সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সঙ্কট নেই ঐক্যফ্রন্টে চট্টগ্রামে পাঁচ আসন চায় বিএনপির শরিকেরা

রফিকুল ইসলাম সেলিম | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

চট্টগ্রামে একক প্রার্থী নির্ধারণে তেমন সঙ্কট দেখছেন না জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। তারা বলছেন, আন্দোলনের অংশ এই নির্বাচনে বিজয় ছাড়া কিছুই ভাবছেন না তারা। ফলে একপ্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রেও কোন ঝামেলা হবে না। যিনি ভোটের লড়াইয়ে টিকে থাকতে পারবেন তিনি যে দলেরই হোন না কেন; তাকেই ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী করা হবে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঐক্যফ্রন্টের শরিক গণফোরাম একটিসহ বিশ দলীয় জোটের শরিক মোট ৫ দল চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের পাঁচটিতে তাদের প্রার্থী দিতে বিএনপির সঙ্গে দেন-দরবার করছে। ইতোমধ্যে এসব দলের সাত জন নেতা মনোনয়নপত্রও সংগ্রহ করেছেন।
বিএনপির নেতারা বলছেন, পাঁচটি আসন দাবি করা হলেও শেষ পর্যন্ত দুটি বা তিনটি আসন শরিকদের ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। বাকি আসনে বিএনপির প্রার্থীরাই নির্বাচন করবেন। আর এ নিয়ে শরিকদের সাথে তেমন ঝামেলা হবে না বলেও জানান তারা। জানা গেছে, ২০ দলীয় জোটের শরিক জামায়াত ৩টি, এলডিপি, গণফোরাম, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ও ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশ একটি করে আসন চায়। এসব দলের নেতারা সবাই বিএনপির প্রতীক ধানের শীষে নির্বাচন করবেন। এরফলে প্রার্থী যে দলের হোক ভোটের মাঠে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশাবাদী ঐক্যফ্রন্টের নীতি-নির্ধারকেরা।
চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া আংশিক) আসনে এবার ঐক্যফ্রন্টের একক প্রার্থী হতে চান এলডিপির চেয়ারম্যান ও ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম। বিএনপির ডা. মহসিন জিল্লুর করিম দলের মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন। এই আসনে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। তবে তাকে ঢাকার একটি আসনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। ফলে এই আসনে এককপ্রার্থী নির্ধারণে তেমন বেগ পেতে হচ্ছে না।
চট্টগ্রাম- ৫ (হাটহাজারী) আসনে ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়ন চান ২০ দলের শরিক কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মুহাম্মদ ইবরাহীম বীরপ্রতীক। জানা গেছে তিনি তার ইচ্ছা পূরণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এসএম ফজলুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলালউদ্দিন, উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানাসহ অনেকে মনোনয়ন দৌড়ে আছেন। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ আসনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে সঙ্কটে রয়েছে ঐক্যফ্রন্ট। শরিক দলের চেয়ারম্যান হিসেবে মুহাম্মদ ইবরাহীমকে প্রার্থী করা হলে আর তার পক্ষে বিএনপি মাঠে না নামলে আসনটি ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। তবে বিএনপির নেতারা বলছেন, এই আসনটি বিএনপির আসন হিসাবে পরিচিত। ভিন্নরকম পরিস্থিতির কারণে যিনি মাঠে টিকে থাকতে পারবেন তাকেই এবার মনোনয়ন দেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে এবারও জোটের প্রার্থী চায় জামায়াত। নিবন্ধন ও প্রতীকবিহীন দলটির নায়েবে আমির কারাবন্দী আ ন ম শামসুল ইসলাম ও দলের কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য শাহজাহান চৌধুরী এই আসনে প্রার্থী হতে চান। তাদের মধ্যে শাহজাহান চৌধুরী দুই বার এবং শামসুল ইসলাম একবার এই আসন থেকে নির্বাচিত হন। এই আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় শ্রম বিষয়ক স¤পাদক ও এএম নাজিম উদ্দীন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক শেখ মোহাম্মদ মহিউদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন দলের মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত এই আসনটি জামায়াতকে ছেড়ে দেয়া হতে পারে।
চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে প্রার্থী হতে চান ইসলামী ঐক্যজোট একাংশের চেয়ারম্যান মুফতি ইজহারুল ইসলাম চৌধুরী। জামায়াতও তাদের উপজেলা চেয়ারম্যান প্রিন্সিপাল জহুরুল ইসলামকে এ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী করতে আবদার করেছে। এ আসন থেকে একাধিকবার নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী। এবারও তিনি এ আসনে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি ছাড়াও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. ইফতেখার হোসেন চৌধুরী মহসিন, বাঁশখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কামরুল ইসলাম হোসাইনীসহ কয়েকজন মনোনয়ন দৌড়ে সামিল হয়েছেন।
চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী) আসনে হঠাৎ করে নিজেদের প্রার্থী চেয়ে বসেছে জামায়াত। দলের নেতা শাহজাহান চৌধুরীর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। বিএনপির আসনে চেয়ে জামায়াতের বাগড়া দেয়ার এ ঘটনাকে বাঁকাচোখে দেখছেন অনেকে। এ আসনে ২০০৮ এর নির্বাচনে প্রার্থী হন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। এবারও তিনি এ আসনে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীও এ আসনে প্রার্থী হতে তৎপর রয়েছেন। তিনি একইসাথে চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনেও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। গত ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি এ আসনে প্রার্থী ছিলেন। বিএনপির আসনে জামায়াতের প্রার্থী ঘোষণার বিষয়টিকে বিএনপির সাথে জামায়াতের দর কষাকষি হিসেবে দেখছেন বিএনপি নেতারা। তবে এ আসনে বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমানই প্রার্থী হবেন এটা প্রায় নিশ্চিত।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন