নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় এক নিরীহ যুবককে আটক করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার খবর শুনে মারা গেছে তার মা। ওই যুবকের বিরুদ্ধে কোনো মামলার ওয়ারেন্ট বা অভিযোগ ছিল না। পুলিশের এ অনৈতিক কাণ্ড প্রমাণ হওয়ায় জড়িত এসআই সাব্বির ও এএসআই রুহুলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রোববার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে নিরীহ মানুষকে হয়রানির অভিযোগে ওই দু’জন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হলেও জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক সাজ্জাদ রোমান জানিয়েছেন মূলত প্রশাসনিক কারণেই দু’জনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রূপগঞ্জের কাঞ্চন পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহিরুল ইসলাম জানান, ২৬ জানুয়ারি শনিবার রাতে রূপগঞ্জের কাঞ্চন পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সাব্বির ও এএসআই রুহুল স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে হানা দেয়। সেখানে জহিরুল ও তার চাচাতো ভাই তুহিন বসে চা পান করছিল। মোটরসাইকেলে করে সাদা পোশাকে দুই পুলিশ তুহিনকে টেনে মোটরসাইকেলে তুলে নেন।
পরবর্তীতে স্থানীয় জমজম হোটেলে নিয়ে আটকে রাখেন। সেখান থেকে পুলিশ তাকে চাপ দেয় বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে আসতে। খবর পেয়ে জহিরুলসহ অন্যরাও হাজির হন।
কাউন্সিলর জহিরুল বলেন, তুহিনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ বা মামলা নেই। সে একেবারেই নিরপরাধ ছেলে। তাকে আটকে রেখে টাকা দাবি করা হয়। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি অভিযোগ জানতে চাইলে কোনো জবাব দিতে পারেনি পুলিশ। খবরটি বাড়িতে পৌঁছালে তুহিনের মা রেখা বেগম স্ট্রোক করেন। তাকে দ্রুত স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান। মারা যাওয়ার পরে তুহিনকে ছেড়ে দেওয়ার সময়েও পাঁচ হাজার টাকা জোর করে ছিনিয়ে নেয় পুলিশের ওই দুই সদস্য। তাদের এ ধরনের আচরণ বোধগম্য নয়। তার মতো ছেলেকে এভাবে ফাঁসিয়ে দেওয়া কিংবা পুলিশ সাদা পোশাকে পিস্তলের ভয় দেখিয়ে তুলে নিয়ে যাবে সেটা খুবই অশোভনীয়। সেটা সহ্য করতে না পেরেই তার মা মারা গেছেন।
তিনি আরো জানান, রোববার নারায়ণগঞ্জ থেকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা লোকজনদের কাছ থেকে খবর নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। আমরা মামলা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশের অনুরোধে মামলার ঝামেলায় যাইনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন