না কোনো সমঝোতা নয়, বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের (বাহফে) নির্বাচন ঠিকই হচ্ছে। একটি পক্ষের অনড় ভূমিকার কারণেই শেষ পর্যন্ত ভোটযুদ্ধে নামছেন হকি সংগঠকরা। মঙ্গলবার নিশ্চিত হওয়া গেছে ২৯ এপ্রিলই অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাহফে’র নির্বাচন। এই নির্বাচনকে সামনে রেখে মঙ্গলবারই ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এদিন সাজেদ-সাদেক পরিষদের কেউই মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। তাদের দেয়া ৩০ জনের প্যানেলের শুধু একজনই শিশু কিশোর সংঘের কাউন্সিলর তারেক এ আদেল বাদ পড়েছেন সেকান্দার হায়াতের মামলার ভিত্তিতে। ফলে বর্তমানে ২৮ পদের বিপরীতে বাহফে নির্বাচনে তাদের রয়েছে ২৯ প্রার্থী। বিপরীতে ‘বাঁচও হকি’ শ্লোগানে রশিদ-সাঈদ পরিষদের ৩৭ জনের প্যানেল জমা হলেও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন এই সংখ্যা দাঁড়ায় ২৭ জনে। আরো একজনকে নিয়ে শঙ্কা থেকে গেছে। তিনি হলেন, গোপালগঞ্জের রতন কুমার রায়। অপরিচিত একজন এসে তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পত্র দিয়ে গেছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এএসসি) টাওয়ারস্থ নির্বাচন কমিশনে। এই পত্র পাওয়ার পর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রিটার্নিং অফিসার বেশ ক’বার রতন কুমারকে ফোন দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাই তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিতে পারেননি রিটানির্ং অফিসার এসএম কবিরুল হাসান।
রশিদ-সাঈদ পরিষদের ৯ জন দুই পদে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও প্রত্যাহারের শেষ দিন একটি পদ থেকে তারা সরে দাঁড়ান। সারওয়ার হোসেন সহ-সভাপতি পদ রেখে সদস্যপদ, মাহমুদ রিবন সহ-সভাপতি পদ রেখে সদস্যপদ, নুরে আলম খোকন সহ- সভাপতি পদ রেখে সদস্য পদ, আব্দুর রশিদ সিকদার সহ-সভাপতি পদ রেখে সাধারণ সম্পাদক পদ, আলহাজ্ব একেএম মমিনুল হক সাঈদ সাধারণ সম্পাদক পদ ঠিক রেখে সহ-সভাপতি পদ প্রত্যাহার করে নেন। এছাড়া বদরুল ইসলাম দীপু যুগ্ম-সম্পাদক পদ প্রত্যাহার করে সদস্য পদ ঠিক রাখেন। কামরুল ইসলাম কিসমত ও আনোয়ারা সরকার সদস্যপদ প্রত্যাহার করে যুগ্ম-সম্পাদ পদে এবং হাজী মোহাম্মদ হুমায়ুন সদস্যপদ প্রত্যাহার করে কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচনে টিকে রইলেন। এই ৯ জনের বাইরে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিজেদের নির্বাচন থেকে একেবারে সরিয়ে নিলেন সহ-সভাপতি প্রার্থী প্রতাপ শঙ্কর হাজরা ও সদস্য পদে হাবিবুর রহমান এবং রতন কুমার রায় (যদিও তার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়নি)।
রিটার্নিং অফিসার কবিরুল হাসান বলেন, ‘মোট ১২ জন নিজেদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন। এদের মধ্যে ৩ জন প্রার্থীতা পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। অর্থাৎ তারা তিনজন কোন পদেই আর লড়ছেন না। ২৯ এপ্রিল নির্বাচন হচ্ছে এটি এখন বলাই যায়। একটা পক্ষের ২৯ জন রয়েছেন। অন্যপক্ষের রয়েছেন ২৭ জন। এর মাঝে রতন নামে একজনের ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’
এদিকে রশিদ-সাঈদ প্যানেলের যুগ্ম-সম্পাদক প্রার্থী কামরুল ইসলাম কিসমত বলেন,‘আশা করছি প্রতিদ্বন্দ্বিতামুলক নির্বাচন হবে। এতে ক্লাব প্রতিনিধি, জেলার কাউন্সিলর ও ফোরাম থেকে সাড়া পাবো আমরা। সুষ্ঠু এবং প্রভাবমুক্ত নির্বাচন হলে আমরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদি। ভোটাররা যাতে নিদ্বিধায়, নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারেন সেটিই চাওয়া থাকবে নির্বাচন কমিশনারের কাছে। ভোট কেন্দ্রে মোবাইল ও ক্যামেরা ব্যবহারের উপর বিধি-নিষেধের বিষয়টি শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।’
নির্বাচনে কেন পুর্ণ প্যানেল দিতে পারেননি? এমন প্রশ্নের উত্তরে কিসমত বলেন, ‘জেলার কাউন্সিলরদের বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে। উপরমহলের চাপে কয়েকজন তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বিধায় আমাদের পুর্ণ প্যানেল হয়নি। ক্ষমতার অপব্যবহার করছে একটি মহল। তারপরও আমরা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদি।’
এ বিষয়ে সাজেদ-সাদেক পরিষদের বক্তব্য, ‘অপবাদ দিতে চাইলে তো দেয়াই যায়। তারা এখন পূর্ন প্যানেল দিতে না পারায় যা খুশি তাই বলছে। আসন্ন নির্বাচনে তাদের পরাজয় নিশ্চিত ভেবে আমাদের দিকে কাদা ছুঁড়ছে। কাউন্সিলরা ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দিবেন।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন