রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, পদ্মা সেতু রেল প্রকল্পের সার্বিক কাজের ৭৩ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। কাজের যে অগ্রগতি হয়েছে তা সন্তোষজনক। আগামী জুনে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলবে। সেভাবেই কাজ এগিয়ে চলছে। গতকাল দুপুরে পদ্মা সেতুর শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে পদ্মা সেতুর রেল প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে এসে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, সামনে নির্বাচন। আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমাদের রেল প্রজেক্টের মেয়াদ আছে। আগেই ভাঙ্গা থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত রেলসংযোগ করা হয়েছে। আর আগামী জুনের মধ্যে ভাঙ্গা থেকে ঢাকা পর্যন্ত কাজ শেষ হবে। কাজের সুবিধার জন্য ঢাকা থেকে গেন্ডারিয়া পর্যন্ত রেলের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত রেললাইন আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং একটি কাজ। আমাদেরকে সফলভাবে কাজ করে যেতে হবে।
এসময় তার সঙ্গে ছিলেন, রেলসচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর, পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রধান সমন্বয়ক মেজর জেনারেল এফ এম জাহিদ হোসেন, রেলওয়ের ডিজি শ্রী ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার, জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান সোহেল প্রমুখ।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৬৯ ভাগ, ভাঙ্গা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৮০ ভাগ এবং ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। সব মিলিয়ে ৭৩ ভাগ কাজের অগ্রগতি হয়েছে। যেহেতু এখন কাজের মৌসুম, তাই দিনরাত কাজ চলমান রয়েছে।
গত ১৭ জুলাই পদ্মা সেতু রেল লিংক প্রকল্পের কর্মকর্তাদের সেতুতে কাজ করার অনুমতিপত্র বাংলাদেশ রেলওয়ের হাতে তুলে দেয় সেতু কর্তৃপক্ষ। এর পর থেকে সেতুতে রেললাইন বসাতে প্রস্তুতি নিতে থাকেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা। পদ্মা সেতুতে পাথরবিহীন রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। পদ্মা স্টেশন থেকে একটি রেলের ট্র্যাক কারে চড়ে সেতুর ৪২ নম্বর পিলার পর্যন্ত আসেন মন্ত্রী ও অতিথিরা। এরপর মন্ত্রী কেকে কেটে ও বেলুন উড়িয়ে সেতুতে রেললাইন বসানোর কাজের উদ্বোধন করেন।
মন্ত্রী এ সময় বলেন, আগামী বছরের জুনে কমলাপুর থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচলের লক্ষ্যে নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। রেললাইনে যে পাথর ব্যবহার হয়, তা সিলেটের মধ্যপাড়া থেকে সংগ্রহ করা হয়। সেখানে পাথর উত্তোলনে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ কারণে বিকল্প উৎস থেকে পাথর আনার চেষ্টা চলছে, যাতে সঠিক সময়ের মধ্যে রেললাইন প্রস্তুত করে রেলসেবা চালু করা যায়।
ইতোমধ্যে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতুর সন্নিকট পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার নতুন রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্র্যাক কার চলাচল শুরু করা হয়েছে। এই পুরো পথে আধুনিক রেল লাইন বসে যাওয়ায় প্রথমবারের মতো রেলের টেস্ট রান করা হচ্ছে। ৩২ কিলোমিটারের মধ্যে ৪ কিলোমিটার পাথরবিহীন এবং ২৮ কিলোমিটার পাথরসহ রেললাইন বসে গেছে। এই রেল সংযোগ ভাঙ্গার পুরনো রেললাইনের সাথে যুক্ত।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, পদ্মা রেল লিংক প্রকল্পের কাজ তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে ঢাকা থেকে মাওয়া, মাওয়া থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা এবং ভাঙ্গা থেকে যশোর। শুরুতে মাওয়া থেকে ভাঙ্গা অংশে পদ্মা সেতুতে যানবাহন চালুর দিনই ট্রেন চলাচল শুরুর পরিকল্পনা ছিল সরকারের। কিন্তু সময়মতো কাজ এগোয়নি বলে এখন পরিকল্পনা পরিবর্তন করে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত অংশ আগামী জুনে চালুর কথা রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন