তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান তার মন্ত্রিসভার সদস্যদেরকে মার্কিন পরামর্শক কোম্পানি ‘ম্যাককিনসে এন্ড কোম্পানি’র কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ না করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বর্তমানে তুরস্কের অর্থনৈতিক যুদ্ধ চলছে; কাজেই শত্রউ কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণ করা যাবে না। তুরস্কের ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি বা একেপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এরদোগান বলেন, তিনি তার মন্ত্রীদের বলে দিয়েছেন তারা যেন যুক্তরাষ্ট্রের কনসাল্টিং ফার্মের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণের পরিবর্তে অভ্যন্তরীণ সক্ষমতার দিকে বেশি নজর দেন। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর আসে, তুরস্কের চলমান অর্থনৈতিক সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে দেশটির কর্তৃপক্ষ নিউ ইয়র্ক-ভিত্তিক কনসালটিং ফার্ম ‘ম্যাককিনসে’র শরণাপন্ন হয়েছেন। চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত তুরস্কের জাতীয় মুদ্রা লিরার মান শতকরা ৪০ ভাগ নেমে গেছে। দেশটির সরকার বিরোধী দলগুলো এ ঘটনার সরকারের তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, মার্কিন কোম্পানির কাছে দেশের অর্থনৈতিক গোপন তথ্য হস্তান্তরের কারণেই লিরার মানের অবনমন হয়েছে। অপর দিকে প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে তুরস্কের একীভূতকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় এ বিষয়ে পুনর্বিবেচনার জন্য তুরস্ক গণভোটের আয়োজন করতে পারে। চলতি মাসের ৪ তারিখে এরদোগান টিআরটি ওয়ার্ল্ড ফোরামের এক সভায় বলেন, ‘যদি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে তুরস্ককে একীভূতকরণের জন্য ইইউ কর্তৃপক্ষ আরো সময় অপচয় করা অব্যাহত রাখে, তবে তুরস্ক হয়ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ সম্পর্কে পুনর্বিবেচনা করার জন্য গণভোটের আয়োজন করতে পারে।’ তিনি আরো বলেন- ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে তুরস্কের একীভূতকরণ প্রক্রিয়া আরো দ্রুত হওয়া উচিত যাতে করে তুরস্ক তার সঠিক গন্তব্যে এগিয়ে যেতে পারে। ইউরোপীয় দেশসমূহ প্রতি বছর অন্তত দুবার কিংবা তিনবার রেফারেন্ডামের আয়োজন করে। সুতরাং এসব রেফারেন্ডামের যে কোনো একটিতে তুরস্কের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত।’ এরদোগান ইউরোপীয় ইউনিয়নের এ প্রক্রিয়া কতদূর এগিয়েছে সে সম্পর্কে প্রশ্ন করে বলেন, ‘আমি অবশ্য সে লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি।’ দশকের পর দশক ধরে তুরস্ক ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য পদের জন্য অপেক্ষা করে আছে । এরদোগান এমনটি বলেন। তিনি বলেন- ‘আমাদের এমন কিছু রয়েছে যা দিয়ে আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নে অবদান রাখতে পারি। কিন্তু ইইউ যদি তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকে তবে আমি মনে করি তুরস্কের ৮১ মিলিয়ন জনগণের কাছে এ বিষয়ে তাদের মতামত জানতে চাওয়া উচিত।’ তিনি অবশ্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলকে পুনর্গঠনের কথা বলেন। তার মতে নিরাপত্তা পরিষদে বিশ্বের সব দেশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা উচিত। এরদোগান এ সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা মনে করি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অন্তত ৭ টি দেশের প্রতিনিধিত্ব থাকা উচিত।’ স¤প্রতি বছর সমূহে তুরস্কের ক্ষমতাসীন একেপি পার্টি দেশটিতে বেশ কয়েকটি নির্বাচনের আয়োজন করে। পার্সটুডে, হুররিয়াত ডেইলি নিউজ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন