গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপির বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে ঐক্য প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব-ক্ষমতা দিয়েছে ২০ দলীয় জোট। এ কাজে প্রয়োজন মনে করলে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের যে কাউকে সাথে নিতে পারবেন তিনি। এক্ষেত্রে বিএনপি মহাসচিব যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই ২০ দলের সিদ্ধান্ত হবে এবং সেই সিদ্ধান্তের প্রতি জোটের পূর্ণ সমর্থন থাকবে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাত সাড়ে সাতটায় বৈঠকটি শুরু হয়ে সোয়া নয়টায় শেষ হয়। তবে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে কিছু জানানো হয়নি।
বৈঠক স‚ত্রে জানা গেছে, বৈঠকের এক পর্যায়ে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার অগ্রগতিতে জামায়াতের প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। তখন বৈঠকে উপস্থিত জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ কমিটি সদস্য মাওলানা আব্দুল হালিম এ ব্যাপারে দলীয় অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সঙ্কট উত্তরণে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। বিএনপির জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গে তারা সম্পূর্ণ একমত। এই প্রক্রিয়ায় জামায়াতকে নিয়ে কে কী বললো কিংবা তাদেরকে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হোক বা বাইরে রাখা হোক এটা নিয়ে তারা চিন্তিত নয়। তারা চান, যেকোনো মূল্যে জাতীয় ঐক্য সফল হোক। বৈঠকে গত ২২ সেপ্টেম্বর গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নাগরিক সমাবেশ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ওই সমাবেশে বিএনপি অংশগ্রহণ করলেও ২০ দলীয় জোটের কয়েকটি দলের যোগদান না করার প্রসঙ্গটিও আলোচনায় আসে। তখন ওই দলগুলোর নেতারা বলেন, তারা বিভিন্ন কারণে ওই নাগরিক সমাবেশে অংশগ্রহণ না করতে পারলেও বৃহত্তর ঐক্য প্রক্রিয়ার সঙ্গেই রয়েছেন। এটাকে অন্যভাবে দেখার কোনো কারণ নেই। বিএনপিও তখন তাদের সাথে একমত হন। এ সময় ২০ দলীয় জোটের ঐক্য অটুট রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা একে অপরের প্রতি আস্থাশীল ছিলাম, আছি এবং আস্থাশীল থাকবো। জাতীয় ঐক্যের অগ্রগতি নিয়ে ২০ দলীয় জোটকে অবহিত করতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে পুনরায় জোটের বৈঠক আহবান করা হবে বলে বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, ২৯ সেপ্টেম্বর সভা করার অনুমতি মিললে সেখান থেকে দলীয় অবস্থান তুলে ধরে নেতাকর্মীদের প্রাথমিক নির্দেশনা দেয়া হবে। নেতারা বলছেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে দলের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ও কর্মসূচি ওই সমাবেশে তুলে ধরা হবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে বৈঠকে জোটের শরিক দলগুলোর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের মাওলানা আবদুল হালিম, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, খেলাফত মজলিসের আহমদ আবদুল কাদের, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাগপার ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান, এনপিপির ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ন্যাপ-ভাসানীর অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। জোটের সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানও বৈঠকে ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন