শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ধর্ম দর্শন

সত্যালোকের সন্ধানে - ইসলামে আত্মিক ইবাদাতের গুরুত্ব

প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এ কে এম ফজলুর রহমান মুন্শী

নামাজ, যাকাত এবং রোজা ইত্যাদি ইবাদতসমূহ ওই শ্রেণীর ইবাদত যা জিসমানী (দৈহিক) ও মালী (সম্পদ)। যদিও মনের একাগ্রতা এগুলোর মাঝেও প্রয়োজন তবুও কিছু ইবাদত এমনও আছে যেগুলো সার্বিকভাবে অন্তরের সাথে সংযুক্ত এবং মনের গতিময়তার সাথে সম্পৃক্ত। আমরা আগে থেকেই জানি যে, ইসলামে প্রত্যেক নেক কাজই ইবাদত। এ জন্য সকল মঙ্গল কাজ চাই তা দৈহিক হোক বা সম্পদভিত্তিক হোক বা আত্মিক হোক, সবই ইবাদতের মধ্যে গণ্য।
ফুকাহাগণ শুধু দৈহিক ও সম্পদভিত্তিক ইবাদতের আলোচনা করেছেন। কিন্তু সুফিয়ায়ে কেরাম দৈহিক ও সম্পদভিত্তিক ইবাদতের সাথে আত্মিক ইবাদতের বিষয়টিও সংযুক্ত করেছেন। আসল কথা হচ্ছে এই যে, ফুকাহাগণ নিজেদের ফরজ কর্তব্য শুধু দৈহিক এবং সম্পদভিত্তিক ফরজগুলোর সাথে সীমাবদ্ধ রেখেছেন। আর সুফিয়ায়ে কেরাম সকল ফরজগুলোর এক সাথে সন্নিবেশ করেছেন। যার দ্বারা ইসলামে দেল ও রূহের পরিশুদ্ধির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ সম্পর্কে ফিকাহ্্র কোনো পৃথক কিতাবও নেই এমনকি তাসাউফের আলোচ্য সূচির মাঝে দৈহিক ও সম্পদভিত্তিক ফরজগুলোর কথাও বড় একটা আলোচিত হয়নি। তবে তাসাউফের কিতাবসমূহে যেসব আত্মিক ইবাদতের প্রতি বার বার তাগিদ প্রদান করা হয়েছে, সেসব ইবাদতকেই এলমে তাসাউফে গুরুত্ব সহকারে ব্যক্ত করা হয়েছে।
এই শ্রেণীর ইবাদতগুলোর কথা পাঞ্জেগানা ফরজ ইবাদতের পর কোরআনুলকারীমের বহু স্থানে আলোচিত হয়েছে। তাকওয়া, ইসলাম, তাওয়াক্কুল, সবর এবং শোকর ইত্যাদি ইবাদত সম্পূর্ণরূপে মানুষের কলব বা অন্তরের সাথে সংযুক্ত। এ কারণে এগুলোকে আত্মিক ইবাদত হিসেবে নামকরণ করা যায়। মূলত এই ইবাদতগুলো ইসলামের রূহ এবং আমাদের সকল  কর্মকা-ের আসল সম্পদ। যেগুলোকে পৃথক করে দিলে পাঞ্জেগানা ইবাদতগুলোও সর্বাংশে প্রাণহীন হয়ে পড়বে। একথা যদিও এখানে সঙ্গত নয়, তবুও বলা যায় যে, ফেকাহ এবং তাসাউফ একটি অপরটির থেকে পৃথক অবস্থান করছে বলেই একদিকে ইবাদতগুলোকে প্রাণহীন ও বিশুষ্ক করে দিয়েছে, অপরদিকে তাসাউফের আমল ও কর্মকা-কে লাগামহীন ও মুক্ত পথে চলতে সাহায্য করেছে।
প্রতিটি উত্তম কাজ নিষ্পন্ন করা এবং অমঙ্গলকর কাজ হতে বিরত থাকার জন্য এটাও জরুরি যে, আত্মিক অনুভূতি সচেতন হওয়া এবং অন্তরে ভালো এবং মন্দ তারতম্যের উপলব্ধি তৈরি হওয়া। চিত্তবৃত্তির একই সচেতনতার নামই হচ্ছে ‘তাকওয়া’ বা পরহেজগারী। তারপর এই অনুভূতিসম্পন্ন কাজকে কেবলমাত্র এক আল্লাহর রেজামন্দি ও খুশনুদীর জন্য নিবেদন করা এবং অন্যান্য উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হতে সঠিকভাবে মুক্ত রাখার নাম হচ্ছে ‘ইখলাস’ বা মনের একাগ্রতাসুলভ আকর্ষণসহ কর্তব্য নিষ্ঠা। তারপর কর্ম-সম্পাদনের শুধুমাত্র আল্লাহর সাহায্যের ওপর ভরসা করার নাম হচ্ছে “তাওয়াক্কুল’। এই কর্ম-সম্পাদনে যেসব বাধা-বিপত্তি প্রতিকূলতা প্রকাশ পায়, কিংবা আশার বিপরীত শেষ ফল দেখা দেয়, এমতাবস্থায় অন্তরকে মজবুত ও সুদৃঢ় রাখা এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত হতে নিরাশ না হওয়া, এমনকি বিরুদ্ধবাদীদের চক্রান্তসমূহকে আমল না দেয়ার নাম হচ্ছে সবর বা ধৈর্য। তারপর এই কর্মকা-ের দ্বারা যদি সফলতা অর্জিত হয়, শুভফল লাভ করা যায়, এর দ্বারা অহমিকা ও অহংকারের বশবর্তী না হওয়া বরং একে আল্লাহর দয়া ও অনুকম্পা মনে করা এবং দেহ প্রাণ ও জবান দ্বারা এর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের নাম হচ্ছে শোকর। এই শ্রেণীর কর্মকা-ে অধিক সচেতনতা গ্রহণ করাই হলো উত্তম মানবতার পরিচায়ক। নি¤েœ আমরা এই বিষয়াবলীর ইসলামী চিত্র সহৃদয় পাঠক ও পাঠিকাদের সামনে উপস্থাপন করতে প্রয়াস পাব।
তাকওয়া :
তাকওয়া হচ্ছে সকল ইসলামী আহকামের মূল লক্ষ্য। যদি আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সার্বিক কর্ম প্রবাহকে একটি শব্দের দ্বারা বিশ্লেষিত করতে চেষ্টা করি, তাহলে এর জন্য ‘তাকওয়া’ শব্দটিই হবে অত্যন্ত উপযুক্ত। ইসলামের প্রত্যেক কাজের মাঝে এই তাকওয়ার প্রাণসঞ্চার করা। আল কোরআনের বিভিন্ন সূরায় এই ঘোষণা করা হয়েছে যে, এই শিক্ষার দ্বারা সে ব্যক্তিই উপকৃত হবে, যে তাকওয়ার অধিকারী। ইরশাদ হচ্ছে, “এই কিতাব তাকওয়া অবলম্বনকারীদেরকে সুপথ প্রদর্শন করে।” (সূরা বাকারাহ : রুকু-১)
ইসলামী ইবাদতসমূহের আসল উদ্দেশ্যই হচ্ছে সকল স্তরে সকল অবস্থায় তাকওয়া অর্জন করা। আল কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে “হে লোকসকল! তোমরা স্বীয় প্রতিপালকের ইবাদত কর, যিনি তোমাদের ও তোমাদের পূর্ববর্তীদের পয়দা করেছেন। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।” (সূরা বাকারাহ : রুকু-৩)  
রোজার মূল উদ্দেশ্যও হচ্ছে একই। আল কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, “তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল, যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।” (সূরা বাকারাহ : রুকু-১৩) অনুরূপভাবে হজের উদ্দেশ্যও তাই। আল কোরআনে ইরশাদ ও স্থানসমূহের সম্মান করে, এ কর্ম সম্পাদন আত্মিক তাকওয়ার কারণেই। (সূরা হজ : রুকু-৪)
কোরবানির উদ্দেশ্যও এই একটিই। আল কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে “আল্লাহর নিকট কোরবানির গোশত ও রক্ত পৌঁছে না, বরং তোমাদের তাকওয়া তাঁর সন্নিধানে পৌঁছে যায়।” (সূরা হজ : রুকু-৫)
একজন মুসলমানের কপাল যা আল্লাহরই সন্নিধানে অবমানিত হয়, এর বুনিয়াদে ও তাকওয়ার ওপর হওয়া চাই।  তাই তো  মহান আল্লাহপাক ঘোষণা করেছেন : “যে ব্যক্তি স্বীয় এমারতের ভিত্তি আল্লাহর প্রতি তাকওয়ার ওপর স্থাপন করেছে।” (সূরা তওবাহ : রুকু-৪)   
হজের সফরে জীবন পরিক্রমায় পথের সম্বল ধন-দৌলত ও উপায়-উপকরণের মাঝে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাকওয়া বা পরহেজগারীর। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে “সুতরাং তোমরা দেশ ভ্রমণের সময় সম্বলসহ গমন কর, সবচেয়ে উত্তম সম্বল হচ্ছে তাকওয়া।” (সূরা বাকারাহ)
আমাদের বাহ্যিক লেবাস পোশাকের সৌন্দর্যের চেয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ সৌন্দর্য নিহিত রয়েছে ‘তাকওয়া’ সদ্ভুত লেবাসের মাঝে। আল কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে এবং তাকওয়ার লেবাস, এটাই সবচেয়ে উত্তম। (সূরা আ’রাফ : রুকু-৩)
ইসলামের যাবতীয় আখলাকী নেজাম এই তাকওয়ার ওপরই প্রতিষ্ঠিত। আল কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে “এবং ক্ষমা প্রদর্শন করা তাকওয়ার অধিক নিকটতর।” (সূরা বাকারাহ : রুকু-৩১) অপর এক আয়াতে উক্ত হয়েছে “তোমরা ইনসাফ কায়েম কর, কেননা এটাই তাকওয়ার অধিক নিকটতর।” (সূরা মায়েদাহ : রুকু-২)
অন্য এক আয়াতে আরোও ঘোষণা করা হয়েছে, “যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর এবং তাহলে এটা হবে খুবই সাহসিকতার কথা।” (সূরা আলে ইমরান : রুকু-১৯)
অপর এক আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে “এবং তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর এবং মানুষের মাঝে সন্ধি ও সোলেহ প্রতিষ্ঠা কর।” (সূরা বাকারাহ : রুকু-২৮) অপর এক আয়াতে আরোও ঘোষণা করা হয়েছে “এবং যদি উত্তম কাজ কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর, তাহলে আল্লাহপাক তোমাদের কর্মকা- সম্পর্কে সুপরিজ্ঞাত। (সূরা নিসা : রুকু-১৯)
পারলৌকিক নেয়ামতের অধিকার :
তাকওয়ার অধিকারী ব্যক্তিগণ সকল পারলৌকিক নেয়ামত সমূহের অংশীদার। এ প্রসঙ্গে আল- কোরআনের বিভিন্ন স্থানে সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। যথা :
১। “অবশ্যই মুক্তাকীগণ নেয়ামত ও সুষমাম-িত বাগানসমূহে (জান্নাতে) অবস্থান করবে।”  (সূরা তুর : রুকু-১)
২। “নিঃসন্দেহে মুক্তাকীগণ প্রশ্রবণ সমন্বিত জান্নাতসমূহে থাকবে।” (সূরা জারিয়াত : রুকু-১)
৩। “অবশ্যই মুক্তাকীগণ বাগান ও নদীসমৃদ্ধ জান্নাতে অবস্থান করবে।” (সূরা কামার : রুকু-১)
৪। “অবশ্যই মুক্তাকীগণ ছায়াসমৃদ্ধ ও প্রশ্রবণবিশিষ্ট জান্নাতে অবস্থান করবে।” (সূরা মুরসালাত : রুকু-১)
৫। “অবশ্যই মুক্তাকীদের জন্য তাদের প্রতিপালকের নিকট বাগানসমৃদ্ধ জান্নাত রয়েছে।” (সূরা নাবা : রুকু-১)
৬। “অবশ্যই মুক্তাকীদের জন্য রয়েছে উত্তম প্রত্যাবর্তন।” (সূরা সোয়াদ : রুকু-৪)
মুত্তাকীদের কামিয়াবী :
যদিও বাহ্যত প্রাথমিক পর্যায়ে তাকওয়ার অধিকারীদের অনেক মুসিবত ও বিপদাপদ দেখা দেয়, কিংবা বহু নিষিদ্ধ ও সন্দেহযুক্ত কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়তে হয় এবং বহু উত্তম বস্তু হতে বঞ্চিত হতে হয়। ঠিক একইভাবে বাহ্যিক কামিয়াবীর অনেক নাজায়েজ প্রচেষ্টা এবং কণ্টকাকীর্ণ পথ হতে বেঁচে থাকতে হয় এবং এর দ্বারা একথা বোঝা উচিত যে, তাদের মাল ও দৌলত, ইজ্জত ও সোহরত এবং পদ ও পদবি থেকে বঞ্চিত থাকার দরুন, দুনিয়ায় ক্ষীণ দৃষ্টিসম্পন্ন লোকজন ত্বরিত ও জলদি কামিয়াবীকে মূল কামিয়াবী মনে করে এবং এই ধারণাও পোষণ করে যে, দুনিয়ায় বাহ্যিক প্রতিফলনের নিরিখে কাজসমূহের ভালো এবং মন্দ ফলাফলের ফায়সালা করতে হবে। অথচ যে যতটুকু দূরে অবস্থান করে সে নিজের কর্মকা-ের ত্বরিত ফলাফল না বরং সর্বশেষ পরিণামের দিকে দৃষ্টি রাখে। প্রকৃত দূরদর্শী এবং অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তি হচ্ছে সে, যে কাজের ভালো এবং মন্দ, উত্তম এবং অধম ইত্যাদি পরিণামকে দুনিয়ার ত্বরিত উপকারিতা লাভের মাধ্যমে নির্ণয় করে না; বরং আখেরাতে চিরস্থায়ী উপকারিতার ওপর ভিত্তি করে এর ফলাফল নির্ণয় করে। এতে করে তাদের দূরদৃষ্টি যখন আখেরাতের প্রতি নিবদ্ধ থাকে তখন দুনিয়াও তাদের করায়ত্তে চলে আসে। যার ফলে দুনিয়া এবং আখেরাত উভয় জগতেই তারা কামিয়াবী ও সফলতা অর্জনে সক্ষম হয়। এ প্রসঙ্গে আল কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে :
১। সর্বশেষ পরিণাম মুক্তাকীদের জন্যই নির্ধারিত। (সূরা আরাফ : রুকু-১৫)
২। অবশ্যই পরিণাম ফল মুত্তাকীদের জন্যই নির্ধারিত। (সূরা হুদ : রুকু-৪)
৩। এবং আখেরাতে তোমার প্রতিপালকের নিকট মুত্তাকীদের জন্য কামিয়াবী সুনিশ্চিত। (সূরা যুখরুফ : রুকু-২)
৪। তাকওয়ার জন্যই পরিণাম ফল নিরূপিত হয়। (সূরা ত্বহা : রুকু-৮)
আল্লাহপাকের মাহবুব :
তাকওয়া ও পরহেজগারীর অধিকারী ব্যক্তিগণই আল্লাহপাকের প্রকৃত মাহবুব। এই মুত্তাকী বান্দাহগণ আল্লাহপাকের মহব্বত ও বন্ধুত্ব লাভের উপযুক্ত, যখন তারা যাবতীয় কাজকর্মে আল্লাহপাকের মর্জি এবং সন্তুষ্টির প্রতি দৃষ্টি রাখে এবং নিজেদের কোনো কাজের বিনিময়ে কোনো মানুষের প্রশংসা অথবা পুরস্কার অথবা বন্ধুত্ব লাভজনক। কোন কিছু প্রত্যাশা করে না তখন আল্লাহপাক তাদেরকে নিজের তরফ হতে মহব্বত এবং পুরস্কার দ্বারা বিভুষিত করেন। এতে করে এরই প্রভাব ও প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে আল্লাহপাকের বান্দাহগণ এসব লোকের প্রতি বিশ্বাস ও ভালোবাসা স্থাপন করে এবং তাদের প্রতি আন্তরিক আকর্ষণ ও পরিবর্ধিত হয়। এ প্রসঙ্গে আল কোরআনে সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করা হয়েছে :
১। তাকওয়ার অধিকারী ব্যক্তিগণ আল্লাহপাকের বন্ধু। (সূরা আনফাল : রুকু-৪)
২। অবশ্যই আল্লাহপাক মুত্তাকীদের ভালোবাসেন। (সূরা আলে  ইমরান :  রুকু-৮)
৩। নিশ্চয়ই আল্লাহপাক তাকওয়ার অধিকারী ব্যক্তিগণকে ভালোবাসেন। (সূরা তাওবাহ : রুকু-১)।
৪। এবং আল্লাহপাক প্রকৃতই মুত্তাকীদের বন্ধু। (সূরা খাছিয়া : রুকু-২) [অসমাপ্ত]

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন