শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিয়ানীবাজার ক্যান্সার ও জেনারেল হাসপাতালে হামলা, ভাংচুর

বিয়ানীবাজার, (সিলেট) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০১৯, ৫:০০ পিএম

রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সিলেটের বিয়ানীবাজার ক্যান্সার ও জেনারেল হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে রোগীর স্বজনেরা। এ সময় তারা হাসপাতালের মুল্যাবান জিনিসপত্রও ভাংচুর করে। হামলায় হাসপাতালের নার্সসহ কয়েকজন আহত হলেও বাকীরা নিরাপদে গিয়ে রক্ষা পান। খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মৃত আজিম উদ্দিনের লাশ তার স্বজনেরা বাড়ী নিয়ে গেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গত ২ এপ্রিল মাথিউরা ইউনিয়নের আজিম উদ্দিন (৬৫) স্বাস কষ্ট রোগ নিয়ে বিয়ানীবাজার ক্যান্সার ও জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে মারা যান। আজিম উদ্দিনের জামাতা যুবলীগ নেতা আব্দুল ওয়াহিদ টিপু বলেন, ২ এপ্রিল তার শশুড়কে বিয়ানীবাজার ক্যান্সার ও জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করান। আজিম উদ্দিন স্বাস কষ্টে ভূগছিলেন উল্লেখ করে টিপু বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভালো চিকিৎসা দেওয়ার আশ^াস দিয়ে তাকে ভর্তি করান। টিপু অভিযোগ করে বলেন, তার শশুড় চিকিৎসা নেয়া কালীন সময়ে তার নজরে আসে এই হাসপাতালে কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই। তাই তিনি এই হাসপাতাল থেকে তার শশুড়কে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য ছাড়পত্র চান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঢাকা থেকে ভালো চিকিৎসক এসেছেন এ তথ্য দিয়ে তাকে জানান, তারা ওই চিকিৎসকের দেওয়া ব্যবস্থাপত্র দিয়েই চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন। টিপু অভিযোগ করে বলেন, যে চিকিৎসক দিয়ে তার শশুড়কে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে তিনি এই রোগের চিকিৎসক নয় তিনি শিশু রোগ চিকিৎসক।
এ প্রসঙ্গে বিয়ানীবাজার পৌরসভার মেয়র আব্দুস শুকুর জানান, বিয়ানীবাজার ক্যান্সার হাসপাতালে রোগী মৃত্যুর খবর শুনে তিনি এখানে এসেছেন। তিনি তাদের ব্যবস্থাপত্র ও সংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে জানান, এখানে চিকিৎসা ব্যবস্থায় ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। তিনি বলেন, সঠিক চিকিৎসার অভাবে আজিম উদ্দিনের মৃত্যু হয়েছে। মেয়র অভিযোগ করে বলেন, একটি হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমান চিকিৎসা ব্যবস্থা ও চিকিৎসক না থাকার পরও কিভাবে এই হাসপাতালে রোগী ভর্তি করে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। মেয়রের মতে, প্রবাসীদের অর্থে পরিচালিত এই হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থায় প্রচুর ফারাক রয়েছে। তিনি বিষয়টি তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।
বিয়ানীবাজার ক্যান্সার ও জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ কবির উদ্দিন বলেন, গত ২ এপ্রিল তিনি আজিম উদ্দিনকে এই হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি বলেন, ভর্তিকালীন সময়ে রোগীর অবস্থা ভালো ছিলনা। তারপরও রোগীর আত্মীয় স্বজনের চাপে তাকে এখানে ভর্তি করা হয় এবং তিনি রোগীকে চিকিৎসা ও ব্যবস্থা পত্র দিয়ে ছুটিতে চলে যান। পরে ঢাকা থেকে আসা একজন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ তার ব্যবস্থাপত্র দেখে তিনিও কিছু ঔষধ যুক্ত করে দেন। তিনি বলেন, গত রাতে রোগীর অবস্থা ভালো দেখলে তাকে নিয়ে যেতে বলেন। কিন্তুু রোগীর আত্মীয় স্বজনেরা নিয়ে যান নি। সকালে যখন রোগীর অবস্থা খারাপ হয় তখন আমরা ওসমানীতে রেফার্ড করি। কিন্তুু কেউ তাকে ওসমানীতে নিয়ে যাননি। তাই রোগী এই হাসপাতালে মারা যান।
ডাঃ কবিরের মতে, বিয়ানীবাজার ক্যান্সার ও জেনারেল হাসপাতালে কোন রোগীকে জরুরী সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা নাই। এ রকম কোন সামগ্রীও এখানে নেই। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার সরঞ্জাম দিয়েই তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এ অবস্থায় এখানে রোগী কেন ভর্তি করে চিকিৎসা দিচ্ছেন এ প্রশ্নের কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেন নাই।
এদিকে হাসপাতালে হামলা ও ভাংচুরের খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার পৌরসভার মেয়র ছাড়াও মাথিউরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিহাব উদ্দিন, ওসি অবনী শংকর করসহ সমাজের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি সামাল দেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Ramim ahmed ৬ এপ্রিল, ২০১৯, ৩:৫০ পিএম says : 0
বছর খানেক আগে বিয়ানীবাজার উপজেলার ১০নং মুড়িয়া ইউনিয়নের বড়দেশ গ্রামের পেইন্ট মিস্ত্রী জামিল আহমদ তার অসুস্থ বাবাকে নিয়ে উক্ত হাসপাতালে যান বাকিটা ইতিহাস
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন