী আজ। দিবসটি উপলক্ষে তাঁর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের চিওড়া কাজী বাড়িতে মরহুমের কবর জিয়ারাত, দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা, কোরআন খতমসহ নানা কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে। দোয়া মাহফিলে তাঁর আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও রাজনৈতিক সহকর্মীদের উপস্থিত হয়ে মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
কাজী জাফর আহমদ ১৯৩৯ সালের ১ জুলাই কুমিল্লার প্রখ্যাত চিওড়া কাজী পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। ৬০ বছরের এক বর্ণাঢ্য ও বৈচিত্রময় রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী কাজী জাফর ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনীতির অঙ্গনে প্রবেশ করেন। ১৯৫৫ সালে তিনি সক্রিয় ভাবে রাজনীতিতে যোগদান করেন। রাজশাহী জেলা ছাত্র ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক এবং রাজশাহী কলেজ সাহিত্য মজলিশের মুখপত্র, সাহিত্যিকীর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পারন করেন। খুলনা জেলা স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হন এবং রাজশাহী সরকারী কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স ও এমএ (ইতিহাস) পাশ করেন। তিনি ১৯৫৯-১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬২-১৯৬৩ সালে অবিভক্ত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের (এপসু) সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৬২ সালে সামরিক শাসন ও শরীফ শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শ্রমিক রাজনীতিও করেন। ১৯৬৭ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্কত তিনি বাংলা শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ছিলেন। ১৯৭২-১৯৭৪ সালে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৪ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি ইউনাইটেড পিপলস্ পার্টির (ইউপিপি) সাধারণ সম্পাদক ও চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৮ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মন্ত্রী পরিষদের শিক্ষামন্ত্রী হন। ১৯৮৬ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্তদ তিনি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। তিনি জাতীয় পার্টির সরকারে পর্যায়ক্রমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বন্দর-জাহাজ ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি উপ-প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টের রাজনৈতিক উপদেষ্টা, ১৯৮৯-১৯৯০ সালে বাংলাদেশের অষ্টম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এরশাদের সুবিধাবাদী রাজনীতির বিরোধিতা করে ২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর বিশেষ কাউন্সিলের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত কাজী জাফর আহমদ ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ##
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন