একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া সদর আসনে বিজয়ী বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও বগুড়া-৪ (কাহালু ও নন্দীগ্রাম) আসনে বিজয়ী বিএনপি প্রার্থী মোশারফ হোসেনসহ বিএনপির মোট ৬ নির্বাচিত সদস্যের সংসদে যোগদান প্রসঙ্গে বগুড়ার দুটি সংসদীয় আসনসহ জেলা বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা স্পষ্টভাবেই তাদের মতামত জানিয়ে বলেছেন না।
তাদের সোজাসাপটা কথা, তথাকথিত প্যারোলে কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি কিংবা অন্য কোন কিছুরই বিনিময়ে তারা বগুড়া থেকে নির্বাচিত দুই এমপির সংসদে যোগদান চান না। বগুড়ার দুটি নির্বাচিত এলাকা ছাড়াও বগুড়া বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সভা-সমাবেশে ‘না’ শব্দের পক্ষে তাদের অভিমত প্রকাশ অব্যাহত রেখেছেন।
বিএনপির নেতাকর্মীরা বলেছেন, এই মুহূর্তে তারা তাকিয়ে আছেন বিএনপির হাই কমান্ডের দিকে। নেতাকর্মীরা চাচ্ছেন সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলার পদক্ষেপ। খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত কারামুক্তি ও বিদেশে অবস্থানকারী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার চান। সে সঙ্গে দেশকে গণতান্ত্রিক ধারায় ফেরাতে আন্দোলন বা আন্দোলনের প্রস্তুতির জন্য দিক নির্দেশনা চেয়ে নেতাকর্মীরা চাতক পাখির মত তাকিয়ে আছেন দলের মহাসচিবের দিকে।
অথচ আন্দোলন শুরু বা প্রস্তুতির কথাবার্তার বদলে শোনা যাচ্ছে, শর্ত সাপেক্ষে বিএনপির ভাষায় সংসদে যোগ দিয়ে সংসদকে বৈধতা দেয়ার কথা। বগুড়া জেলা বিএনপির প্রায় সব সিনিয়র নেতাই বলেছেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া স্পষ্টতই নিজের মুক্তির বিনিময়ে কোন আপোসের সম্ভাবনা যখন নাকচ করেছেন। সেখানে কেন সংসদে যোগ দেয়ার প্রশ্ন ওঠে?
বগুড়া বিএনপির সিনিয়র নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সরকার বাদল এবং উমর ফারুক খান ইনকিলাবকে বলেন, বগুড়া থেকে নির্বাচিত বিএনপির কোনো এমপি যদি দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করার দুঃসাহস দেখান তাহলে বগুড়ায় তারা শুধু দলের নেতাকর্মীদেরই নয় বরং গণপ্রতিরোধের মুখে পড়বেন।
সম্প্রতি সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মাহাবুব আলম শাহীনের পরিবারের সাথে কিছুটা সময় কাটাতে এসে কয়েকজন মিডিয়া কর্মী বিএনপির নির্বাচিত এমপিদের সংসদে যাবার প্রসঙ্গ তুললে তিনি পরিষ্কার করে কিছু বলেননি। তবে তার মনোভাব সংসদে না যাওয়ার পক্ষে বলেই প্রতীয়মান হয়েছে।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) সংসদীয় আসনের নবনির্বাচিত এমপি মোশারফ হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, নির্বাচিত যখন হয়েছি তখন সংসদে যেতেই চাই। আমার নির্বাচনী এলাকার ভোটাররাও চায় তাদের এমপি সংসদে যেয়ে তাদের সমস্যা তুলে ধরুক। তবে অবশ্যই দলের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে নয়।
তিনি বলেন, দলের প্রতীক ছাড়া আমি কখনোই নির্বাচন করে জিতে আসতে পারতাম না। তাই দল না চাইলে সংসদে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। দলের মহাসচিব ও তার দলের নির্বাচিত অন্যান্য এমপির সাথে এ ব্যাপারে তার একান্তভাবে বা গ্রুপ আকারে বৈঠক হয়েছে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কথাতো হয়েছে। তবে তার সবই অফ দ্য রেকর্ড।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন