শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বিডিআর বিদ্রোহে সেনা অভিযান হলে গৃহযুদ্ধ লাগত

পিলখানা হত্যাকান্ডের প্রচার ও অপপ্রচার শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণে সেনা অভিযান চালানো হলে সারাদেশে গৃহযুদ্ধ লেগে যেত। এ ষড়যন্ত্রের মূল উদ্দেশ্য ছিল নতুন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা। গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘পিলখানা হত্যাকান্ডের প্রচার ও অপপ্রচার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বোয়াফ) এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সংগঠনটি মনে করে, পিলখানা হত্যাকান্ড এদেশের একটি কলঙ্কিত অধ্যায়। কিন্তু সেটিকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা নোংরা রাজনীতির আর ব্যক্তি স্বার্থ প্রতীয়মান। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রæয়ারি পিলখানায় জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞটি ঘটানো হয়। এতে ৫৭ জন উচ্চ পর্যায়ে সেনা অফিসারসহ ৭৪ জন নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে নিহত হন। এ ঘটনার মাধ্যমে সারাদেশে বিদ্রোহ ছড়িয়ে দিয়ে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছিল একটি মহল। এ ষড়যন্ত্রের মূল উদ্দেশ্য ছিল-নতুন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা।
সভায় নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলী সিকদার বলেন, ২০০ বছরের পুরানো বাহিনীতে হঠাৎ করেই বিদ্রোহ হয়নি। এটি পূর্বপরিকল্পিত। ষড়যন্ত্র ছাড়া এতো বড় হত্যাকান্ড হতে পারে না। অনেকে বলেন-সেনা অভিযান হলে এতো হত্যাযজ্ঞ হতো না। এটি ঠিক নয়। কারণ ঘটনার দিন এক ঘণ্টার মধ্যে সেনা সদস্যদের হত্যা করা হয়। এছাড়া বিদ্রোহীদের কাছে মটার সেলসহ ভারি অস্ত্র ও গোলাবারুদ ছিল। যদি সেনা অভিযান চালানো হতো তাহলে বিদ্রোহীরা নিজেদের বাচাতে হামলা করতো। সারাদেশে ৪৮টি ব্যাটিলিয়নে সংঘর্ষ ছড়িয়ে যেতে। এতে সাধারণ লোকজনের হতাহতের সংখ্যা বাড়তো। ওই ঘটনার পর ৪০ জন সেনা সদস্য জীবিত বেঁচে আসে। তারাও মারা যেতেন।
অপর এক নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশিদ বলেন, এ ধরনের হত্যাকান্ড সব সময় রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়। যেমনটা হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। এটি কারা ঘটিয়ে থাকে? বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিশ্বের কট্টর ও মৌলবাদীরা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। আমাদের এখানে যে ঘটনা ঘটেছে তাতে কট্টর ও স্বাধীনতা বিরোধীদের মদদ রয়েছে। অনেকে বলে থাকে সেনা অভিযান না করা ভুল সিন্ধান্ত ছিল। সেনা অভিযান করলে এতো হত্যাযজ্ঞ হত না। তাদের এ বক্তব্য ঠিক নয়। এটি একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অপপ্রচার বলে মনে করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণ ছিল চমকপ্রদক। বিশ্বে এটি প্রশংসিত হয়েছে। কারণ বল প্রয়োগ করলে নিরীহ মানুষ মারা যেত। এটি হলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল হতো। এতে করে দেশ অশান্ত হয়ে উঠতো। দেশে গৃহযুদ্ধ লেগে যেত। তাই সেনা অভিযান না চালানোর ওই সিদ্ধান্ত ছিল সঠিক। যার কারণে বাংলাদেশ এখন শান্তিপূর্ণ আছে। আর এ কারণেই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীরা অন্তরজ্বালায় ভুগছে। এ জ্বালা থেকেই তারা অপপ্রচারে লিপ্ত আছে।
বোয়াফের সিনিয়র সদস্য তুলি হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময়। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ পাঠ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস। উপস্থিত ছিলেন প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান ও সাংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছির উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
Zohurul Islam ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৮ এএম says : 0
এখন দেশে নাটক বন্ধ করতেও বিদ্রোহ হয়।তাহলে তো শেখ হাসিনা অস্কার পাবেন।আমরা তো অনেক বড় নাট্যকার পেয়েছি আমাদের গর্ব করা উচিত।আর অভিনয়ের জন্য ভারতের, র,জাতীয় পুরুষকার দেওয়া হোক।
Total Reply(0)
Ali Akbar ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
যারা এই কথা বলে মূলত তারা ৫৭ জন হত্যার সাথে দায়ী হওয়া উচিত । পিলখানা এত বড় এলাকা নই যে তা ঘেরাও করে এই অপরেশন করতে ই কোন সমস্যা হত । মোবাইল লাইন বন্ধ করে ঝটিকা আক্রমন করলেই এত সময় ধরে হত্যাযজ্ঞ করতে পারতো না । যা সময় কালক্ষেপনে এত লাশ..
Total Reply(0)
Kazi Manik ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
এটা যারা বলে তারা এর সাথে যোগসূত্র ছিল।
Total Reply(0)
Md Rahim ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
এই সমস্ত লোকদের শান্তির জন্য কথা বলাই জাতীয় পুরুস্কার দেওয়া হোক
Total Reply(0)
Imran Ahmed ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
তখন সেনা অভিযান হলে তো দেশ প্রেমিক সেনা অফিসার রা বেঁচে যেতো,আর তারা বেঁচে গেলে হাসিনা কি করে ভোট চুরি করতো আর কি করে অবৈধ ভাবে ক্ষমতা ধরে রাখতো..?
Total Reply(0)
Shepon Hussain ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৪০ এএম says : 0
বিডিআর বিদ্রোহে সেনা অভিযান হলে গৃহযুদ্ধ লাগত। এ কথাও কি ভারতীয় 'র, এ শিখাইয়া দিছে?
Total Reply(0)
Shamim Ansary ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৪ এএম says : 0
বাংলাদেশের মানুষ জাতির এ মহা কলঙ্কময় ঘটনার নেপথ্যের খলনায়কদের মুখোশ উন্মোচন দেখতে চায়
Total Reply(0)
Arif ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৪ এএম says : 0
খুব কষ্ট লাগে নিহত বীর সেনাদের পরিবার এবং প্রিয়জনদের জন্য । তাদের আত্না শান্তিতে থাকুক । অনেক কিছুরই সুরাহা হলো না এটা খুবই দু:খজনক । আসল মাষ্টারমাইন্ডরা কেও ধরা পড়লো না । আফসোস ।
Total Reply(0)
Asif Rajib ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৪ এএম says : 0
শহীদদের স্বজনদের আল্লাহ্পাক যেন শোক সইবার শক্তি দান করেন।
Total Reply(0)
Shahidul Islam ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৫ এএম says : 0
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি দরবার শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল আটটায়। কিন্তু কেন দরবার এক ঘণ্টা পিছিয়ে সকাল নয়টায় করা হয়, তা আজও অজানা। ঘটনার সময় দরবারে থাকা একটি ভিডিও ক্যামেরার কথা সাংবাদিকদের বলেছিলেন তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। কিন্তু ক্যামেরাটি উদ্ধার হয়নি। বিদ্রোহের সময় প্রথম যে অস্ত্রটি নিয়ে সিপাহি মঈন দরবারে এসেছিল, তা শনাক্ত হয়নি। বিদ্রোহের সময় সেনা সদস্যরা পিলখানায় এসে গুলি ছুড়েছিলেন বলে সেনাবাহিনীর তদন্তে বলা হয়েছিল। কিন্তু মামলার তদন্তে তা আসেনি। তৎকালীন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল মইন উ আহমেদ সাক্ষ্য দেননি। অনেক সেনা কর্মকর্তা ঘটনার পর গণমাধ্যমের সামনে নানা বিষয়ে কথা বললেও তাদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি।
Total Reply(0)
Shahidul Islam ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৫ এএম says : 0
২৫ ফেব্রুয়ারী র সেই নৃশংস হত্যা জগ্যের প্রত্যক্ষ অথবা পরক্ষ ভাবে জড়িত প্রত্যেকের বিচার চাই। এতগুলো পরিবার কে যারা এতিম করেছে তাদের ক্ষমা করোনা স্রস্টা । বীর সেনানিরা বিশ্বাস রাখ তোমাদের র্কতব্য নিষ্ঠা আর দেশ প্রেম অনুকরনিয় হয়ে থাকবে।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন