২০১৩ সালে মিসরের রাজধানী কায়রোতে বিক্ষোভে জড়িত থাকার অভিযোগে মুসলিম ব্রাদারহুডের কয়েক সিনিয়র নেতাসহ ৭৫ জনের মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন মুসলিম ব্রাদারহুড মোহাম্মদ বেলতাগি ও নেতা এসাম এল-এরিয়া। দলটির আধ্যাত্মিক নেতা মোহাম্মদ বদিসহ ৪৭ জনকে দেয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদন্ড। এছাড়া শাওকান নামে পরিচিত প্রখ্যাত চিত্রসাংবাদিক মাহমুদ আবু জায়েদকে পাঁচ বছরের কারাদন্ডসহ মোট ৭০০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে।
২০১৩ সালে শাওকান কায়রোতে হত্যাকান্ডের ছবি তোলার সময় গ্রেফতার হয়েছিলেন। ২০১৩ সালে কায়রোর রাবা আল-আদাবিয়া স্কয়ারে একটি গণবিক্ষোভের জেরে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে। মিসরের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা মোহাম্মদ মুরসির বিপক্ষে ও পক্ষে বিক্ষোভ চলতে থাকে। পরে সহিংসতার সূত্রপাত হয় ও তা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ৮ শতাধিক মানুষ হত্যাকান্ডের শিকার হন। চলতি বছর দেশটির পার্লামেন্ট ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সব অপরাধের দায়মুক্তি দিয়েছে। গতকাল যেসব মানুষের বিরুদ্ধে আদালত রায় দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছিল, বিশেষ করে সহিংসতা, হত্যা ও অবৈধভাবে বিক্ষোভে জড়িত থাকার।
বিভিন্ন সংগঠন ও মানবাধিকার সংস্থা এই গণবিচারের সমালোচনা করেছে। মানবাধিকার সংস্থা এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ বিচারকে ‘অন্যায্য’ বলে অভিহিত করেছে। তারা বলেছে, এই বিচার মানবাধিকারের লঙ্ঘন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, মিসরের নিরাপত্তা বাহিনী ওই সময় ৮১৭ জনকে হত্যা করেছিল। এটি মানবতাবিরোধী অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। অবশ্য দেশটির সরকার বলছে, বিক্ষোভকারীদের অনেকেই সশস্ত্র অবস্থায় ছিল এবং সে সময় সংঘর্ষে পুলিশের মোট ৪৩ জন সদস্যও নিহত হয়েছিলেন। মিসরের সামরিক বাহিনী ২০১৩ সালে ক্ষমতা দখলের পর থেকেই ইখওয়ানুল মুসলিমীন বা মুসলিম ব্রাদারহুডকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ বলে ঘোষণা করে। সূত্র : বিবিসি ও রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন