অসাম্প্রদায়িকতার চেতনায় সাধক পুরুষ লালন ফকিরের মানবতার বাণী ছড়িয়ে ফরিদপুর শহরের মহিম ইনিস্টিটিউশনের মাঠে শেষ হলো তিন দিনের চতুর্থ “লালন বাউল জাতীয় উৎসব ২০১৯”। ফরিদপুর লালন পরিষদ আয়োজিত এ উৎসবে দেশের অন্তত ৫০টি জেলা থেকে এসেছিলেন বাউল শিল্পীরা। ০১ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এ উৎসবের সমাপ্তি ঘটে ০৩ মার্চ রোববার মধ্য রাত পেরিয়ে লালন ও বাউল গানের আয়োজনের মধ্য দিয়ে। বিদায় বেলায় বেদনার করুণ সুর ধ্বনিত হয় বাউল সাধকদের হৃদয়ে।
“এসো মিলি প্রাণের মেলায়/ সুর, লয়, তাল ভাবের খেলায়/ ভেতরে বাহিরে এক করে/ সব অশুভকে জানাই বিদায়” মর্মবাণীকে বুকে ধারণ করে সকল অশুভ’র বিনাশ কামনায় অসাম্প্রদায়িক চেতনায় লালনের বাণী ছড়িয়ে ভাংলো লালন ভক্ত অনুরাগীদের মিলন মেলা। এবারের প্রতিপাদ্য ছিল “গুরুশিষ্য পরম্পরা, বিশ্বগ্রাম পথচলা”।
প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত উৎসব মঞ্চে পরিবেশন করা হবে লালন গান ও বাণী। যা উপভোগ করেন হাজার হাজার বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষ। সচেতন দর্শকদের দাবী, এ আয়োজন থেকে উপকৃত হয়েছে ফরিদপুর। স্যাটেলাইটের প্রভাবে হুমকীর মুখে থাকা দেশীয় সংস্তৃতিকে জাগ্রত করছে বিশেষ ভুমিকা রাখতে পারে এ ধরণের আয়োজন। তাই আগামীতেও বেশী বেশী এধরণের আয়োজন করার দাবী তাদের।
দেশ বিদেশী সাধক বাউল ও ভক্তানুরাগীদের মিলন মেলার শেষ দিনে আবেগে আপ্লুত ছিল বাউল সাধকেরা। তাদের বুকের মধ্যে ধ্বনিত হয় বিষাদের সুর। তারা মনে করেন, সফল এ সমাবেশ থেকে উপকৃত হবে সমাজ, মানুষ। বাউল পাগলা বাবলু জানান, বিভিন্ন জেলা থেকে জড়ো হওয়া বাউল সাধকেরা লালনের ভাব সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সুপথে চলার আহ্বান জানান।
আয়োজকদের দাবী, এবারের বাউল উৎসব ছিল সম্পুর্ণ ধুমপানমুক্ত, যা একটা বড় অর্জন। উৎসব কমিটির সদস্য মামুনার রশীদ কুটি জানান, বাউল বা লালন গান যে সমাজ পরিবর্তনে ভুমিকা রাখতে পারে এটা তারই একটা উদাহারণ। অশুভ শক্তির বিনাশ আর সত্য প্রতিষ্ঠায় মানুষের মন ও মণণের পরিবর্তনে আগামীতেও আরো বড় পরিসরে এ আয়োজন করা হবে বলেও জানান আয়োজকরা।
এর আগে শুক্রবার সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ফরিদপুর শহরের মহিম ইনিস্টিটিউশনের মাঠে এসে জড়ো হয় লালন দেড় শতাধিক বাউল শিল্পীসহ তিন শতাধিক কলাকুশলী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন