শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিনোদন প্রতিদিন

আমরা যেন মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত না হই : মোহাম্মদ হোসেন জেমি

চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির নির্বাচন

প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শুনলাম প্রযোজক সমিতির নির্বাচনে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়ে যাচ্ছে। রাজনীতি ও ভোটযুদ্ধে সমঝোতা শব্দটির মধ্যে লুকানো থাকে অনেক রহস্য। অনেক অস্পষ্ট আলাপন। যা সাধারণ মানুষ জানতে পারে অনেক পরে। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের মতে, এটা সমঝোতা না, আপস। সাধারণ সদস্যদের দৃষ্টিতে এটা সমঝোতা হতে পারে। কিন্তু নেতাদের জন্য নিজ বাণিজ্য অর্থাৎ তাল গাছটা আমার এবং চেয়ার দখলের আপস। নেতাদের মুখে একটা সস্তা কথা প্রায়ই শোনা যায়, ‘চলচ্চিত্রের স্বার্থে’। আসলে চলচ্চিত্রের স্বার্থে নয়, ব্যক্তি স্বার্থকে হালাল করার জন্য চমকপ্রদ কথার মোড়কে ঐ বক্তৃতার ভাষাগুলো আমাদের মতো বোকাদের আরো বোকা বানায় প্রতিনিয়ত। এতদিন ধরে একদল বলে আসছে, অন্যদল বাঘের মতো চলচ্চিত্রের নিরীহ মহিষদের গিলে খাচ্ছে। তাই চেয়ারে পুচ্ছদেশ স্থাপনের প্রাক্কালে বাঘের দল এখন আশার বাণী শুনিয়ে বলছেÑআমরা এখন থেকে আর মহিষ খাব না। মিহিষদের জন্য নিরাপদ তৃণভূমি তৈরি করে দেব। সেই খুশিতে বাঘ আর মহিষ একই টেবিলে পানি খাওয়া শুরু করে দিয়েছে। লৌহ মানবী মার্গারেট থেচারের একটা মজার কথা আছে। কথাটি হচ্ছে, ‘কেউ যদি নিজেকে সবার কাছে জনপ্রিয় করতে চায়, তাহলে তাকে যেকোনো বিষয়ে যেকোনো সময়ে আপস করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে এবং এই আপসের বিনিময়ে সে কিছুই অর্জন করতে পারবে না।’ তাই আপসের সিদ্ধান্তে, ভাগাভাগিতে উত্তেজিত নেতাদের অর্জন আর সাধারণ সদস্যদের প্রাপ্তি নিয়ে সবাই সন্দিহান। কারণ, কয়েকজন নেতা আছেন যারা সারাক্ষণ জনপ্রিয় হওয়ার নেশায় বিভোর। যারা সমস্যা প্যান্টের পকেটে জমিয়ে রাখে আর বুক পকেট ফুলিয়ে সমাধানের আশ্বাস দেয়। তারা দিনের শেষে ভক্তদের একটা প্লাস্টিক হাসি ছাড়া আর কিছুই দিতে পারে না। আপসের জার্সি পরে যেসব খেলোয়াড় এখন মাঠে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, সঠিকভাবে নির্বাচন হলে এদের অনেকেরই জামানত বাজেয়াপ্ত (যদিও জামানত প্রথা নাই) হবে, তা চলচ্চিত্রে সবাই জানেন। মহাত্মা গান্ধী বলেছেন, ‘সব আপসই দেয়া এবং নেয়ার উপর ভিত্তি করে হয়। কিন্তু মৌলিক অধিকার নিয়ে দেয়া-নেয়া হতে পারে না। মৌলিক অধিকার নিয়ে দেয়া-নেয়া আত্মসমর্পণের শামিল। এখানে শুধু দিয়েই যেতে হয়। বিনিময়ে কিছু পাওয়া যায় না।’ প্রযোজকদের মৌলিক অধিকার হচ্ছে, নিয়ম নীতির মধ্যে থেকে, সবাই সমান অধিকার ভোগ করে ছবি নির্মাণ ও মুক্তি দেয়া। একচেটিয়া বাণিজ্যের যাঁতাকলের নিষ্পেষণ থেকে মুক্তি পাওয়া। প্রযোজকদের হারানো সম্মান ফিরে পাওয়া। এই মৌলিক অধিকারগুলো বিলিয়ে দিয়ে কেউ যেন কোনো অশুভ শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ না করেÑসবার এখন এটাই প্রত্যাশা। নেতারা বছর বছর চেয়ার ভাগাভাগি করুক, নামের সাথে পদ-পদবি যোগ করুক, বক্তৃতা দিয়ে মাইক ফাটাক, ফিতা কাটুকÑতাতে সাধারণ প্রযোজকদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আমরা যেন মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত না হই।
লেখক : চলচ্চিত্র নির্মাতা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন