রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেলাধুলা

১৫ ঘন্টা আগে কেন্দ্র বদল!

বহুল আলোচিত হকির নির্বাচন সোমবার

জাহেদ খোকন | প্রকাশের সময় : ২৮ এপ্রিল, ২০১৯, ৯:৪৯ পিএম | আপডেট : ১০:০১ পিএম, ২৮ এপ্রিল, ২০১৯

বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের (বাহফে) বহুল আলোচিত নির্বাচন সোমবার। দীর্ঘ ১৩ বছর পর কাউন্সিলররা যখন ভোটদানের প্রহর গুণছেন, ঠিক তখনই ঘটলো অনাকাঙ্খিত ঘটনা। নির্বাচনের প্রায় ১৫ ঘন্টা আগে রোববার দুপুরে ভোটকেন্দ্র পরিবর্তন করলো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) নির্বাচন কমিশন। পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এনএসসি’র পুরাতন ভবনে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও এখন নতুন ভেন্যূ ধানমন্ডিস্থ সুলতানা কামাল জাতীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন কাউন্সিলররা। এখানেই সোমবার সকাল ১০টা থেকে  বিকেল ৩টা পর্যন্ত নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিতে ৮৪ জন কাউন্সিলর ভোট দিবেন। বাহফের এবারের নির্বাচনে দু’টি প্যানেল অংশ নিচ্ছে। একদিকে আছে সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও তারকা খেলোয়াড় সাজেদ এএ আদেল ও আবদুস সাদেকের সমন্বয়ে সাজেদ-সাদেক পরিষদ। অন্যদিকে বাহফের সাবেক সহ-সভাপতি আবদুর রশিদ শিকদার ও আলহাজ্ব একেএম মমিনুল হক সাঈদের ‘বাঁচাও হকি’ শ্লোগানে  রশিদ-সাঈদ পরিষদ। তবে ভোটযুদ্ধ শুরু হওয়ার কয়েকঘন্টা আগে এনএসসি থেকে কেন্দ্র সরিয়ে নেয়ার ঘটনায় হতবাক দেশের ক্রীড়াপ্রেমীরা। এতে প্রশ্ন উঠেছে এনএসসি’র নিরপেক্ষতা নিয়ে। কার বা কাদের স্বার্থ রক্ষা করতে তারা ভোটকেন্দ্র সরিয়ে নিয়েছে? হঠাৎ কোন অদৃশ্য ইশারায় কেন্দ্র পরিবর্তন হয়েছে। এ ব্যাপারে সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি প্রধান নির্বাচন কমিশনার শাহ আলম সরদার। তিনি বলেন, ‘প্রভাবশালী একজন প্রার্থী এখানে থাকায় কয়েকজন কাউন্সিলর শঙ্কা প্রকাশ করলে সুষ্ঠু ভোটের লক্ষ্যে এনএসসি থেকে সরিয়ে ধানমন্ডিস্থ সুলতানা কামাল জাতীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে নতুন কেন্দ্র করা হয়।’ কিন্তু ধানমন্ডি’র একজন শক্তিশালি (ঢাকা আবাহনীর) প্রার্থী রয়েছেন নির্বাচনে, কোন কাউন্সিলর যদি মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সকেও নিরাপদ মনে না করেন তাহলে কি হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে শাহ আলম বলেন, ‘না, তারা (সাজেদ-সাদেক পরিষদ) এমনটি করবে না।’

তবে রশিদ-সাঈদ পরিষদ মনে করছে, নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েই এ কাজটি নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে করিয়েছে সাজেদ-সাদেক পরিষদ। ভোটের উপর প্রভাব বিস্তার করার জন্যই কেন্দ্র পরিবর্তন করা হয়েছে। যাদের পক্ষে কাজ করছেন দুই মন্ত্রী, একজন এমপি, একজন মেয়র তারপরও তারা কেনো নিশ্চিন্ত থাকতে পারছেন না। তাদের কেনো এত পরাজয়ের ভয়। কেন্দ্র সরিয়ে যে নোংরামী করা হয়েছে তাতে বলতে হয়, স্বয়ং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীও এনএসসিতে নিরাপদ নন। হকি নির্বাচনে সরকারি স্থাপনায় যারা নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ হয় তারা কিভাবে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর অফিসের নিরাপত্তা দিবে।

কেন্দ্র বদলের ঘোষণায় রোববার দুপুরেই তৎক্ষনিকভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করে রশিদ-সাঈদ পরিষদ। হোটেল পূর্বানীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী একেএম মমিনুল হক সাঈদ বলেন, ‘এনএসসি ভবন যে স্থানে সেই এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোস্তবা জামান পপি। তিনি সাজেদ-সাদেক পরিষদের সহ-সভাপতি পদপ্রার্থী। তারা নিজেদের প্রার্থীর উপর আস্থা রাখতে পারেনি। বরং তা সরিয়ে নিয়ে গেছে তাদের নিজ ঘরানায়। এরপর আদতেই শঙ্কা জেগেছে- নির্বাচন হবে তো। আমরা স্পষ্টতই বলতে চাই, কেন্দ্র নিজেদের ঘরে নিয়ে গেছেন অসুবিধা নাই। আমরা যে কোন কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে রাজী। একটাই চাওয়া কাউন্সিলররা যেন বিনা বাধায় ভোট দিতে পারেন। তাহলেই আমাদের জয় সুনিশ্চিত।’

এই পরিষদের সহ-সভাপতি প্রার্থী আবদুর রশিদ শিকদার বলেন, আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি ভোটকেন্দ্র পরিবর্তনের কথা। কিন্তু অফিসিয়ালি কিছুই জানি না। ভোটের প্রায় ১৫ ঘন্টা আগে কেন্দ্র পরিবর্তন বেআইনি। স্বল্প সময়ে এই কেন্দ্র পরিবর্তনের কথা কিভাবে জানবেন কাউন্সিলররা। আমি মনে করি কাউন্সিলরদের বিভ্রান্ত করতেই এটা করা হয়েছে। আবাহনী ক্লাবের কাছে নির্বাচন কেন্দ্র কতটা নিরাপদ। এটাতো শিয়ালের কাছে মুরগী বর্গা দেয়ার মতো কাজ করেছে নির্বাচন কমিশন।’

এদিকে রোববার সন্ধ্যায় প্যানেল পরিচিতি করেছে সাজেদ-সাদেক পরিষদ। কেন্দ্র প্রসঙ্গে তারা জানায়, ‘নির্বাচন কোথায় কিভাবে হবে সেটি নির্ধারণ করবে নির্বাচন কমিশন। তাদের সিদ্ধান্তে আমরা কেন নাক গলাবো। নির্বাচন কমিশন আমাদের যেখানে গিয়ে ভোট দিতে বলবে আমরা সেখানে গিয়েই ভোট দিতে বাধ্য।

সর্বশেষ ২০০৫ সালে হকির নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন কাউন্সিলররা। এরপর কেটে গেছে ১৩টি বছর। সবকিছু ঠিক থাকলে আজ একযুগেরও বেশী সময় পর ভোট দিবেন তারা।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন