বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী বিশ্ব

তালেবান-যুক্তরাষ্ট্র বৈঠকের ব্যাপারে অন্ধকারে আফগান নেতারা

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

হোয়াইট হাউজ যখন শান্তি প্রক্রিয়া শুরুর আশা নিয়ে তালেবানদের সাথে সরাসরি আলোচনার জন্য আমেরিকার কূটনীতিকদের প্রথম নির্দেশ দেয়, আফগানিস্তানের অনেকেই তখন বিষয়টিকে ১৭ বছরের যুদ্ধের ইতি টানার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানিও প্রকাশ্যে পরিমিতভাবে একে স্বাগত জানিয়েছিলেন। কিন্তু কর্মকর্তারা ব্যক্তিগতভাবে বলেছেন যে, আফগান নেতা বারবার আমেরিকান কর্মকর্তাদের সাথে তালেবানদের আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং এর বিরোধিতা করেছেন, কারণ এখানে সরকারকে রাখা হয়নি। তারা বলেছেন, তার উদ্বেগ হলো আফগান সরকারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি এমন আলোচনা দেশের নেতৃবৃন্দকে একটা মারাত্মক প্রান্তিকতা ও বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দিতে পারে। গত সপ্তাহে ঘানির আশঙ্কা বিব্রতকরভাবে সত্যে পরিণত হয়েছে, যেটা তিনি এড়াতে চেয়েছিলেন।
ঘানির উদ্বেগ প্রকাশের মাত্র কয়েক দিন পরেই আমেরিকার বিশেষ দূত জালমাই খলিলজাদ কাবুল থেকে উপসাগরীয় দেশ কাতারে উড়ে যান এবং তালেবান প্রতিনিধিদের সাথে গোপনে বৈঠক করেন। ঘানি এবং তার সরকার এই বৈঠকের কথা শুনেছে সংবাদপত্রের রিপোর্টের মাধ্যমে। এবং আমেরিকানদের কাছে আহ্বান জানানোর পরও তাদের কাছ থেকে তারা বিস্তারিত জানতে পারেনি, জানতে পেরেছে তালেবানের বিবৃতির মাধ্যমে। ঘটনা সম্পর্কে অবগত কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান, কারণ তারা এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য অনুমোদনপ্রাপ্ত নন। মিত্র হিসেবে আমেরিকা বিশ্বাস ভঙ্গ করায় এটা নিয়ে আফগান প্রেসিডেন্ট মারাত্মক ক্রুদ্ধ হন বলে জানান তারা। আর মাত্র কয়েক মাস পরেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে, যেখানে তিনি দ্বিতীয় বারের মতো প্রতিদ্বদ্বীতার পরিকল্পনা করছেন। খলিলজাদের সাথে তালেবানদের বৈঠকের কয়েকদিন পরে কাবুলে এক বৈঠকে ঘানি বিশেষভাবে আমেরিকান প্রতিনিধিদের ওই আলোচনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন কিন্তু তাকে বিস্তারিত জানানো হয়নি এবং আমেরিকান প্রতিনিধিরা সেখানে প্রসঙ্গ পাল্টে ফেলে।
তাৎক্ষণিক কি কূটনীতিক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, সেটা জানা যায়নি, কিন্তু এর আগে এ ধরনের বিশ্বাসের সঙ্কটের কারণে আলোচনা ভেস্তে গেছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই আমেরিকান কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বার বার বিশেষ করে তালেবানদের সাথে যোগাযোগের ব্যাপারে দ্বিমুখী আচরণের অভিযোগ করেছিলেন।
পরিচয় প্রকাশ না করে এক আমেরিকান কর্মকর্তা জানান, ওই আলোচনার পর ঘানি কাবুলের আমেরিকান রাষ্ট্রদূত জন ব্যাস এবং আফগানিস্তানে আমেরিকান বাহিনীর কমান্ডার জেনারেল অস্টিন এস মিলার সাথে যোগাযোগ করেন, যাতে তাকে আলোচনা থেকে বাদ না রাখা হয়। তারা উভয়েই তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে, তাকে বাদ রাখা হবে না।
কাবুলের আমেরিকান দূতাবাসের কর্মকর্তারা এবং খলিলজাদ নিজেও ওই বৈঠকের ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি। ঘানির একজন মুখপাত্র হারুন চাখানসুরি জোর দিয়ে বলেন যে, তাদের সরকারের অধীনেই শান্তি প্রক্রিয়া চলছে এবং এটা তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ বিষয়ে তিনি গত জুনের তালেবানদের দুর্লভ অস্ত্রবিরতির সিদ্ধান্ত এবং ফেব্রুয়ারিতে কাবুল শান্তি সম্মেলনে ঘানির শান্তি প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করেন।
সুনির্দিষ্টভাবে কিছু না বললেও চাখানসুরি আরও বলেন, “আমাদের অংশীদার এবং মিত্রদের সাথে একজোট হয়ে কাজ করাই আফগানিস্তানে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায়”। সূত্র : এসএএম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন