লোহাগড়ায় মা সার্জিক্যাল ক্লিনিকে সিজার করার সময় ডাক্তারের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর ক্লিনিকের মালিক ও ডাক্তার প্রসূতির স্বামীকে মারধর করে ক্লিনিকে তালা মেরে পালিয়ে যায়। পরে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ওই ক্লিনিক ঘেরাও করে রাখে। এ সময় ক্লিনিকে থাকা অন্য রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে লোহাগড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে।
জানা গেছে, উপজেলার কোটাকোল ইউপির করগাতী গ্রামের দিনমজুর কামাল হোসেনের স্ত্রী বিলকিস বেগমকে (২৫) গতকাল শুক্রবার সকালে সিজার করার জন্য লক্ষীপাশার মা সার্জিক্যাল ক্লিনিকে ভর্তি করে। ক্লিনিকের মালিক ওহিদুজ্জামান জাহাঙ্গীরের সাথে সিজার বাবদ সাড়ে ৭ হাজার টাকা চুক্তির পর দুপুরে ডাক্তার তাজরুল ইসলাম তাজ অজ্ঞানের ডাক্তার ছাড়াই অদক্ষ নার্সকে সাথে নিয়ে অপারেশন থিয়েটারে সিজারের কাজ শুরু করে। প্রসূতির শরীরে ইনজেকশন পুশ করার পর অস্ত্রপাচার শুরু করলে অপারেশন থিয়েটারেই তার মৃত্যু ঘটে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ক্লিনিকের মালিক জাহাঙ্গীর ও ডাক্তার তাজ দ্রুত রোগীকে অন্যত্র পাঠানোর কথা বলে। এ সময় প্রসূতির স্বামী ও আত্বীয়-স্বজনরা রোগীর কি অবস্থা জানতে চাইলে ক্লিনিকের মালিক ও ডাক্তার মৃতের স্বামী কামাল হোসেনকে তার রোগীকে অন্যত্র নিয়ে চিকিৎসার কথা বললে কামাল হোসেনের সাথে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিবাদ শুরু হলে এক পর্যায় কামাল হোসেন কে তারা মারধর করে। এরপর জাহাঙ্গীর একটি অ্যাম্বুলেন্স যোগে রোগীকে নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়ে ক্লিনিক তালা মেরে পালিয়ে যায়। রোগীকে নড়াইল সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রসূতিকে মৃত ঘোষণা করে। পরে লোহাগড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। প্রসূতির স্বামী কামাল হোসেন বলেন, ক্লিনিকের মালিক ও ডাক্তারের অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আমি বিষয়টি জানতে চাইলে ক্লিনিকের মালিক, ডাক্তার ও নার্স আমাকে মারধর করে। আমি আমার স্ত্রী হত্যার বিচার চাই। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ডাক্তার তাজরুল ইসলাম তাজ মোবাইল ফোনে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অপারেশন থিয়েটারে সিজার কাজ শুরু করার সময় রোগী হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায়। ক্লিনিকের মালিক জাহাঙ্গীর পালিয়ে যাওয়ায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোকাররম হোসেন জানান,এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন