শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পদ্মা সেতুর নকশার জটিলতা কাটলো

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

অবশেষে নকশার জটিলতা পুরোপুরি মুক্ত হলো পদ্মা সেতু। যে কারণে সেতুটির নির্মাণকাজে বারবার বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছিল, সেই ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের নকশা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এর মধ্য দিয়ে বড় সমস্যা কাটানো সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের নকশার জটিলতা আগেই দূর হয়েছে। আর দুদিন আগে নতুন নকশার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নতুন নকশা অনুযায়ী এই দুটি পিলারের প্রতিটি ছয়টি করে অতিরিক্ত একটি পাইল মাঝখানে বসানো হবে।
দ্বিতল পদ্মা সেতু হচ্ছে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরার মধ্যে। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য (পানির অংশের) ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ডাঙার অংশ ধরলে সেতুটি প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। পিলারের ওপর ইস্পাতের যে স্প্যান বসানো হবে, এর ভেতর দিয়ে চলবে ট্রেন। আর ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন। পুরো সেতুতে মোট পিলারের সংখ্যা ৪২টি। প্রতিটি পিলারে রাখা হয়েছিল ছয়টি পাইল। একটি থেকে আরেকটি পিলারের দূরত্ব ১৫০ মিটার। এই দূরত্বের লম্বা ইস্পাতের কাঠামো বা স্প্যান জোড়া দিয়েই সেতু নির্মিত হবে। ৪২টি খুঁটির ওপর ৪১টি স্প্যান বসানো হবে। এর মধ্যে ৫টি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। স্প্যানের অংশগুলো চীন থেকে তৈরি করে সমুদ্রপথে জাহাজে করে আনা হয় বাংলাদেশে। ফিটিং করা হয় মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে। প্রতিটি পিলারে পাইলের সংখ্যা ছয়। সব মিলিয়ে ২৪০টি পাইল বসানোর কথা ছিল। ইস্পাতের এসব পাইল মাটির নিচে ৯৬ থেকে ১২৮ মিটার পর্যন্ত গভীরে বসানোর কথা।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর পদ্মা সেতুর ৬ নম্বর পিলারের পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়। এরপর ৭ ও ৬ নম্বর পিলারে তিনটি করে মোট ছয়টি পাইলের বটম সেকশনের কাজ করা হয়। কিন্তু এসব পাইল বসাতে গিয়ে নদীর তলদেশে নরম মাটির স্তর পাওয়া যায়। তখন দুটি পিলারের ছয়টি পাইলের টপ সেকশনের কাজ বন্ধ রাখা হয়। মাওয়া প্রান্তে কাজ বন্ধ রেখে জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু হয়। পরে আরও ১২টি পিলারের পাইল বসানোর সময় মাটির স্তরে কাদামাটি পাওয়া যায়। এই পিলারগুলোর নম্বর হলো ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ২৬, ২৭, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ ও ৩৫। আগের নকশা অনুযায়ী এই ১৪টি পিলারের পাইলের সংখ্যা ছিল ৮৪।
এই সমস্যা সমাধানে কাজ শুরু করে ব্রিটিশ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাউই ইউকে লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির বিশেষজ্ঞরা মাটি পরীক্ষার প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন তথ্য যাচাই করেন। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী, কাদামাটির পরই শক্ত মাটি না পাওয়ায় পদ্মা সেতুর ১৪টি পিলারের মধ্যে পাইলের সংখ্যা একটি করে বাড়ানো হয়। অন্যদিকে এসব পিলারে খাঁচ কাটা পাইল বসিয়ে বিশেষ ধরনের সিমেন্টের মিশ্রণে নরম মাটি শক্ত করা হয়।
কিন্তু ৬ ও ৭ নম্বর পিলারে আগে থেকে ছয়টি পাইল বসে যাওয়ায় চিন্তায় পড়েন বিশেষজ্ঞরা। এসব পাইল তুলে নতুন করে পাইল বসানোর কথাও ভাবা হয়। শেষ পর্যন্ত আগে থেকে বসে যাওয়া পাইলগুলো রেখেই ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের নকশা চূড়ান্ত করা হয়।
এ প্রসঙ্গে পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ৬ ও ৭ নম্বর পিলারের পাইল বসানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে। পদ্মা সেতুর বড় সমস্যা আমরা ওভারকাম করেছি। বড় কোনো সমস্যা আর নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (10)
Shan*UK ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
গত সপ্তাহেই ভারতে চালু হয়েছে বগীবিল সেতু, সেটার দৈর্ঘ্য ৫ কিলোমিটার আর খরচ মাত্র ৫৯০০ কোটি রূপি। পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য সেখানে ৬ কিলোমিটার। দুটো সেতুতেই সড়ক এবং রেল লাইন থাকবে। পদ্মা সেতুর খরচ এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার কোটি টাকার উপরে। দিনে দিনে আরও বাড়বে।
Total Reply(0)
দেব বাবু ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
আশা করি এই পাঁচ বছরে জননেত্রী শেখ হাসিনা গতবছরগুলোর যত ভুলগুলো করেছে সেগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের এমন এক স্বপ্নের বাংলাদেশ উপহার দেবেন যাতে যারা আজকে নীতিবাচক মন্তব্য করছে, তাদের মুখ দিয়েই যেন ইতিবাচক মন্তব্য বের হয়----যদিও যারা বিভিন্ন দলের অন্ধ সমর্থক তারাই সব সময় প্রতিপক্ষ দলের খারাপটাই প্রচার করবে, ভালটা নয়!!!
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
পদ্মা সেতু আর মরা নদীর উপর সেতু তৈরি করার জন্য আওয়ামীলীগ কে আজীবন ক্ষমতায় দেখতে চাই ভোট চুরির মাধ্যমে হলেও।
Total Reply(0)
রায়হান ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:২৬ এএম says : 0
একজন বিবেকবান লোক তার সমালোচনা কে পসিটিভিল দেখে।এখানে দেখা যাচ্ছে সরকার এর বিরুদ্ধে কিছু বললেই সে তাকে আক্রমণাত্মক উত্তর দিচ্ছে কিছু কিছু অতি উৎসাহী সাপোর্টার। ভাই আমার ভ্যাট এর টাকা তে হচ্ছে , আমি এ নিয়ে ভুল দেখবো তো কথা বলবো কারণ ইটা সরকার এর বাপের টাকা না। আমার ভোট ও আমি আওয়ামীলীগ কে দেব নাকি বি এন পি কে দেবো আমার বেপার। আপনি কোন মহাপুরুষ যে আপনি ই সঠিক আপনাকে ই মানতে হবে। আমার ভোট যদি আমি আওয়ামীলীগ কে দেয় তবে আমি তার ই সমালোচনা করবো। আমার ভ্যাট এর টাকায় যখন আমলা মন্ত্রীরা পাহাড় করবে তখন এর জবাব দিতে হবে। অতি উৎসাহী সমর্থক আপনার একার টাকা তে হচ্ছে নাকি পদ্মা সেতু।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:২৬ এএম says : 0
উন্নয়নের রোলমডেল, জিডিপি নিয়ে মাতামাতি, আরো কত কি ! কিন্ত এক সেতুর এক কিলোমিটার এখনো হয়নি, তাই নিয়ে দফায় দফায় মিডিয়ার মাতামাতি দেখলে মনেহয়, বিশ্বের বৃহত্তম সেতু বানাচ্ছে দলীয় তহবিল থেকে.
Total Reply(0)
Nafis Ahmed ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:২৭ এএম says : 0
যে সেতু নিয়ে কয়েক লক্ষ অনিয়ম আর চুরির মামলা হওয়ার কথা, উল্টো সেই সেতুর দোহাই দিয়েই উন্নয়ন আর তিন টার্মের ক্ষমতার বাহার!!! হায়রে হীরক রাজ্য!!!
Total Reply(0)
Md. Sheikh jamal ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:২৭ এএম says : 0
আমি বাংলাদেশের প্রকৃত উন্নয়নের পক্ষে। আমি একজন প্রকৌশলী। তবে আমি এখনো বুঝি না একট প্রকল্প কতবার সময় ও সিডিউল মুল্য সংশোধন যোগ্য? এই সেতু আমাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করবে তবে দুর্নীতি মুক্ত হতে পারলে এমন একটি সেতুর ব্যয় দিয়ে কমপক্ষে ছয়টি সেতু তুলানামুলক কম সময় হতে পারতো, এ ক্ষেতে ভারত ও চীনের সেতু গুলোর তুলনামূলক খরচ ও সময় উদাহারণ হতে পারে। যে যেই দলেই করি না কেন, বিশ্বে আমরা যেন সবাই প্রকৃত উন্নয়নের মডেল জাতি হিসাবে পরিচিত হতে পারি। অপরিকল্পিত ফ্লাইওভার বা অর্থ অপচয়ের ফলে আমাদের রাষ্ট্রীয় ঋন বৃদ্ধি পাবে, ধনী গরিবের ব্যাপক পাথর্ক্য দেখা দিবে। বেকার সমস্যা বৃদ্ধি পাবে। দেশটা আমার, দেশটা আমাদের সবার, সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে দুনীর্তিকে না বললে ও প্রতিরোধ গড়ে তুললে নিশ্চয় প্রকৃত উন্নয়নশীল, সুখী -সমৃদ্ধ দেশ ও জাতি হিসাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবো।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:২৮ এএম says : 0
পদ্মা সেতু হলেই কি! জোড়াতালি দিয়ে বানানো এই সেতুতে না উঠার আহবানতো জানিয়ে রাখা হয়েছে! যারা এই আহবানের সমর্থক তারা নির্বাচনের ফলকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে কারচুপির গল্প জুড়ে বসে আছেন। ইভিএমে যেহেতু আংগুলের ছাপ না মিললে ভোট দেয়া যায় না তাই ইভিএমের ফলাফলটা সাড়া বাংলাদেশেরই চিত্র এমনটা ধরে নিতে তারা অক্ষম।
Total Reply(0)
রিপন ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:২৮ এএম says : 0
বছরের পরে বছর যাচ্ছে, মুল্য ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে।। কখন শেয হবে জানিনা, বাড়তি খরচ আর সয়না ।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:২৮ এএম says : 0
যত দেরি হবে তত টাকা আসবে। এই সরকারের আমলে রাস্তার প্লাস্টারের অবস্থা দেখেছি , দেখেছি বিল্ডিং নির্মানে যেখানে রড ব্যবহার করতে হয় সেখানে বাঁশ ব্যবহৃত হচ্ছে। এখন পদ্মা সেতুতেও সেরকম কিছু ব্যবহৃত হচ্ছে কি না আল্লাহই মালুম। সেতু পুরোটা তৈরি হতে এই টার্মও শেষ হয়ে যাবে। এরপর যখন কিক অফ হবে তখন আরম্ভ হবে আসলে কতটুকু জেনুইনলি কাজ হয়েছে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন