ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে ভারতীয় সন্দেহে এক বাড়ি থেকে গরু উদ্ধার করে ক্যাম্পে আনার সময় প্রতিরোধের মুখে পড়ে বিজিবি। বিজিবি’র ওপর সংঘবদ্ধ আক্রমণের মুখে গুলি চালালে ৩ গ্রামবাসী নিহত ও ২ বিজিবি সদস্যসহ আহত হয়েছেন ২৮ জন।
বিজিবি ঠাকুরগাঁও সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সামসুল আরেফিন বলেন, কিছুদিন ধরে সীমান্ত হত্যা কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ সীমান্তে চোরাচালান ও অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রশ্নে কঠোর অবস্থান নেয়। তারই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার দুপুরে গোপন খবর সূত্রে বিজিবি’র একটি টহল দল চাঁদগাঁও বহরমপুরে হাবিবুর রহমানের বাড়ি থেকে ২টি ভারতীয় গরু উদ্ধার করে বেতনা ক্যাম্পে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে ঐ বাড়ির নারী সদস্যসহ এলাকার একটি সংঘবদ্ধ দল এসময় বিজিবি’র উপর আক্রমণ করে। আক্রমণে দু’জন বিজিবি সদস্য আহত হলে টহল দলের কমান্ডার জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীর কাজে বাধা না দেয়ার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু তারপরও আক্রমণকারীরা শান্ত না হয়ে পুনরায় আক্রমণে উদ্যত হলে বিজিবি বাধ্য হয়ে গুলি চালায়। এ সময় প্রায় ৩০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে গুরুতর গুলিবিদ্ধ ১৪ জনকে দ্রুত হরিপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার ২ জনকে মৃত ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে সেখানেই মারা যায় গুলিবিদ্ধ এক কিশোর। বাকি ১২ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেলে পাঠানো হয়। বাকি আহতরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেন।
হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুজ্জামান জানান, নিহতরা হলেন উপজেলার রুহিয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে নবাব (৩৫) ও একই গ্রামের মৃত জহিরুদ্দিনের ছেলে সাদেক (৪৫)। পরে হরিপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিহত হয় গুলিবিদ্ধ কিশোর জয়নুল (১২)। জয়নুল একই উপজেলার বহরমপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। এদিকে আহত ও নিহতদের পরিবারের দাবি নিলামে কেনা ছিল বিজিবি’র উদ্ধার করা গরুগুলো যদিও বিজিবি সেটা অস্বীকার করে। যে বাড়ি থেকে গরুগুলো উদ্ধার করা হয়, সেই হবিবর রহমানের ছেলে ইয়াকুব আলীর অভিযোগ, অন্যায়ভাবে এই গরু উদ্ধারের নামে বিজিবি গুলি চালিয়েছে।
তবে ৫০ বিজিবি’র অধিনায়ক লে কর্নেল তুহীন মোহম্মদ মাসুদ বলেন, আমরা সীমান্তে অনুপ্রবেশ, মাদক ও গরুচালান প্রশ্নে কঠোর অবস্থানে আছি। ঘটনার তদন্ত চলছে, রিপোর্ট অনুযায়ী যারই অপরাধ থাকুক সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন