দীর্ঘ ১৭ বছর ফেরারী ও বন্দী জীবন কাটিয়ে অবশেষে মুক্ত হলেন লক্ষীপুরের আলোচিত মেয়র আবু তাহেরের বড় ছেলে সেই এ এইচ এম আফতাব উদ্দিন বিপ্লব। গতকাল মঙ্গলবার সকালে কারামুক্ত হলেন কয়েকটি খুনের ঘটনায় সাজাভোগকারী ও মৃত্যুদণ্ড থেকে প্রেসিডেন্টের ক্ষমায় মুক্তি পাওয়া বিপ্লব। এদিকে বিপ্লবের মুক্তির পর পরিবারের লোকজনের সাথে খাওয়ার টেবিলের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়ার পর বিষয়টি সবার নজরে আসে।
জানা যায়, লক্ষীপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও আইনজীবী নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার রায়ে ২০০৩ সালে বিপ্লবসহ পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড ও নয়জনের যাবজ্জীবন আদেশ দেন বিচারিক আদালত। আরও দুটি হত্যা মামলায় বিপ্লবের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় পলাতক থেকে বিপ্লব ২০১১ সালের ৪ এপ্রিল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এরপর তার বাবা আবু তাহের ছেলে বিপ্লবের প্রাণভিক্ষা চেয়ে প্রেসিডেন্টের কাছে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মো. জিল্লুর রহমান বিপ্লবের সাজা মওকুফ করেন। ওই বছরের ১৪ জুলাই এই সাজা মওকুফের আদেশ কার্যকর হয়। ২০০০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে লক্ষীপুর শহরের বাসা থেকে নুরুল ইসলামকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। এটি তখন আলোচিত ঘটনা ছিল। তখন পৌর চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরও ব্যাপক আলোচনায় ছিলেন।
এ ছাড়া বিএনপির কর্মী কামাল হত্যা মামলায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল বিপ্লবের অপর দুই ভাই এ কে এম সালাহ্ উদ্দিন টিপু ও আবদুর জব্বার লাবলু ওরফে লাবুর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। কামাল হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন হয় আবু তাহের, তার বড় ছেলে বিপ্লব ও দলীয় কর্মী খালেক, বাবর এবং মারজুর। পরে বিপ্লব ও খালেক ছাড়া বাকি চারজন হাইকোর্ট থেকে খালাস পান। বিএনপির কর্মী কামালকে ২০০০ সালে হত্যা করা হয়। এছাড়া শিবির কর্মী মহসীন ও যায়েদসহ অন্য মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি হিসেবে কারাগারে আটক ছিলেন বিপ্লব। লক্ষীপুর জেলা কারাগারের জেলার মো. শাহআলম জানান, সকালে এইচএম আফতাব উদ্দিন বিপ্লব সাজা ভোগ শেষে মুক্তিতে জেল থেকে বের হন।
জেলা জজকোর্টের পাবলিক প্রসিউকিটর এ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন এইচএম আফতাব উদ্দিন বিপ্লবের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দীর্ঘ কারাভোগের পর গতকাল মঙ্গলবার সকালে মুক্তিতে জেল থেকে বের হন বিপ্লব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন