তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেটে খুন হওয়া সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের সময়কার এক গুরুত্বপূর্ণ অডিও শুনেছেন দেশটি সফররত মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ প্রধান জিনা হ্যাসপেল। মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সিআইএ প্রধান জিনা হাসপেল
খাশোগি হত্যার প্রায় তিন সপ্তাহ পর সোমবার তুরস্কে যান হাসপেল। তিনি রওনা হওয়ার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সংগৃহীত প্রমাণাদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিনিময় করতে তুরস্কের প্রতি আহ্বান জানান। তুর্কি তদন্তকারীরা সে দেশের সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, খাশোগির হাতে সর্বাধুনিক ‘অ্যাপেল ওয়াচ’ ছিল। আর এ ওয়াচের মাধ্যমে সৌদি কনস্যুলেটে তাকে নির্যাতন এবং হত্যার মুহূর্তের অডিও রেকর্ড তার ফোন এবং আইক্লাউডে পৌঁছে গিয়েছিল। এই ফোন ও আইক্লাউড তিনি কনস্যুলেটের বাইরে অপেক্ষমাণ তার বাগদত্তার কাছে রেখে গিয়েছিলেন। এসব রেকর্ড তার বাগদত্তার হাত থেকে তুর্কি তদন্তকারীদের কাছে পৌঁছায়। খাশোগির অন্তিম মুহূর্তের ওই অডিও রেকর্ডিং বিশ্লেষণ করে বলা হয়, মাত্র সাত মিনিটের মধ্যে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
তুর্কি কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, হ্যাসপেল ওই অডিওটি শুনেছেন। এটা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রকে তদন্তের আলামত দেখার আনুষ্ঠানিক আলামত দিয়েছে।
সাবেক সিআইএ কর্মকর্তা ও ব্রুকলিন ইনস্টিটিউশনের বিশেষজ্ঞ ব্রুস রিডেল বলেন, এতে করে এখন পরিস্থিতি ওয়াশিংটনের অনুকূলে চলে আসলো। এখন মিডিয়া থেকে আরও চাপ সৃষ্টি হবে।
এদিকে তুরস্কের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ‘সৌদি আরবে কিভাবে সুষ্ঠু তদন্ত সম্ভব যেখানে মূল সন্দেজভাজনই হচ্ছেন যুবরাজ।
২ অক্টোবর ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন সৌদি অনুসন্ধানী সাংবাদিক জামাল খাশোগি। সৌদি আরব খাশোগির নিখোঁজে ভূমিকার কথা বারবার অস্বীকার করে। তুরস্ক দাবি করে, কনস্যুলেটের ভেতরেই তাকে হত্যার পর কেটে টুকরো টুকরো করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) মধ্যরাতে প্রথমবারের মতো সৌদি আরব সাংবাদিক জামাল খাশোগি নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করে। তবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছানির্বাসিত জামাল খাশোগি সৌদি সরকারের কঠোর সমালোচক ছিলেন। বিশেষ করে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংস্কার পরিকল্পনার বিরোধী ছিলেন তিনি। ওয়াশিংটন পোস্ট ছাড়াও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক অনুষ্ঠানগুলোতে কন্ট্রিবিউটর হিসেবে কাজ করতেন খাশোগি। তিনি সৌদি রাজপরিবারের উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন