বাংলা বছর ও ঋতুরাজ বসন্তের শেষদিনে প্রথমবারের মতো সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা কলাপাতায় বিভিন্ন রকমের ফুল ও নৌকা ভাসানোর মধ্য দিয়ে পুরাতন বছরের সকল দুঃখগুলোকেও ভাসিয়ে দেয় পানিতে। ফুল ভাসিয়ে দিয়ে পুরনো বছরের গ্লানি ভুলে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। যা এর আগে অন্য কোন ক্যাম্পাসে হয়নি। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
প্রথমে তেমন গুরুত্ব না দিলেও ফুল ও নৌকা ভাসানোর সময় শিক্ষার্থীরা আবেগে ভেসে যান। চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব ১৪২২ এর আয়োজন প্রসঙ্গে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সম্পা ঘোষ জানান তার মনের কথা, ক্যাম্পাসে এই বছরই প্রথম চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব করলাম। বিগত বছরের কষ্টগুলোকে ফুলের সাথে ভাসিয়ে নতুন বছরের শুভকামনায় নৌকা ভাসালাম। নৌকা ভাসানোর সময় মনে হচ্ছিলো গত বছরের সকল কষ্টগুলো যেন নৌকার সাথে ভেসে যাচ্ছে।
সুজন কুমার হালদার শৈশবকাল থেকেই নিজ হাতে এর আগেও অনেকবার নৌকা বানিয়েছেন কিন্তু এই প্রথমবার নৌকা ভাসিয়ে কাঁদতে দেখা গেল তাকে। ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী প্রীতি দাস প্রতি বছরই এভাবে ফুল আর নৌকা ভাসাতে চান কেননা এই ফুল আর নৌকার মাঝে খুঁজে পেয়েছেন শৈশবের সেই দিনগুলোকে যা ভাসানো নৌকার মতো আর ফিরে পাবার নয়।
অন্যান্য সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই অনুষ্ঠানের ধারাবাহিকতা দাবি করে আয়োজক কমিটিকে কৃতজ্ঞতা জানান আর আয়োজক কমিটিও সকলের সাড়া পেয়ে ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বাস দেন এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এরকম ভিন্ন সাংস্কৃতি চর্চায় ক্যাম্পাসের সুনাম অনেক দূরে এগিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানটি ভিন্ন এবং সকলের কাছে অপরিচিত হওয়াতে আয়োজক কমিটি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদকে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়েছে। তবে অনুষ্ঠান সফলভাবে পরিচালিত করতে পেরে তারাও আনন্দিত যা ভবিষ্যতের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করেন।
সকলের এখন একটিই প্রত্যাশা এ বছর ভালো এবং মঙ্গলময় হবে আর আগামী বছরের বিদায় জানাতে এই অনুষ্ঠানের অপেক্ষার প্রহর গুণতে হবে। সকলের মঙ্গলময় বছর কাটুক বলে দেরিতে আসা শিক্ষার্থীরা এমন একটি ভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থাকতে পেরে হতাশায় ভেঙে পড়েন। তবে তাদের বিশ্বাস যে আগামী বছরও এ অনুষ্ঠান পালন করতে পারবেন।
ষ এস এম আহমেদ মনি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন