বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিশেষ সংখ্যা

পুলিশ বলছে সড়ক দুর্ঘটনা, পরিবারের দাবি খুন

ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৪ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম | আপডেট : ১০:১১ এএম, ৪ নভেম্বর, ২০১৮

 দ্বিতীয় দফায় আর বাঁচতে পারলেন না শফিকুল ইসলাম (৩৯)। তার আঘাতপ্রাপ্ত অর্ধমৃত দেহ পাওয়া যায় ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কের লাউদিয়া এলাকায়। শরীরে আঘাতের অসংখ্য চিহ্ন। তবে সেটা সড়ক দুর্ঘটনাজনিত নাকি ধারালো অস্ত্রের আঘাত তা নিশ্চিত হতে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সড়কের উপর পড়ে থাকতে দেখে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন শফিককে। পরে ফরিদপুরে নেওয়ার পথে শনিবার ভোর রাতে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। নিহত শফিক ঝিনাইদহ শহরের কলাবাগান পাড়ার আব্দুল ওয়াদুদ তরফদার ওরফে পটলা ডাক্তারের ছেলে।

মা শাহিদা খাতুন অভিযোগ করেন, রাত ১০টার দিকে হামদহের বাসা থেকে মেয়ে তানজিলার জন্য ওষুধ কিনতে বের হয় শফিক। এরপর থেকেই ছেলের সন্ধান ছিল না। রাতেই পুলিশ তাদের খবর দেয় শফিক সড়ক দুর্ঘনায় আহত হয়েছেন। শাহিদা খাতুনের ভাষ্যমতে গত ১৮ অক্টোবর দোকান বিক্রি নিয়ে শফিককে মারধর করে। সে সময় তার মাথায় একাধিক সেলাই দেওয়া হয়। হামদহ এলাকার মাতুব্বররা সে সময় তাদের থানা পুলিশ করতে দেয়নি। হামলাকারীকে সালিশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। তারাই দ্বিতীয় দফায় হামলা করে শফিককে খুন করেছে বলে মায়ের দাবি। স্ত্রী বিউটি খাতুনের অভিযোগ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে বাসার সামনেই হবে। লাউদিয়া বা চুটলিয়া এলাকায় শফিক যাবে কেন ? তাছাড়া শফিকের সারা শরীরে কাদা ও রক্তমাখা ছিল।

বড় বোন সাজেদা খাতুন অভিযোগ করেন, তার ভাইকে ডেকে নিয়ে ধান ক্ষেতে খুন করা হয়েছে। এই জন্য তার শরীরে কাদামাখা ছিল। হামদহ বাসস্ট্যান্ডের মার্কেট ও জমিজাতি নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলেও বোন সাজেদা খাতুন অভিযোগ করেন। ঘাতক চক্রটি হত্যা করে এখন সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দিচ্ছে বলে মনে করছেন পরিবারটি। এদিকে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস সাংবাদিকদের জানান, রাত ১০টার দিকে কালীগঞ্জ যাওয়ার পথে সড়কের উপর রক্ত ও কাদামাখা অবস্থায় এক ব্যক্তির অচেতন দেহ দেখতে পান। তখনও তিনি বেচে ছিলেন। এ সময় তিনি ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই বখতিয়ারকে ডেকে দ্রæত তাকে ঝিনাইদহ হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। ডাক্তারের অবহেলার কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে আমি মনে করি। তিনি বলেন আমার দায়িত্ব ছিল একজন মুমুর্ষ রোগীকে দ্রæত হাসপাতালে পাঠানো। এখন তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় নাকি কেউ আঘাত রাস্তার উপর ফেলে রেখে গেল তা আমি বলতে পারছি না। তাছাড়া তার পরিবারের লোকজন পুলিশের কাছে হত্যার কোন অভিযোগ করেন নি। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার অপুর্ব কুমার জানান, সুরহাল রিপোর্ট ও ময়না তদন্তের পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে এটি হত্যা না সড়ক দুর্ঘটনা। তিনি বলেন আমি শুনেছি লাশের শরীরের অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন