বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শিক্ষাঙ্গন

পড়াশোনা যখন ডিজিটাল লাইব্রেরিতে

প্রকাশের সময় : ১৮ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আরিফ চৌধুরী শুভ : জানতে হলে পড়তে হবে। পড়ার জন্য সুদূর চীন দেশে যাওয়া চাই। জানার জন্য বই পড়ার কোন বিকল্প নেই। বেশি পড়া মানে বেশি বেশি বই কেনা। বইয়ের পেছনে বেশি অর্থ খরচ করা ছাড়াও বইয়ের বোঝা বহন করার যন্ত্রণাটা কয় জনেই নিতে চান? 

একাডেমিক বই পুস্তক হলেতো আর কথাই নেই। প্রতি সেমিস্টারে গুণতে হবে বাড়তি অঙ্কের টাকা। তবে প্রকৃত বই প্রেমিরা বই পড়ার জন্য নিশ্চয় এতকিছু চিন্তা করেন না। বই পড়ার জন্য খাওয়া ঘুম সকল আরাম ও বিলাসিতা ত্যাগ করেছেন অনেকে এমন উদাহরণ ইতিহাসে ভূরি ভূরি। ডিজিটাল লাইব্রেরিতে বই পড়ার সুযোগ তাদের জন্যই বেশি উপযোগীও সাশ্রয়ী হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
ডিজিটাল লাইব্রেরি তৈরির জন্য শিক্ষার্থীদের অধিকারকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। তবে বই প্রেমিকদেরও আগের মত নিলখেত কিংবা শহরের অলিতে-গলিতে বইয়ের দোকানে বেশি ছোটাছুটি করতে হবে না। ডিজিটাল লাইব্রেরিতে পাঠ্য বইয়ের বাহিরেও খুঁজে পাওয়া যায় গল্প, উপন্যাস, জীবনী ও সাইন্স ফিকশানসহ নানা রকমের বই। তাই প্রয়োজনীয় বই খুঁজতে আপনি এখনই টু মারতে পারেন ডিজিটাল লাইব্রেরিতে।
বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্ন ও প্রশ্নের সমাধান রয়েছে ডিজিটাল লাইব্রেরিতে। বিদেশের বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিটাল লাইব্রেরি চালু থাকলেও বাংলাদেশে খুব কম সংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সেবা চালু আছে। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিটাল লাইব্রেরি চালু করা হয়েছে। আবার কয়েকটিতে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঢাকা ইউনিভার্সিটি, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটে ডিজিটাল লাইব্রেরি চালু করা হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ইস্টান ইউনিভার্সিটি, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে ডিজিটাল লাইব্রেরি সংযুক্ত করা হয়েছে। জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়, শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ অরো অনেকগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিটাল লাইব্রেরি চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
স্বস্ব ইউনিভার্সিটির ওয়েব সাইটে লাইব্রেরি অংশে সার্চ করলেই ডিজিটাল লাইব্রেরি দেখতে পাবেন। স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. এম ফিরোজ আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের মানের সাথে সামঞ্জস্য আনতে হলে পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ডিজিটাল লাইব্রেরির আওতায় আনা উচিত। তাহলে প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কি কি মানের বই সরবরাহ আছে তা সহজেই বুঝা যাবে।
ডিজিটাল লাইব্রেরির সেবা সম্পর্কে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান আবদুল খালেক সরকার যিনি দীর্ঘদিন এর পেছনে কাজ করেছেন। তিনি বলেন, গত ১ অগাস্টে ২০১৪-তে চালু হল ‘স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি ডিজিটাল লাইব্রেরি’। ডিজিটাল লাইব্রেরি ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে।
ডিজিটাল লাইব্রেরি চালু হওয়াতে যেমন খুশি শিক্ষক তেমনি শিক্ষার্থীরাও। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির রোমেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সানজিদা এবং স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শামসুন নাহার পপিসহ অনেক শিক্ষার্থীর পজিটিভ অভিমত ডিজিটাল লাইব্রেরি সম্পর্কে। নিয়মিত ডিজিটাল লাইব্রেরিতে তথ্য খুঁজে একাডেমিক পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। যেসকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিটাল লাইব্রেরি চালু নেই সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আক্ষেপ, কবে চালু হবে নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিটাল লাইব্রেরি? এই প্রশ্নের উত্তর আমার আর আপনার জানা না থাকলেও জানা আছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।
ডিজিটাল লাইব্রেরি সেবায় শিক্ষকরা যেমন খুঁজে পান থিসিস ও পিএইচডির পড়াশোনা তেমনি শিক্ষার্থীরা এখন আর ফটোকপি করতে হয়ে না ক্লাস লেকচার।
ডিজিটাল লাইব্রেরি সেবায় যেমন প্রয়োজনীয় টাকা সাস্ত্রয় হয়, তেমনি অফুরন্ত সময় আর বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি মেলে খুব সহজেই। তাই শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিটাল লাইব্রেরির সেবা চালু করা হোক।
ছবি : ইউসুফ লিখন

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন