ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ চিনিকল যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আবারো বন্ধ হয়ে গেছে। শুক্রবার সকাল ছয়টায় কারখানার টারবাইন মেশিনে ত্রুটি দেখার দেওয়ার পর বন্ধ হয়ে যায়। তবে কখন চালু করা সম্ভব হবে বলতে পারছেনা মিল কর্তৃপক্ষ। এদিকে কৃষকদের নতুন করে জমি থেকে আখ না কাটার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। চিনিকলের আওতাধীন ছয়টি সাব-জোনের ৩৮ আখ ক্রয় কেন্দ্রে হাজার টন আখ শুকাচ্ছে। এদিকে মিল হাউজে লাখ লাখ টাকা মূল্যের রস নষ্ট হওয়ার পথে রয়েছে।
মিলটি ৭ ডিসেম্বর চলতি মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের মাত্র দুই ঘন্টা পর যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায়। ১৬ ঘন্টা পর মিলটি আবার চালু করা হয়। গত ২০১৭-২০১৮ মোৗসুমে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ৮৭ দিনে প্রায় তিনশ ঘটনা বন্ধ ছিল। ফলে গেল বছর নানা কারণ আর অনিয়মে মিলের প্রায় ৩৩ কোটি টাকা লোকসান দিতে হয়।
এখনো পর্যন্ত ১৪ কোটি টাকা মূল্যের আড়াই হাজার মেট্রিক টন চিনি অবিক্রীত পড়ে রয়েছে। ফলে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে হিমশিম ক্ষেতে হচ্ছে। কয়েক মাস পর পর বেতন দেওয়া হলেও ৮ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত কেটে রাখা হচ্ছে। আর নানা অনিয়মের কারণে দিনে দিনে কৃষকরাও আখ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে।
মিলের কারখানা ব্যবস্থাপক শহিদুল হক জানান, উদ্বোধনের পরেই মিলহাউজের টারবাইন মেশিনের সমস্যা দেখা দেয়। যার করনে আখ মড়াই বন্ধ করে রাখা হয়। অনেক দিনের পুরানো এই সুগার মিলে যান্ত্রিক ত্রুটি হতেই পারে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, প্রায় তিনশত কোটি টাকা পুঞ্জিভূত ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে চলতি মাড়াই মৌসুম যাত্রা করে মিলটি। এটি চিনিকলের ৫২তম মাড়াই মৌসুম। এ বছর ১ লাখ ৮ হাজার ৪২৩ মেট্রিক টন আখা মাড়াই করে ৮ হাজার ১৩২ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চিনি আহরণের হার ধরা হয়েছে ৭.৫০। মিলটি ৮০ থেকে ৮৫ দিন চলবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ। এ পর্যন্ত ৩৫ মাড়াই মৌসুমে লোকসান হয়েছে ৩শ ১ কোটি টাকা। বাকি ১৬ মৌসুমে লাভ হয়েছে ৩৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন