রাজধানীর ডেমরার দম্পতিকে অজ্ঞান করে হত্যাকান্ডের ঘটনায় ১৬ দিনেও কোন ক্লো উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। জোড়া খুনের সময় বাসায় প্রবেশকারী সেই ৫ নারী সম্পর্কেও এখন পর্যন্ত অন্ধকারে তদন্তকারী কর্মকর্তারা। কেন এবং কারা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে সে বিষয়ে কোন তথ্য নেই তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে।
তদন্তের সাথে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, হত্যাকান্ডের সময় বাসা থেকে কোনো মালামাল লুট করা হয়নি। আলমারিতে থাকা ৩০ হাজার টাকা থাকলেও তা নেয়া হয়নি। এরপরই কেন আব্দুস সাত্তার ও তার স্ত্রী সাহেরা খাতুনকে হত্যা করা হলো তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নানা রহস্যের। বাসায় প্রবেশকারী ৫ নারীর মধ্যে নিহতদের কোনো আত্মীয়স্বজন ছিল কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিবারের দাবি, পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে তাদের। জড়িতদের গ্রেফতার এবং দ্রুত বিচার দাবি করেন পরিবারের সদস্যরা।
ডেমরা থানার ওসি মোঃ সিদ্দিকুর রহমান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, এখন পর্যন্ত হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। আমরা বেশ কিছু বিষয় মাথায় রেখেই মামলাটি তদন্ত করছি। জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তৌহিদুর রহমান জানান, দম্পতি খুনের ঘটনায় তদন্ত চলছে। আমরা বিভিন্ন ক্লু ধরে সামনের দিকে এগোচ্ছি। বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। একতলা বাড়ির আশপাশ থেকে জব্দকৃত সিসি ক্যামেরার ২০টি ভিডিও ফুটেজ ধরে ঘাতকদের শনাক্ত করার চেষ্টা বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সূত্র জানায়, ডেমরার বক্সনগরের বড় মসজিদের একটু সামনের দিকে একটি পুরোনো একতলা বাড়ি। এলাকাবাসী ইমাম সাত্তারের বাড়ি বলে চেনেন। নিহত আব্দুস সাত্তার বাংলাদেশ ব্যাংক মসজিদের সহকারী ইমাম হিসেবে ২০০৯ সালে অবসরে যান। ওই পুরনো একতলায় ছেলে ও ছেলের বৌকে নিয়ে থাকতেন নিহত দম্পতি। নিহতদের পরিবারের অন্য সদস্যরা তাদের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে ছিলেন ঘটনার দিন। ফলে ওই বাসায় দস্পতি ছাড়া ঘটনার দিন কেউ ছিলেন না।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ আগস্ট ঘর ভাড়া নিতে পাঁচজন নারী বাড়িতে এসেছিল।
তারা ওই দম্পত্তির সাথে অনেকক্ষণ খোসগল্প করেন। এরপর তারা ওই দম্পতিকে খাবারের সঙ্গে কিছু খাইয়ে নির্বিঘেœ বের হয়ে যায়। বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী না থাকার কারণে তারা কোনো বাধা ছাড়াই সেখান থেকে চলে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত আব্দুস সাত্তার এলাকায় অনেকদিন ধরে বসবাস করেন। এলাকার লোকজনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল। কারও সঙ্গে তেমন বিরোধ ছিল না। উল্লেখ গত ২৬শে আগস্ট সন্ধ্যায় ডেমরার বক্সনগরে একটি পুরনো একতলা বাড়িতে আব্দুস সাত্তার (৭০) ও সাহেরা খাতুন (৬০) দম্পতিকে অচেতন হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন প্রতিবেশীরা। পরে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। নিহতদের নাক ও মুখ দিয়ে সাদা ফেনা বের হচ্ছিল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। চিকিৎসকদের ধারণা, দুর্বৃত্তরা তাদের খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে ডেমরা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলা নম্বর-৮। মামলায় ৫ অজ্ঞাতনামা নারীকে আসামি করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন