মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী বিশ্ব

মুরসির মৃত্যুতে এরদোগান, ‘আমার ভাই শহীদ’

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ জুন, ২০১৯, ২:৫৫ পিএম

মিশরের ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি মারা গেছেন। সোমবার আদালতে গুপ্তচরবৃত্তির এক মামলার শুনানি চলাকালে কারাবন্দি সাবেক এই প্রেসিডেন্ট মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বলে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাতে খবর দিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আদালতের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর সাবেক এ প্রেসিডেন্ট জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এর কিছুক্ষণ পরই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।

বার্তাসংস্থা এপি জানিয়েছে, আদালতে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও নথি পাচার মামলার শুনানি চলছিল। সাবেক প্রেসিডেন্ট বিচারকের কাছে কথা বলার অনুমতি চাইলে তাকে কথা বলতে অনুমতি দেয়া হয়। এ সময় ২০ মিনিট বক্তব্য রাখেন মুরসি। বক্তব্যের মধ্যেই বুকে ব্যথা অনুভব করেন। এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানেই মারা যান মোহাম্মদ মুরসি।

৬৭ বছর বয়সী মোহাম্মদ মুরসির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান। তিনি কোরআনের হাফেজ মুরসিকে ‘শহীদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের ভাই, শহীদ মুরসির আত্মার প্রতি আল্লাহ রহম করুন। তাকে পরকালে শান্তিতে রাখুন।’

মোহাম্মদ মুরসির সঙ্গে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। আগেও বহুবার ব্রাদারহুডের বহু নেতাকর্মীসহ মুরসিকে গ্রেফতার ও সাজানো আদালতে বিচারের কড়া সমালোচনা করেছেন এরদোগান। সোমবার মুরসির মৃত্যুর পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘গাড়ি থেকে নামার সময় আমার কাছে মুরসির মৃত্যুর খবর আসে। আল্লাহর কাছে আমাদের শহীদ ভাইদের জন্য দোয়া করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আদালতের এজলাসেই তার মৃত্যু হয়েছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

মোহাম্মদ মুরসির বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি অর্থের বিনিময়ে কাতারের কাছে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও নথি পাচার করেছেন। ২০১৪ সালে তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছিল। এরপর ২০১৬ সালের জুনে তথ্য পাচারের এ মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করেন নিম্ন আদালত। এই অভিযোগেই মুরসিকে যাবজ্জীবন দেয়া হয়।

মোহাম্মদ মুরসি মুসলিম ব্রাদারহুডের শীর্ষনেতা। ‘আরব বসন্তের’ জেরে ২০১২ সালে গণবিক্ষোভের মুখে পতন ঘটে প্রায় চার দশকের স্বৈরশাসক হোসনি মুবারকেন। এরপর ২০১৩ সালে দেশটির ইতিহাসে প্রথম জনগণের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন মোহাম্মদ মুরসি। কিছুদিন যেতেই তাকে সরিয়ে তখনকার সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি ক্ষমতার দখল নেন। পরে নির্বাচন করে তিনি নিজেও প্রেসিডেন্ট হয়ে ক্ষমতার দখল রেখেছেন।

মুরসিকে সরানোর পর সারা দেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার ব্রাদারহুড নেতাকর্মীর সঙ্গে তাকেও গ্রেফতার করা হয়। এরপর ২০১২ সালে মুরসিকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। গ্রেফতারের পর থেকেই মুরসি কারাগারে ছিলেন। তিনি কারাগারে অকালে মারা যেতে পারেন বলে আন্তর্জাতিক কয়েকটি সংস্থা আগে থেকেই সতর্ক করেছিল। কারণ, হিসেবে বলা হয়েছিল, সাবেক এ প্রেসিডেন্টকে কারাবন্দি রাখার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন