শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ম দর্শন

এ জগত-‘আলো আর রূপে’ রহস্যময়

নাজীর আহমদ জীবন | প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

(পূর্বে প্রকাশিতের পর) নূরে মোহাম্মদ (প্রেমে) আকর্ষিত শুধু মানুষ নয়; সমগ্র সৃষ্টি। তাই পদার্থের মৌলিকতা নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা হতবাক হয়ে যাচ্ছেন। অণু-পরমাণু-এর মাঝে নিউট্রন, প্রোটন, ইলেকট্রন, কোয়ার্ক এরপর নিউরন। এসব পদার্থগুলো কিছু অদৃশ্য রশ্মি ছেড়ে দিয়ে নিজেদের বদলে নিচ্ছে। আর মহাজাগতিক (Cosmic-Ray) প্রতিটি পদার্থকে আলোর তরঙ্গে প্রাণময় করে যাচ্ছে। এটা যে কোথা হতে আসছে, এসে প্রতিটি বস্তুতে প্রাণের স্পর্শ দিয়ে যায় ঢেউয়ের ন্যায় তা নিয়ে মতভেদ আছে। কেহ বলছেন-সূর্য হতে, কেহ ধুমকেতু, ছায়াপথ বা কোন গ্রহ হতে। রাশিয়ান বিজ্ঞানীরা এ ব্যাপারে বলেছেন যে, যদি বলতে পারে তো ভারতীয় বিজ্ঞানীরাই পারবে, কারণ-ওখানে আধ্যাত্মিক চর্চা হয় বা আলোচনা হয়।
রাসূল (সাঃ) কে হেরাগুহায় সাধনা কালিন সময়ে জিব্রাইল (আঃ) তিনবার আলিঙ্গন করেন। (বুক মিলান) এ প্রসঙ্গে রাসূল (সাঃ) বলেছেন যে, আমার দিক থেকে ভাই জিব্রাইল এর কষ্ট হয়েছে; অর্থাৎ তিনি এত জোরে চাপ দিযেছেন যে, নিজেই যর্মাক্ত হয়ে গেলেন। (দ্রঃ আল-আবওয়াব ওয়াত তারাজেম-পৃ-১৫) কারণ, তখন জিব্রাইল মানুষের আকৃতিতে ছিলেন।
তার নিয়ম হ’ল মানবীয় আকৃতি গ্রহণ করার কারণে মানুষের প্রভাব ও চলে আসে। যেমন ঃ মুসা (আঃ) যে আযরারইল (আঃ) কে চপেটাঘাত করেছিলেন তা এভাবেই হয়েছিল। জিব্রাইল, অনেক সময় সাহাবী দাহ্-ইয়া কালবী (রাঃ) এর রূপে আসতেন। একদিন হযরত আলী (রাঃ) রাসূল (সাঃ) এর খুঁজে মসজিদে নববীতে এসে দেখেন যে, উনি, দাহ্ইয়া কাল্বীর উরুতে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছেন। উভয়ে সালাম বিনিময়ের পর-দাহ্ইয়া- কাল্বী, আলীর অনেক প্রশংসা করলেন-এর পর বললেন-রাসূলের মাথাটা আপনার উরুতে নিন-আমার কাজ আছে। এরপর উনি চলে গেলেন। কিছুক্ষণ পর চোখ খুলে রাসূল জিজ্ঞাসা করলেন, আলী তুমি কার সাথে কথা বলেছিলে। আলী বললেন-দাহ্ইয়া কাল্বীর সাথে। রাসূল বললেন, না উনি দাহ্ইয়া কাল্বী ছিলেন না। উনি ছিলেন ভাই জিব্রাইল।” আল্লাহর এক অদৃশ্য সৃষ্টি-‘জিন জাতি’। এরা বিভিন্ন রূপ নিতে পারে। তাই বলি; হে মানুষ, আল্লাহ নিজে ‘রূপময়’। তাই তার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি আহ্মদ বা মোহাম্মদ (সাঃ) তাঁর সুন্দর রূপের রূপান্তর মাত্র। তাই তিনি, রূপের রাজা, সুন্দরের রাজা। ইউসুফ নবীর সুন্দর রূপ তাও আমাদের নবীর রূপের সামান্য অংশমাত্র।
তাই বলি : তুমি যে রূপের রাজা/মিলিত হয়েছিলে/তোমার প্রমাসম্পদের অপরুপে/তুমি যে সঞ্জিবনী শক্তি দিব্য শক্তি/তাই তুমি নিত্য মহিমান্বিত/বিভিন্নরূপে যুগে যুগে। কথা প্রসঙ্গে সূফী সাধক বারোশরীফের মহান ইমাম (রঃ) বলেছিলেন ঃ রাসূল (সাঃ) কে সেই আদি চেহারায় বা রূপে দেখতে পাবেন না। তার রূপে বিভিন্ন কামেল কে দেখা যায়।
বললাম, মুর্শিদ অনেকে বলেন যে এসব আমল করলে রাসূল (সাঃ) কে দেখা যায় বা দেখেছি। এটা কি ঠিক? মৃদু হেসে জ্যোর্তিরময় সাধক বললেন, ‘৫৭০ খৃঃ এর “রূপ’ দেখা যাবে না; তিনি যেসব খেলাফত দিয়ে রেখেছেন তাদের মাধ্যমে দেখা দেন। তাদের সে কোন একটায় দেখা দেন।” (দ্রঃ ডাইরী ১৬-১০-৮৪ মঙ্গলবার)
মক্তুবাত-৫৮তে, হযরত মোজাদ্দিদ আলেফেসানী (রঃ) লিখেছেন -“এরূপ এক রাত্রে সহস্র ব্যক্তি নবী (সাঃ) কে বিভিন্ন আকৃতি সমূহে স্বপ্ন যোগে দেখে থাকেন এবং শিক্ষা লাভ করে থাকেন। এ সমস্ত নবী (সাঃ) এর লতীফাগুলোর আত্মিক আকৃতি সমূহে পরিবর্তিত হওয়ার জন্য হয়ে থাকে।
এ পৃথিবী ও মহাবিশ্ব আলো আর রূপের প্রকাশ যা রহস্যময়। যেমন : রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “পৃথিবীর মত আরো অনেক গ্রহ আছে যেখানে তোমাদের নবীর মত নবী, আদমের মত আদম, নূহের মত নূহ, ইব্রাহীমের মত ইব্রাহীম এবং ঈসার মত ঈসা আছে।” (দ্রঃ আদাবুল ঈমান; কিতাবুল আসমা ওয়াস্ সিফাত) (চলবে)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন