আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, যারা জাতীয় সংসদে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের সংসদে যাওয়া, না যাওয়ার সঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয় বা জামিনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে না। বেগম জিয়ার মুক্তি একমাত্র আইনি পথেই সম্ভব। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তির দু’টি উপায় আছে।
নুসরাত হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার রুহুল আমিন সম্পর্কে তিনি বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযোগ করার সঙ্গে সঙ্গেই কারো বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া যায় না। গতকাল শনিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্পাদকমন্ডলীর সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহবুবউল আলম হানিফ এসব কথা বলেন।
হানিফ বলেন, আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী একজন দন্ডপ্রাপ্ত কয়েদির মুক্তির বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। দ্বিতীয় আরেক পন্থা আছে, সেটা হলো কোনো দন্ডপ্রাপ্ত আসামি তার অপরাধ স্বীকার করে প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে, সে ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ক্ষমা করলে তিনি মুক্তি পেতে পারেন। এ দু’টি পদ্ধতি ছাড়া আর কোনো পদ্ধতি আছে বলে আমাদের জানা নেই। খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিলে বিএনপি থেকে নির্বাচিতরা সংসদের যাবেন- বিএনপি নেতাদের এ মন্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, আমরা বারবার বলেছি, খালেদা জিয়া আদালতের দন্ডপ্রাপ্ত আসামি। তিনি রাজনৈতিক কারণে কারাগারে নন। ২০০৭ সালে, ১/১১-এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মামলা করেছিল, দুর্নীতির অভিযোগে সেই সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে দন্ড দিয়েছেন। তিনি দন্ডপ্রাপ্ত কয়েদি হিসেবে কারাগারে আছেন।
ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে বা খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে এখন অবধি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে কি না, আমাদের জানা নেই। তবে সাংবাদিকদের কথার পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যদি খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে অথবা বিএনপির পক্ষ থেকে তার প্যারোলে মুক্তির জন্য আবেদন করা হয়, সে ক্ষেত্রে তারা বিবেচনা করতে পারেন। এর সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক নেই।
তিনি বলেন, কোনো দন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির মুক্তির জন্য তাকে ভোট দেননি, যে এটা নিয়ে দরকষাকষি করবেন- সংসদে যাবেন কি যাবেন না। এ রকম কোনো সিদ্ধান্তের জন্য ভোটাররা ভোট দেননি। খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে সংসদে যাবেন কি না এমন দরকষাকষি যে তারা করছেন, এটা খুব বাজে দৃষ্টান্ত হিসেবে বাংলাদেশে থাকবে। এ ধরনের রাজনীতি বাংলাদেশের জনগণের জন্য কাম্য নয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তার স্মৃতিবিজড়িত চিঠি, ছবি, তথ্য-উপাত্ত কারো কাছে থাকলে তা সংগ্রহ করে কেন্দ্রে পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৭-এর পরে দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সারা দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ঘুরে বেরিয়েছেন। আন্দোলন, সংগ্রাম করেছেন, বিভিন্ন সভা-সেমিনার করেছেন। এ ছাড়া তার কর্মকান্ড পরিচালনার সময় বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, দীপু মনি, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন