নারীকে সকল ক্ষেত্রেই কাজ করতে হয়। এরমধ্যে নিজ ঘর ও স্বামীর ঘরের গৃহস্থালি সব কাজই মেয়েরা করে থাকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, সমাজে গৃহস্থালি কাজকে শ্রম হিসেবে গণ্য করা হয় না। ফলে প্রচুর কাজ করলেও নারীরা দারিদ্র্য, অপুষ্টি, সহিংসতা ও স্বাস্থ্যহীনতাসহ নানা সমস্যার মুখোমুখি হয়। তারপরও সমাজে তাদের সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। এক্ষেত্রে নারী সংগঠনসহ সরকারকে এগিয়ে এসে তাদের গৃহস্থালি সেবামূলক কাজকেই শ্রম হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে। বাস্তবতা, প্রভাব, বিদ্যমান আইন ও নীতিমালা এবং নারীর ক্ষমতায়নে কয়েকটি প্রস্তাবনা হচ্ছে: ১. ইারীরা ভোর থেকে রাত পর্যন্ত গৃহস্থালি কাজ করে। এরমধ্যে ক্ষেত্র বিশেষে পরিবারে থাকা ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন, স্বামী, পিতা-মাতা, শ্বশুড়-শাশুড়ির যতœ নিয়ে থাকে। এটাকে শ্রম হিসেবে মূল্যায়ন করে আইন করতে হবে। ২. গৃহস্থালি সেবামূলক কাজকে আইনের মাধ্যমে শ্রম হিসেবে ঘোষণা ও শিগগিরই তা বাস্তবায়ন করা। ৩. শ্বশুড় বাড়িতে নারীকে নিপীড়নের বিষয়ে কঠোর আইন করা। ৪. স্বামী কর্তৃক স্ত্রী নির্যাতন আইনের যথাযথ প্রয়োগ করা। ৫. গৃহস্থালি কাজ ও সন্তান পালনে স্বামী-স্ত্রীর দায়িত্ব নির্ধারণ করে দেয়া। ৬. পরিবার, কর্মসংস্থান, সন্তান ও দেশ গঠনের জন্য নারীকে উচ্চ শিক্ষা দিতে হবে। ৭. বিবাহের সময় মোহরানা আদায়ের ব্যাপারে নারীকে সচেতন ও ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে। ৮. নারীর মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। ৯. নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে হবে। ১০. সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ১১. নারীর অধিকার সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করতে হবে। ১২. নারী সংগঠনগুলো আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থার গবেষণায় নারীর কাজের কর্মঘণ্টা, হিসাব-নিকাশ বের হলেও সরকারের পক্ষ থেকে নারীর গৃহস্থালির কাজের হিসাবকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া এবং মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। নারীর ক্ষমতায়নে নারীর গৃহস্থালি সেবামূলক কাজকে স্বীকৃতি দেয়ার দাবি নারী সংগঠনসহ সকল নারীর।
লেখক: সাংবাদিক
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন