তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও একে পার্টির নেতা রজব তায়্যিব এরদোগান সোমবার অভিযোগ করেছেন, ইস্তাম্বুলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ভোট জালিয়াতি হয়েছে। তিনি দাবি করেন, তার দল নির্বাচনে অনিয়মের ঘটনা উন্মোচিত করতে সক্ষম হয়েছে। ১ কোটি জনসংখ্যার শহর ইস্তাম্বুলে শীর্ষ দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান ১৫ হাজারেরও কম। তুরস্কের হাই ইলেকশন বোর্ডের এক বৈঠকের পর একে পার্টির নির্বাচনি বোর্ডের প্রতিনিধি রজব ওজেল সাংবাদিকদের জানান, তার বোর্ড ৩৯টি জেলার মধ্যে শুধু ২১টি জেলার ৫১টি ব্যালট বক্সের ভোট পুনর্গণনার ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছে। প্রতিটি ব্যালট বক্সে কয়েকশ’ করে ভোট রয়েছে। ওজেল জানান, শহরের বুয়ুকচেকমেস জেলার সবগুলো ভোট পুনর্গণনার আহ্বান জানিয়েছে একে পার্টি। তবে এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন্ও সিদ্ধান্ত নেয়নি বোর্ড। অন্যান্য জেলাগুলোতে ভোট পুনর্গণনা চলছে। অপরদিকে, ইস্তাম্বুলের ৩১ জেলার ভোট পুনর্গণনা করতে ক্ষমতাসীন দল একে পার্টির পক্ষ থেকে করা অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে তুরস্কের উচ্চ পর্যাযের নির্বাচনি কর্তৃপক্ষ (হাই ইলেকশন বোর্ড)। মঙ্গলবার বোর্ডের এক সদস্য এ তথ্য জানিয়েছেন। তুরস্কে গত ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত স্থানীয় নির্বাচনে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের দল ক্ষমতাসীন একে পার্টি। রাজধানী আঙ্কারার পাশাপাশি দেশের বৃহত্তম শহর ও উসমানীয় খিলাফতের রাজধানী ইস্তাম্বুলেও পরাজিত হয়েছেন রক্ষণশীল একে পার্টির প্রার্থীরা। দুই শহরেই বিজয়ী হয়েছে বিরোধী দল কামাল আতাতুর্কের সিএইচপি। ইস্তাম্বুলে সামান্য ব্যবধানে জয় পেয়েছেন বিরোধীরা। তৃতীয় বৃহত্তম শহর ইজমিরেও মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছে সিএইচপি। প্রায় ১৬ বছর ধরে তুরস্কের ক্ষমতায় থাকা এরদোগানের একে পার্টির জন্য এ ফল স্পষ্টতই অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে। ইস্তাম্বুলে বিরোধীরা সামান্য ব্যবধানে জয় পাওয়ায় সেখানে বিভিন্ন পর্যায়ে ভোট পুনর্গণনার অনুরোধ জানাচ্ছে একে পার্টি। উল্লেখ্য, অর্থনৈতিক সংকটের সময় এই নির্বাচনকে এরদোগানের প্রতি জনগণের গণভোট হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল। ফলে স্থানীয় নির্বাচন হলেও জাতীয় পর্যায়ের আমেজ ছিল। বিভিন্ন স্থানে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন এরদোগান। বিরোধীরাও এবারের নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিল। সেই চ্যালেঞ্জে দেশের সবচেয়ে বড় তিন শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয় তারা। ইস্তাম্বুলে একে পার্টির প্রার্থী ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম। তিনিও এরদোগানের এক সময়ের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আসনটিতে বিজয় নিশ্চিতে ব্যর্থ হন। রয়টার্স, আনাদোলু।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন