তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান বলেছেন, ইদলিবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে বোমা বর্ষণ বন্ধ করতে হবে। শুক্রবার ইরানের রাজধানী তেহরানে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সম্মেলন শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইদলিব প্রদেশে আসন্ন সর্বাত্মক হামলায় প্রাণহানি এড়াতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু এ আহ্বানে সায় দেননি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিও বলেছেন, সিরিয়াকে অবশ্যই দেশের পুরো ভূখন্ডের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ইরানের রাজধানী তেহরানে শুক্রবার অনুষ্ঠিত সম্মেলনে অংশ নেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান ও ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। এরদোগান বলেন, সিরিয়ার ইদলিব শহর শুধু সিরিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়; শহরটি তুরস্কের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফলে সিরিয়ায় যতদিন রাজনৈতিক, ভৌগোলিক ও সামাজিক ঐক্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না হবে ততদিন তুরস্ক এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না। এরদোগান বলেন, ‘আমরা ইদলিবে রক্তগঙ্গা চাই না। আমরা যদি সেখানে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে পারি তাহলে সেটা হবে এই সম্মেলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’ সামরিক দিক দিয়ে মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, ইদলিবে তুরস্কের ১২টি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্র থেকে সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় তুরস্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এর আগেই এরদোগান বলেন, ‘যদি সেখানে কোনো প্রকার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয় তবে শহরটি কবরে পরিণত হবে। এ অবস্থায় সেখানকার জনগণ কোথায় যাবে? তারা অধিক হারে আমাদের দেশের দিকে ঝুঁকে পড়বে এবং তাতে করে সমস্যা আরো দীর্ঘায়িত হবে।’ সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ইদলিব প্রদেশে খুব শিগগিরই অভিযান শুরু করবে আশঙ্কায় এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছে শত শত মানুষ। ইদলিবে সর্বাত্মক অভিযান শুরু হলে রক্তবন্যা বয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাতিসংঘ আগেই ইদলিবে মানবিক বিপর্যয় নেমে আসার ব্যাপারে সতর্ক করেছে। যুক্তরাষ্ট্রও ইদলিবে হামলার ফল অপরিণামদর্শী হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে। কিন্তু সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশটিই এখন বিদ্রোহী এবং জিহাদি গোষ্ঠীগুলোর শেষ ঘাঁটি হওয়ার কারণে অনেক ঝুঁকি নিয়েও সেখানে যুদ্ধ থেকে পিছু হটতে রাজি নয় সিরিয়া এবং রাশিয়া। জাতিসংঘের হিসাবমতে, ইদলিবের জনসংখ্যা ২৯ লাখ। এর মধ্যে ১০ লাখই শিশু। তাই সেখানে বেপরোয়া হামলায় প্রাণহানি নিয়ে উদ্বেগ আছে। এ উদ্বেগ মাথায় রেখেই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট শুক্রবারের বৈঠকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট রুহানিকে ইদলিবে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার আহ্বান জানান। যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেই সম্মেলন সফল হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তাছাড়া, ইদলিবে হামলার পরিণামে সীমান্তে নতুন করে আর কোনো শরণার্থী তুরস্ক নিতে রাজি নয় বলেও জানান এরদোগান। রয়টার্স, আনাদোলু, এএফপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন