ফের কর্মচাঞ্চল্য হয়ে উঠেছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। প্রকল্প এলাকায় শান্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। শ্রমিকরা নির্বিঘ্নে কাজে রয়েছে। পাওয়ার প্লান্টের ক্ষতিগ্রস্থ যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ শুরু করেছে চীনা শ্রমিকরা। বাঙালি শ্রমিকদের ১৫দিনের ছুটি দেয়া হয়েছে। তবে তাদের ছয় হাজার শ্রমিককে সকল বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছে। পায়রা বিদ্যুত প্লান্ট এলাকা পুরোদমে সচল হয়ে উঠছে। তবে আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যেই এ প্রকল্পের প্রথম ইউনিট উৎপাদনে যাবে। ইতোমধ্যে ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বিসিপিসিএল’র প্রকল্প পরিচালক শাহ আব্দুল মাওলা।
বুধবার দুপুরে পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র অভ্যন্তরে মিডিয়া সেন্টারে বিসিপিসিএল’র প্রকল্প পরিচালক শাহ আব্দুল মাওলা গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। তিনি ১৮ জুন (মঙ্গলবার) বিকেলে পাওয়ার ব্লকের বয়লারে কর্মরতকালে সেফটি বেল্ট খুলে নিচে পড়ে সাবিন্দ্র দাস নামের এক বাঙালী শ্রমিক নিহতের ঘটনায় সৃষ্ট গুজবকে কেন্দ্র করে অনভিপ্রেত ঘটনার প্রেক্ষিতে বর্তমান সময় পর্যন্ত পাওয়ার প্লান্টের কর্মকান্ড নিয়ে মতবিনিময় করেন। তিনি জানান, বাঙালী ও চায়নীজ শ্রমিকদের মধ্যে নিজস্ব কালচার নিয়ে কিছু সমস্যা রয়েছে। চায়নীজরা দক্ষ,আর বাঙালীরা অদক্ষ। বাঙালীদের দক্ষতার উন্নয়নে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আহত চায়নীজ শ্রমিকদের ঢাকায় উন্নত চিকিৎসা দেয়ার পরে তারা এখন সুস্থ রয়েছেন। প্লান্ট অভ্যন্তরে অফিসের কম্পিউটার, তথ্য ভান্ডার, হাইড্রোলিক মেশিনের কন্ট্রোল সিস্টেমের যে ক্ষতি হয়েছে তা ঠিক করতে ১০/১৫ দিন সময় লাগবে। এরপরেই পুরোদমে কাজ শুরুর কথাও নিশ্চিত করেন পরিচালক শাহ আব্দুল মাওলা।
১৮ জুনে শ্রমিকদের মধ্যে অনভিপ্রেত ঘটনা মূলত ভাষাগত কালচার গ্যাপ থেকে হয়েছে বলেও মনে করছেন এ কর্মকর্তা। বর্তমানে বিদ্যুত প্লান্ট এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। দোভাষীসহ একটি মধ্যসত্ত¡ভোগী চক্র পাওয়ার প্লান্টের অভ্যন্তরের অনভিপ্রেত ঘটনার জন্য জড়িত কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে শাহ আব্দুল মাওলা বলেন, বিষয়টি আমরা নিশ্চিত নয়। তবে পুলিশসহ একাধিক সংস্থা তদন্ত করছে।
এসময় বিসিপিসিএল এর নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) রেজওয়ান ইকবাল খান, নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) জোবায়ের আহম্মেদ, নির্বাহী প্রকৌশলী (তড়িৎ) মো. তারিক নুর, নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) ওয়াং শিয়াং শি, ম্যানেজার (ফ্যাসিলিটি) মো.শহীদ উল্যাহ ভূইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধানখালীতে ‘পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র’ নির্মাণের জন্য ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড (বিসিপিসিএল) নওপাজেকো বাংলাদেশ এবং সিমসি চায়নার যৌথ অংশীদারিত্বের কোম্পানি বিদ্যুত প্লান্টটির নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে। প্রায় নয় হাজার শ্রমিক এ কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছ। যার মধ্যে তিন হাজার চায়নীজ শ্রমিক রয়েছে।
কলাপাড়া থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম জানান, পাওয়ার প্ল্যান্ট এলাকায় তাঁদের সার্বক্ষণিক নজরদারি রয়েছে। এছাড়া অতি সম্প্রতি অনভিপ্রেত ঘটনার সঙ্গে কেউ জড়িত থাকে তাকে শণাক্ত করে দ্রæত আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন